রাজেশ ওরাং
লাদাখে ভারত-চিন সেনা সংঘর্ষে সেনা জওয়ান মহম্মদবাজারের রাজেশ ওরাং-এর মৃত্যু তাঁর গোটা পরিবারকে শোকে পাথর করে দিয়েছে। শোকে দিশেহারা হয়ে গিয়েছেন ভিন গ্রামের সদ্য আঠারো ছোঁয়া এক তরুণীও। যিনি রাজেশের ঘরণী হবেন বলে সব ঠিক হয়ে গিয়েছিল। সেই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল জুন মাসেই।
মাস আটেক এক আত্মীয়ের বাড়িতে আলাপ হয়েছিল তাঁদের। তারপর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল উভয়ের মধ্যে। দুই পরিবারের সহমতের ভিত্তিতেই চার হাত এক হওয়ার কথা ছিল চলতি মাসেই। কিন্তু তার আগেই সব শেষ। সিউড়ি ২ ব্লকের পুরন্দরপুর এলাকার ওই তরুণীর আক্ষেপ, ‘‘সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেল।’’
পরিজনেরা জানান, ছোট থেকেই রাজেশ চেয়েছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে দেশের সেবা করার। তার জন্য চেষ্টার ত্রুটি ছিল না। মহম্মদবাজারের বেলগড়িয়ার তরুণ রাজেশের স্বপ্ন পূর্ণ হয়েছিল ২০১৫ সালে কলেজে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময়।
সেনাবাহিনীতে চাকরি শুধু স্বপ্নপূরণ নয়, হতদরিদ্র গোটা পরিবারের হাল ধরার রসদ জুগিয়েছিল। বাবা-মা চেয়েছিলেন প্রতিষ্ঠিত ছেলের এ বার বিয়ে দেবেন।
রাজেশের বোন শকুন্তলা বলছেন, ‘‘গত বছর কালীপুজোর সময় ছুটিতে বাড়ি এসেছিল দাদা। আমরা দু’জনে বোলপুরের কাছে কাশীপুর গ্রামে আমাদের এক আত্মীয়ের বাড়িতে কালীপুজো দেখতে গিয়েছিলাম।’’ তখনই রাজেশের সঙ্গে ওই তরুণীর দেখা হয় বলে জানান শকুন্তলা। তাঁর কথায়, ‘‘দু’জনের বেশ ভাব জমে গিয়েছিল। বাড়িতে এসে দাদা জানিয়েছিল ওই মেয়েটিকে ওর খুব পছন্দ হয়েছে।’’
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, জানুয়ারি মাসে সরস্বতী পুজোর সময় রাজেশ বাড়িতে এসে পুরন্দরপুরে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করেন। সব জানার পর বাড়িতে কেউ অমত করেনি। তারপর থেকেই দু’জনের যোগাযোগ ছিল। এ মাসেই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল।
রাজেশের বোন জানাচ্ছেন, লকডাউনের জন্য আর আসা হয়নি তাঁর। তিনি বলেন, ‘‘আর তো কোনও দিন দাদা ফিরবে না। ওদের পরিবারটাও খুব ভেঙে পড়েছে।’’
ওই তরুণী জানিয়েছেন, তাঁদের শেষ বার কথা হয়েছিল বেশ কিছুদিন আগে। তাঁর কথায়, ‘‘শুনেছিলাম ও চিন ভারত সীমান্তে আছে। কিন্তু এ ভাবে হারিয়ে যাবে মানতে পারছি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy