গুলসোনা ওরফে রাজিয়া বিবি।
মাত্র এক মাস হল সাজার মেয়াদ শেষ করে সে বাড়ি ফিরেছে— করিমপুরের বারবাকপুরের মেয়ে গুলসোনা ওরফে রাজিয়া বিবি। খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডের অন্যতম আসামি।
মা, দাদা আর সন্তানদের কাছে ফিরে সে যখন তার নিজের কথায় ‘অতীত ভুলে নতুন করে বাঁচতে’ চাইছে, ঠিক তখনই জঙ্গি নিয়ে ফের তোলপাড় রাজ্য তথা দেশ।
আল কায়দার হয়ে নাশকতার ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকার অভিযোগে শুক্রবার রাতে মোট ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। তাদের মধ্যে ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে মুর্শিদাবাদ থেকে।
সাত বছর আগে ২০১৪ সালের ২ অক্টোবর বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণের পর এ রাজ্যে প্রথম জামাত-উল-মুজাহিদিন (বাংলাদেশ)-এর সন্ধান মিলেছিল। সে দিন খাগড়াগড়ের বাড়িতে স্বামী সাকিল গাজির সঙ্গে ছোট মেয়েকে নিয়ে উপস্থিত ছিল রাজিয়া। তাদের সঙ্গে লালগোলার এক দম্পতি আবদুল হাকিম ও আলিমা বিবিও ছিল। ঘটনাস্থলেই সাকিল মারা যায়। হাকিমের পা জখম হয়েছিল। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রাজিয়া, আলিমা ও হাকিমকে গ্রেফতার করে।
শাস্তির মেয়াদ শেষে ৮ অগস্ট রাজিয়া তার ছোট মেয়েকে নিয়ে মায়ের কাছে ফিরেছে। বাবা ইতিমধ্যে মারা গিয়েছেন। বিঘে দু’য়েক জমি তাদের সম্বল। বছর ত্রিশের রাজিয়া বলে, ‘‘অতীত ভুলে
নতুন করে বাঁচতে চাই। সেলাই মেশিনের কাজ জানি। জেলের মধ্যেও সেলাইয়ের কাজ করতাম, অন্যদের সেলাই শেখাতাম। একটা সেলাই মেশিন এখন খুব দরকার।’’ তার এক ছেলে, দুই মেয়ে। বড় দুই ছেলেমেয়ে পড়াশোনা করে। রাজিয়ার কথায়, ‘‘তিন ছেলেমেয়েকেই লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মতো মানুষ
করতে চাই।”
বারবাকপুরে পিচ রাস্তা থেকে নেমে সরু গলি পেরিয়ে রাজিয়াদের বাড়ি। টালির ছাউনি দেওয়া দু’টি ছোট ঘর। সাংবাদিক দেখে বাড়ির আশপাশে রবিবার উৎসাহী চোখের উঁকিঝুঁকি। রাজিয়ার দাবি, “সাকিল গাজি কাপড় বিক্রি করতে আসত। ও যে বাংলাদেশের ছেলে, কেউ বুঝতে পারেনি।’’ তার পর চোখ নামিয়ে বলে, ‘‘এই ক’বছর অনেক ধকল সহ্য করতে হয়েছে। এখন সমস্ত ভুলতে চাই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy