Advertisement
E-Paper

অন্য বামেদের পাশে পেয়ে খুশি বিমান, এলেন না বুদ্ধ

এক দিকে ব্যবধান কমানোর চেষ্টা হল। কিন্তু ব্যবধান বেড়ে গেল অন্য দিকে! প্রায় ১১ বছর পরে কলকাতার রাজপথে ফের বামফ্রন্টের সঙ্গে পা মেলাল এসইউসি, সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন-সহ অন্যান্য বামপন্থী সংগঠন। উপলক্ষ সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী মিছিল। কিন্তু সেই মিছিলে এলেন না প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগেই যিনি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে লড়াইয়ের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:১৩
রামলীলা ময়দান থেকে দেশবন্ধু পার্কের উদ্দেশে বামেদের মিছিল।  নিজস্ব চিত্র

রামলীলা ময়দান থেকে দেশবন্ধু পার্কের উদ্দেশে বামেদের মিছিল। নিজস্ব চিত্র

এক দিকে ব্যবধান কমানোর চেষ্টা হল। কিন্তু ব্যবধান বেড়ে গেল অন্য দিকে!

প্রায় ১১ বছর পরে কলকাতার রাজপথে ফের বামফ্রন্টের সঙ্গে পা মেলাল এসইউসি, সিপিআই (এম-এল) লিবারেশন-সহ অন্যান্য বামপন্থী সংগঠন। উপলক্ষ সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী মিছিল। কিন্তু সেই মিছিলে এলেন না প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগেই যিনি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে লড়াইয়ের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন!

সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী মিছিলের শেষে সমাবেশে কোনও দিনই বুদ্ধবাবু বক্তৃতা করেন না। কিন্তু অন্য বার প্রতীকী অর্থে হলেও তিনি মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। এ বার সেটাও করেননি। দলীয় সূত্রে বলা হচ্ছে, তাঁর শরীরের কারণেই বর্ষণসিক্ত মিছিলে সোমবার যোগ দিতে যাননি সিপিএমের এই পলিটব্যুরো সদস্য। কিন্তু সিপিএমের অন্দরের খবর, দলের ভিতরে বিমান-বুদ্ধদেব দ্বৈরথেরই ছায়া পড়েছে মিছিলে। নকশালপন্থী সংগঠনগুলিকে এই মিছিলে সামিল করার জন্য বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু যে ভাবে তৎপর হয়েছিলেন, তাতে সায় ছিল না বুদ্ধবাবুর। বাম সরকার থাকাকালীন যারা তীব্র সমালোচনা করত, ক্ষমতা হারিয়ে তাদেরই পাশে পাওয়ার জন্য বাড়তি উদ্যোগ মেনে নিতে পারেননি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। সেই কারণেই সচেতন ভাবে মিছিলে গরহাজির থেকে দলীয় নেতৃত্বকে বার্তা দিতে চেয়েছেন তিনি। সিপিএমের এক রাজ্য নেতার কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় বুদ্ধবাবুকে অনেক ক্ষেত্রেই এই দলগুলির তীব্র ব্যক্তিগত আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে। এখন তাদের সঙ্গে এক মিছিলে যেতে তাঁর অস্বস্তি খুব অস্বাভাবিক নয়।”

বিমানবাবু অবশ্য অন্য বাম দলগুলিকে পাশে পেয়ে খুশি। মৌলালির কাছে রামলীলা ময়দান থেকে শ্যামবাজারের দেশবন্ধু পার্ক পর্যন্ত মিছিলের শেষে এ দিনের জমায়েতে বিমানবাবু বলেছেন, “শুধু বামফ্রন্টের দলগুলিকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করলে হবে না। বৃহত্তর অর্থে বামপন্থী দলগুলিকে একসঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করতে হবে। অনেক দিন পরে আমরা এক হলাম। মাঝখানে ‘গ্যাপ’ পড়েছিল!” আমেরিকার ইরাক আক্রমণের পরে ২০০৩ সালে ময়দানে গোষ্ঠ পাল মূর্তি থেকে পার্ক সার্কাস পর্যন্ত মিছিলে সামিল হয়েছিল লিবারেশন-সব অন্যান্য বাম সংগঠন। তার পরে এ বারের মিছিলে যোগ দিয়েছিল ১৫টি বামপন্থী দল।

মিছিলের মূল বিষয় ছিল গাজা ভূখণ্ডে ইজরায়েলের হানার প্রতিবাদ এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী জেহাদ। এই ধরনের মিছিল আসলে সংগঠনকে চাঙ্গা রাখার কৌশল। তার পাশাপাশিই এ দিন বিমানবাবু, বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র, সিপিআইয়ের মঞ্জুকুমার মজুমদার, ফরওয়ার্ড ব্লকের হাফিজ আলম সৈরানি, আরএসপি-র মনোজ ভট্টাচার্য, এসইউসি-র সৌমেন বসু বা লিবারেশনের কার্তিক পাল সকলের বক্তব্যেই স্পষ্ট, প্রকৃত অর্থে এ বারের জমায়েত বিজেপি-বিরোধী সমাবেশেই পরিণত হয়েছিল। সকলেই বলতে চেয়েছেন, গাজায় অজস্র শিশু-সহ নিরীহ মানুষ খুন হলেও ইজরায়েলের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব সংসদে পাশ হয়নি বিজেপির আপত্তিতে। এখন কেন্দ্রের অর্থনীতিতেও সাম্রাজ্যবাদী শক্তির প্রভাব স্পষ্ট। এ সবের অবসরে সংখ্যালঘু মানুষের মন জয়েরও চেষ্টা চালিয়েছেন বাম নেতারা।

buddhadeb bhattacharyay biman basu left front rally state news online news latest state new online latest news
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy