Advertisement
E-Paper

শীতের বালাই নেই, তবু কুয়াশার ঘন চাদর! কেন ভোরের বাংলায় বিশ পা দূরের সব কিছুই সাদাটে?

শীতের অনুভূতি প্রায় নেই বললেই চলে। অথচ গত কয়েক দিনে ঘন কুয়াশার চাদর দেখা গিয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায়। কেন এই ঘন কুয়াশা, ভোরের বাংলার এই চিত্র আর কত দিন?

সারমিন বেগম

শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:৩২
ভোরের বাংলা। গত কয়েক দিন ধরে এমনই কুয়াশাচ্ছন্ন থেকেছে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত।

ভোরের বাংলা। গত কয়েক দিন ধরে এমনই কুয়াশাচ্ছন্ন থেকেছে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত। ছবি: পিটিআই।

শীতের অনুভূতি বিশেষ টের না পাওয়া গেলেও ঘন কুয়াশার চাদর দেখা গিয়েছে জেলায় জেলায়। গত কয়েক দিনে এটিই ছিল ভোরের বাংলার ছবি। দৃশ্যমানতা প্রায় তলানিতে ঠেকেছে। কোথাও কোথাও দশ-বিশ পায়ের বেশি দূরে কিছুই ঠাহর হয়নি, সবই ‘সাদা’। ঘন কুয়াশার আস্তরণ দেখা গিয়েছে কলকাতা এবং শহরতলিতেও। এমনকি বেলা গড়ালেও রোদের দেখা বিশেষ মেলেনি। ঘোলাটে ভাব রয়েই গিয়েছিল। এই পরিস্থিতির কুয়াশার জন্য দায়ী মূলত বাতাসের আর্দ্রতাই।

আর্দ্রতা নির্ভর করে বাতাসে মিশে থাকা জলকণার উপর। এই জলকণা আকাশে উপরের দিকে ঘনীভূত হলে তা থেকে বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হয়। তবে সেটি ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি ঘনীভূত হলে কুয়াশার সৃষ্টি হয়। এ ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। সাধারণত শীতকালে বাতাসে আর্দ্রতা কমই থাকে। তবে সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরে ওড়িশা উপকূলের কাছে একটি বিপরীত ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছিল। আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, সেটির কারণে দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে বাতাস প্রবেশ করছিল রাজ্যে। সেই কারণেই বাতাসে আর্দ্রতাও বৃদ্ধি পায়।

কুয়াশা সৃষ্টির জন্য মূলত তিনটি শর্তের প্রয়োজন হয়। প্রথমত, পরিষ্কার আকাশ প্রয়োজন। দ্বিতীয়ত, মাটির কাছাকাছি বাতাসে আর্দ্রতা থাকতে হবে। তৃতীয়ত, হাওয়ার বেগ খুব বেশি থাকা চলবে না। এ ক্ষেত্রে তিনটি শর্তের মধ্যে আর্দ্রতার প্রভাবই সবচেয়ে বেশি ছিল। হাওয়ার বেগ বেশি থাকলে বাতাসে মিশে থাকা জলকণা এক জায়গায় স্থায়ী হতে পারে না। অন্যত্র সরে যায়। ফলে কুয়াশা তৈরি হতে পারে না। গত কয়েক দিনে রাজ্যে হাওয়ার বেগও তেমন ছিল না। ফলে কুয়াশার জন্য তা আরও অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করে।

গত কয়েক দিনে রাজ্যে তাপমাত্রার হেরফেরও বিশেষ হয়নি। শীতের অনুভূতি প্রায় ছিল না বললেই চলে। এর কারণও মাটির কাছাকাছি বাতাসের আর্দ্রতাই। ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকিরিত হওয়া তাপ জলকণা মিশ্রিত আর্দ্র বাতাসের স্তরের কারণে বাধা পেয়েছে। সেই কারণে তাপমাত্রা কমতে পারেনি। আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা এইচআর বিশ্বাস জানান, মাটির কাছাকাছি বাতাসে আর্দ্রতা এখন আগের তুলনায় কমেছে। কুয়াশার স্তর সোমবার থেকেই কমতে শুরু করেছে। মঙ্গলবার থেকে তা আরও কমবে বলে মনে করছেন তিনি। একই সঙ্গে তাপমাত্রাও কিছুটা কমতে পারে।

অতীতে রাজধানী দিল্লি এবং সংলগ্ন অঞ্চলে ধোঁয়াশার পুরু চাদর দেখা গিয়েছে। বাতাসে মিশ্রিত দূষণের থেকে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়। তবে রাজ্যে গত কয়েক দিনে যে ঘন সাদা চাদর দেখা গিয়েছে, তা মূলত কুয়াশাই। দূষণের মাত্রা স্বল্প পরিমাণ থাকলেও মূলত আর্দ্রতার কারণেই এই ঘন কুয়াশার আস্তরণ দেখা গিয়েছে।

তবে এই কুয়াশার চাদর মঙ্গলবার থেকে কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, দক্ষিণবঙ্গের সর্বত্র আবহাওয়া প্রায় শুকনোই থাকবে। সে ক্ষেত্রে আগামী তিন দিনে দক্ষিণের জেলাগুলিতে তাপমাত্রা তিন থেকে চার ডিগ্রি পর্যন্ত কমতে পারে। কলকাতাতেও ১৮ ডিগ্রিতে নামতে পারে পারদ। তবে তার পর আবার ঠান্ডা কমবে। পরের দু’দিনে আবার দুই থেকে তিন ডিগ্রি তাপমাত্রা বাড়বে বলে পূর্বাভাস রয়েছে।

foggy weather Weather Forecast fog West Bengal Weather
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy