Advertisement
E-Paper

‘বোঝা হতে চাই না’, শেষ চিঠি সোমেনের

প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির প্যাডে লেখা এবং সভাপতি হিসেবে সোমেনবাবুর সই করা সেই চিঠির কথা জানা যাচ্ছে এখন নতুন সভাপতি বাছাইয়ের প্রক্রিয়া চলাকালীন।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০২০ ০৪:২৯
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

তাঁর প্রয়াণের পরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে উত্তরসূরির খোঁজ চলছে। কিন্তু তার আগেই এআইসিসি-কে ওই কাজ করার জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলেন স্বয়ং সোমেন মিত্র! মৃত্যুর সুপ্তাহদুয়েক আগে এআইসিসি-কে নিজের ভগ্নস্বাস্থ্যের কথা উল্লেখ করে চিঠি লিখে তিনি জানিয়ে গিয়েছিলেন, দলের স্বার্থে, আরও ‘ভাল ও সক্রিয়’ ভাবে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব পালনে কাউকে যদি শীর্ষ নেতৃত্ব বেছে নেন, তিনি সানন্দে পদ থেকে সরে দাঁড়াতে রাজি।

প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির প্যাডে লেখা এবং সভাপতি হিসেবে সোমেনবাবুর সই করা সেই চিঠির কথা জানা যাচ্ছে এখন নতুন সভাপতি বাছাইয়ের প্রক্রিয়া চলাকালীন। সোমেনবাবুর ওই চিঠি পাওয়ার পরেই অবশ্য এআইসিসি নতুন মুখ খোঁজার কাজে নেমে পড়েনি। কংগ্রেস নেতারা বলছেন, এত দ্রুত সোমেনবাবু বিদায় নেবেন, তা কেউই কোনও ভাবে আন্দাজ করেননি। লোকসভা ভোটের পরেও রাহুল গাঁধী কংগ্রেস সভাপতি পদ ছেড়ে দেওয়ায় সোমেনবাবুও সরে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। তখন এআইসিসি ও দলের অন্য নেতারা সেই প্রস্তাব মানেননি। এখন নতুন সভাপতি বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে সোমেনবাবুর মত নেওয়ার আর উপায় নেই!

এআইসিসি-র তরফে বাংলার ভারপ্রাপ্ত নেতা গৌরব গগৈকে গত ১৬ জুলাই পাঠানো চিঠিতে সোমেনবাবু লিখেছিলেন, ‘আমার বয়স এবং শরীরে অতীতে কী কী সমস্যা হয়েছে, আপনারা তা ভালই জানেন। স্পষ্ট করে বলতে চাই, যে দল আমাকে সব দিয়েছে, কোনও পরিস্থিতিতেই আমি সেই দলের কাছে বোঝা হয়ে থাকতে চাই না। রাহুল গাঁধী এবং আপনার কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ ২০১৮ সালে আমার উপরে আস্থা দেখানোর জন্য। এই জীবনে আমার জন্য যদি আর কিছু বাকি থেকে থাকে, তখনই সেটা হয়ে গিয়েছে’। তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘সামনে নির্বাচন আসছে। গত বছর আমার ইস্তফা এআইসিসি স্বীকার করেনি। এই পরিস্থিতিতে দলীয় নেতৃত্বের যদি কোনও সংশয় থাকে, বা তাঁদের যদি আরও ভাল ও সক্রিয় ভাবে সভাপতির দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে প্রত্যাশা থাকে, আমি তা হলে খুশি মনেই সরে দাঁড়াতে রাজি’। প্রসঙ্গত, এই চিঠি লেখার কয়েক দিনের মধ্যেই নার্সিং হোমে ভর্তি হয়েছিলেন সোমেনবাবু। সেখানেই তাঁর প্রয়াণ ঘটে ২৯ জুলাই গভীর রাতে।

চার পাশে করোনা সংক্রমণ যে ভাবে বাড়ছে, তার প্রেক্ষিতে তাঁর বয়স ও শরীরের বিচারে চিকিৎসকেরা ভিড়ভাট্টা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন বলে ওই চিঠিতে উল্লেখ করেছিলেন সোমেনবাবু। সেই সঙ্গেই তাঁর অনুরোধ ছিল, রাহুল এবং এআইসিসি নেতৃত্ব বাংলার দিকে আরও মনোযোগ দিলে কংগ্রেস কর্মীরা উজ্জীবিত হবেন। বিজেপি এবং তৃণমূলের মোকাবিলায় কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব শানিত আক্রমণ বেঁধে দিলে ভোটের প্রস্তুতি নিতেও সুবিধা হবে। রাজ্যের পরিস্থিতি মাথায় রেখে সামনের মাসগুলি দলের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এমনই মত ছিল তৎকালীন প্রদেশ সভাপতির। রাহুলের কংগ্রেস সভাপতি প্রত্যাবর্তনের পক্ষে ফের সওয়ালও ছিল শেষ চিঠিতে।

বাংলার জন্য রাহুলেরা কী পথ নেন, তা-ই এখন দেখার অপেক্ষা!

Somen Mitra PCC Congress Gaurav Garg
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy