Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Mamata Banerjee

টেট থেকে নিয়োগ ডিসেম্বরে, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী

পর্যবেক্ষক শিবিরের বক্তব্য, শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্য সরকারের উপরে চাপ বাড়ছিল।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২০ ০৪:৩৩
Share: Save:

একই সঙ্গে জোরালো হচ্ছিল দাবি এবং চাপ। এই অবস্থায় প্রাথমিক স্তরে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় (টেট) সফল প্রার্থীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার সবুজ সঙ্কেত দিল রাজ্য সরকার। বুধবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই মর্মে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ডিসেম্বর থেকেই নিয়োগ-প্রক্রিয়া শুরু হবে। ফেব্রুয়ারির মধ্যে গোটা প্রক্রিয়া শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অফলাইনে পরবর্তী টেট-প্রক্রিয়া শুরু করার ছাড়পত্রও এ দিন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে দিয়েছে নবান্ন।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, ১৬,৫০০ শূন্য পদ পূরণের জন্য টেট হয়েছিল। উত্তীর্ণ হন ২০ হাজার প্রার্থী। ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে তাঁদের নিয়োগ করার কথা। ডিসেম্বরে সেই প্রক্রিয়াই শুরু হচ্ছে। তিনি বলেন, “২০ হাজার সফল প্রার্থীর মধ্যে যাঁরা বাকি থাকবেন, দফায় দফায় নিয়োগ হবে তাঁদেরও।”

টেট পাশ করা সত্ত্বেও বহু প্রার্থী নিয়োগপত্র না-পাওয়ায় দফায় দফায় ব্যাপক আন্দোলন হয়েছে। পথে নেমেছিলেন প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিটিআই) থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়া প্রার্থীরাও। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন নিয়োগের সময় ঘোষণার পরেও যদি কাজ না-হয়, তা হলে ফের রাস্তায় নামার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইমারি ট্রেন্ড টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি পিন্টু পাড়ুইয়ের বক্তব্য, বহু পিটিটিআই প্রশিক্ষিত প্রার্থী টেট পাশ করে বসে আছেন। নিয়োগ যে-ভাবেই হোক না কেন, তাঁরা যেন আর কোনও ভাবেই বঞ্চনার শিকার না-হন। ওঁদের নিয়োগ-প্রক্রিয়া যেন যথাযথ ভাবে সম্পন্ন হয়। ‘‘নইলে আমরা আরও বড় আন্দোলনে নামব,’’ বলেন পিন্টুবাবু।

আরও পডুন: ২০২১: টেস্ট হবে না দশম ও দ্বাদশে​

প্রাথমিকে নিয়োগের জন্য নতুন করে পরীক্ষার দাবিও উঠছে দীর্ঘদিন ধরে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, অতিমারির জন্য নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। অন্তত আড়াই লক্ষ যুবক-যুবতী সেই পরীক্ষা দিতে চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন করেছেন। এই অবস্থায় সরকারের সিদ্ধান্ত, অফলাইনে আবার শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নেওয়া হবে। “যত দ্রুত সম্ভব এই প্রক্রিয়া শুরু করতে বলা হয়েছে। সকলেই শিক্ষক হতে চান। সরকারি চাকরির গুরুত্ব রয়েছে। এতে বহু ছেলেমেয়ের চাকরির ব্যবস্থা হয়ে যাবে,” বলেন মমতা।

পর্যবেক্ষক শিবিরের বক্তব্য, শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্য সরকারের উপরে চাপ বাড়ছিল। বিরোধীরাও এই বিষয়টিকে সরকারের বিরুদ্ধে নিজেদের প্রচারের হাতিয়ার করছেন। এই অবস্থায় আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনের আগে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাবে। তাই আগেভাগেই শিক্ষক নিয়োগের বকেয়া এবং নতুন প্রক্রিয়া চালু করার ব্যাপারে ছাড়পত্র দিল রাজ্য সরকার। সংশ্লিষ্ট মহলের ব্যাখ্যা, চলতি পরিস্থিতিতে কর্মসংস্থানের বিষয়টি সরকারকে ভাবাচ্ছে বলেই কয়েক দিন আগে ৩৫ লক্ষ কাজের ব্যবস্থা করার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, আগামী তিন বছরের মধ্যে এই বিপুল সংখ্যক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছি। ইন্টারভিউ থেকে শুরু করে নিয়োগ-পদ্ধতি দ্রুত হওয়া দরকার,’’ বলেন পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নবকুমার কর্মকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE