Advertisement
E-Paper

মমতার জন্য রাস উদ্বোধন পিছোচ্ছে 

তৃণমূল সূত্রে খবর, এখন পর্যন্ত ঠিক আছে ১২ তারিখ বিকেলের বিমানে বাগডোগরায় নামবেন মুখ্যমন্ত্রী। পরদিন সকালে হেলিকপ্টারে যাবেন কোচবিহারে। সেখানে রাসমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ছাড়াও বাণেশ্বরে পুজো দিতে যাবেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৪৫
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র

সম্প্রতি শিলিগুড়ি সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী আগ্রহ দেখিয়েছিলেন রাসমেলায় কোচবিহারে আসার ব্যাপারে। পরে সিদ্ধান্ত হয়, সব কিছু ঠিক থাকলে ১৩ নভেম্বর কোচবিহারে আসবেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিকে রাস উৎসব শুরু হচ্ছে ১১ নভেম্বর। এখন কোচবিহার পুরসভা চাইছে, আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন দু’দিন পিছিয়ে দিতে। রাসমেলা পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কোচবিহার পুরসভার পুরপ্রধান ভূষণ সিংহ বলেন, ‘‘১১ নভেম্বর থেকে মেলা শুরু হবে। তবে আমরা ওই দিন আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করছি না। ১৩ নভেম্বর মুখ্যমন্ত্রীর হাত দিয়ে এ বার রাসমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সম্মতি পেলেই সব কিছু চূড়ান্ত হবে।” বিরোধীরা অবশ্য পুরসভার এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন।

তৃণমূল সূত্রে খবর, এখন পর্যন্ত ঠিক আছে ১২ তারিখ বিকেলের বিমানে বাগডোগরায় নামবেন মুখ্যমন্ত্রী। পরদিন সকালে হেলিকপ্টারে যাবেন কোচবিহারে। সেখানে রাসমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ছাড়াও বাণেশ্বরে পুজো দিতে যাবেন তিনি। ১৪ তারিখ কোচবিহারে কর্মিসভা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে হেলিকপ্টারে শিলিগুড়ি ফিরবেন। তার পরের দিন তাঁর কলকাতায় ফেরার কথা।

লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার আসন হারানোর পরে জেলা জুড়ে রাজনৈতিক হানাহানি অব্যাহত। কোচবিহার জেলার তুফানগঞ্জ আসনটি আলিপুরদুয়ার লোকসভার অন্তর্গত। অন্য দিকে, মেখলিগঞ্জ বিধানসভা আসনটি জলপাইগুড়ি লোকসভা আসনের অন্তর্গত। সিতাই আর শীতলখুচি ছাড়া জেলার সব ক’টি বিধানসভা আসনেই এগিয়ে বিজেপি। লোকসভা ভোটের পরে তো তৃণমূল নেতা-কর্মীরা অনেকেই ঘরছাড়া ছিলেন বলে দলের দাবি। এখন এনআরসি-কে সামনে রেখে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে তারা। সম্প্রতি শিলিগুড়িতে এসেও ‘এনআরসি হতে দেওয়া হবে না’ বলে বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাসমেলা উপলক্ষে কোচবিহারে এসে তিনি কী বলেন, তার জন্য অপেক্ষা করে আছে দল।

তৃণমূলের একাংশের বক্তব্য, এই সুযোগে রাসমেলাকেও প্রচারের কাজে লাগাতে চাইছে দল। তাই মুখ্যমন্ত্রীর হাতে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করতে চাইছে তারা। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “কোচবিহারে দু’শো বছরের প্রাচীন রাসমেলায় আগে কোনও মুখ্যমন্ত্রী এসেছেন বলে আমার জানা নেই। তাই আমরাও চাই মুখ্যমন্ত্রীর হাতেই মেলার সূচনা হোক।” রাজ্যের আর এক মন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, “নিয়ম মেনেই রাস উৎসবের সূচনা হবে। তবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আসছেন বলে আমরাও চাইছি তিনিই রাসমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করুন। পুরসভার সঙ্গে ওই ব্যাপারে কথাও হয়েছে।” বিনয়ের সংযোজন, ‘‘এমনিতেও রাসমেলা জমতে দু’তিন দিন লেগে যায়। তাই আনন্দে খামতি হবে না। মেলার মেয়াদ আর দু’দিন বাড়ানোর কথা বলেছি।’’ পুরসভা সূত্রের খবর, আলোচনা করে সব ঠিক হবে।

বিরোধীদের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন বলে এই জমানায় এর আগে বেশ কিছু ক্ষেত্রেই প্রথা ভাঙা হয়েছে। কলকাতার রবীন্দ্রসদনে পঁচিশের বৈশাখের সকালে যে অনুষ্ঠান হত, তা-ও একই কারণে বদল হয়েছে বলে দাবি। কলকাতা বইমেলার মেয়াদও এক বার একই কারণে বেড়েছিল। এমনকি, আগামী বছর দশ দিন আগে শিলিগুড়ির দুর্গাপুজো উদ্বোধন করে দিয়ে যাবেন বলে সম্প্রতি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ ক্ষেত্রে রাসমেলার মতো ঐতিহ্যবাহী উৎসবের উদ্বোধন পিছিয়ে দেওয়া হল।

বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, ‘‘আগে কখনও কোচবিহারে রাসমেলার উদ্বোধন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে শুনি। এটা মেলার সংস্কৃতির পরিপন্থী।” তিনি দাবি করেন, মুখ্যমন্ত্রী থাকুন বা না থাকুন, ১১ তারিখেই উদ্বোধন করতে হবে। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী অনন্ত রায় বলেন, ‘‘আমরা ১১ তারিখেই রাসমেলা উদ্বোধন চাই। রাসমেলার উদ্বোধন পিছিয়ে দেওয়া একেবারেই কাঙ্খিত নয়।’’

Rash Mela Cooch Behar Mamata Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy