সিগন্যালে দাঁড়ানো বাইকে ধাক্কা বেপরোয়া গাড়ির, মৃত ১

কলকাতার রাস্তায় ফের বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটল।

মধ্য কলকাতার হেয়ার স্ট্রিট থানা এলাকার টি বোর্ডের কাছে রবিবার গভীর রাতে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ সূত্রের খবর, সিগন্যালে দাঁড়িয়ে ছিল একটি মোটরবাইক। সেটিতে তিন সওয়ারি ছিলেন। পিছন থেকে একটি গাড়ি বেপরোয়া গতিতে এসে বাইকটিকে ধাক্কা মারে। তার পরে গাড়িটি ধাক্কা মারে একটি অ্যাপ-ক্যাবে। সংঘর্ষের অভিঘাতে ক্যাবটি কার্যত ছিটকে গিয়ে রাস্তার রেলিং ভেঙে হুড়মুড়িয়ে ধাক্কা মারে ট্র্যাফিক পুলিশের কিয়স্কে। তার জেরে সেটি উপড়ে যায়।

কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় এক বাইক আরোহীর মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া, বাইক, ক্যাব ও গাড়ি মিলে বেশ কয়েক জন জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। গাড়ির চালক আনিস খানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো, বেপরোয়া গাড়ি চালানো ও অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যু ঘটানোর মামলা রুজু করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।

পুলিশ জানিয়েছে, মৃত বাইক আরোহীর নাম রবি জয়সওয়াল (৩৬)। তিনি হাওড়ার টিকিয়াপাড়া এলাকার গঙ্গাধর বৈরাগী লেনের বাসিন্দা। তাঁর প্লাস্টিকের ছাঁটের ব্যবসা রয়েছে। পরিবারের লোকজন জানান, বন্ধুদের সঙ্গে বাইকে চেপে চিৎপুরের একটি দোকানে তাঁরা বিরিয়ানি খাওয়ার জন্য বেরিয়েছিলেন। দ্রুত জখমদের উদ্ধার করে এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হলেও রবিকে বাঁচানো যায়নি।

কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, নীল রঙের বিলাসবহুল গাড়িতে চেপে হাওড়ার দিক থেকেই আসছিলেন চার জন। বাইকটি সিগন্যালে দাঁড়িয়েছিল। তিন আরোহীর কেউই হেলমেট পরে ছিলেন না। গাড়ির ধাক্কায় রাস্তায় সবাই ছিটকে পড়ে আহত হন। বাইক এবং গাড়ি— দু’টির সওয়ারিরা অনেকেই মত্ত অবস্থায় ছিলেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ।

মৃতের দাদা বিকাশ জানান, রবি পরিবারের ছোট ছেলে। বিকাশ বলেন, ‘‘বাইকটি আমার ভাইয়ের। কিন্তু চালাচ্ছিলেন ভাইয়ের এক বন্ধু। কেন ভাই বাইক অন্যকে চালাতে দিল, কেনই বা অত রাতে কলকাতা যাচ্ছিল, কিছুই জানি না। বাড়িতে বাবা-মা রয়েছেন। আমরা এখনও ঘোরের মধ্যে রয়েছি।’’

সোমবার সকালে দুর্ঘটনালস্থলে গিয়ে দেখা যায়, জায়গাটি ঘিরে রেখেছে পুলিশ। যে ভাবে ফুটপাত ভেঙে উপড়ে গিয়েছে, তা দেখে অনেকেই আঁতকে উঠেছেন। হেয়ার স্ট্রিট থানায় গিয়ে দেখা যায়, নীল গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় বাইরে রয়েছে। কাছেই রাখা রয়েছে বাইক এবং ক্যাবটি।