Advertisement
E-Paper

তদন্তে হাতিয়ার কুন্তল-তাপসের জোড়া ডায়েরি

তদন্তকারীরা জানান, শিক্ষা ক্ষেত্রে বেআইনি নিয়োগের জন্য তিনিই কুন্তলকে প্রায় সাড়ে ১৯ কোটি টাকা দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন তাপস।

  শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:২১
কুন্তল ঘোষ এবং তাপস মণ্ডল।

কুন্তল ঘোষ এবং তাপস মণ্ডল। ফাইল চিত্র।

ডায়েরি দু’টি। একটি ডায়েরি অভিযোগকারীর, অন্যটি অভিযুক্তের। প্রথম ডায়েরির মলাটের রং মেরুন। দ্বিতীয়টির ধূসর। শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে ইডি বা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট মাস দুয়েক আগে মেরুন ডায়েরিটি পেয়েছিল বেসরকারি কলেজ সংগঠনের সভাপতি তাপস মণ্ডলের কাছে। আর ধূসর ডায়েরিটি আটক করা হয়েছে ওই মামলায় শনিবার ধৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের কাছ থেকে।

‘প্রশান্ত মহাসাগরের’ মতো ব্যাপক এই নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে ওই দু’টি ডায়েরি তাদের কাছে আপাতত বড় হাতিয়ার বলে ইডি সূত্রের দাবি। কারণ, ওই দুই ডায়েরির মধ্যে নানান লেনদেনের তথ্য আছে। সেই সূত্র ধরে তদন্ত আরও এগোতে পারে। যদিও একটি সূত্রের দাবি, দুই ডায়েরিতে উল্লিখিত লেনদেনের খতিয়ানে বেশ কিছু ফারাক আছে। তার ফলে তথ্যের ফাঁকফোকর তৈরি হতে পারে। তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সেই সব ফাঁক পূরণ করা অত্যন্ত জরুরি।

তদন্তকারীরা জানান, শিক্ষা ক্ষেত্রে বেআইনি নিয়োগের জন্য তিনিই কুন্তলকে প্রায় সাড়ে ১৯ কোটি টাকা দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন তাপস। কবে, কী ভাবে টাকা দেওয়া হয়েছিল, তাঁর মেরুন রঙের ডায়েরির পাতায় সেই লেনদেনের তথ্য আছে। বিভিন্ন তারিখে টাকা নেওয়ার সময় কুন্তল অথবা তাঁর গাড়িচালক বা হিসাবরক্ষকের সই আছে। অর্থাৎ তাপসের অভিযোগ অনুযায়ী কুন্তল বা কুন্তলের কোনও প্রতিনিধি টাকা নিয়েছেন রীতিমতো সইসাবুদ করে। কিন্তু কুন্তলের ধূসর রঙের ডায়েরিতে টাকার অঙ্ক লেখা থাকলেও সেই টাকা কে নিয়েছেন, তার কোনও তথ্য নেই। সইও নেই। প্রশ্ন উঠছে, চিনার পার্কের বহুতল আবাসনে কুন্তলের ফ্ল্যাট থেকে বাজেয়াপ্ত করা ওই ডায়েরির হিসেব কি কোনও উচ্চ মহলে টাকা পাঠানোর ইঙ্গিত বহন করছে?

এই প্রশ্নের নিশ্চিত উত্তর এ-পর্যন্ত ইডি অফিসারদের কাছেও নেই। তবে মেরুন ডায়েরির তথ্য অনুযায়ী যখন যখন তাপসের কাছ থেকে কুন্তলের কাছে টাকা পৌঁছেছিল, সেই সেই সময়ে বা তার কাছাকাছি সময়েই ধূসর ডায়েরিতে টাকা লেনদেনের তথ্য নোট করা হয়েছে বলে খবর।

তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর, বেআইনি নিয়োগের টাকা নেওয়ার কথা প্রকারান্তরে স্বীকারও করে নিয়েছেন কুন্তল। ইডি অফিসারদের দাবি, জেরায় কুন্তল জানিয়েছেন যে, তিনি ১০ শতাংশ কমিশন নিয়েছেন। তাঁর আইনজীবী কোর্টেও সে-কথা জানিয়েছেন। সেই সূত্রেই প্রশ্ন উঠছে যে, তিনি ১০ শতাংশ কমিশন পেলে বাকি ৯০ শতাংশ টাকা কোথায় গিয়েছে? অনেকেরই প্রশ্ন, সেই ৯০ শতাংশের ইঙ্গিত কি ধূসর ডায়েরিতে আছে? লেনদেনের ব্যাপারে সইসাবুদ না-থাকলেও ওই ডায়েরিতে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের কয়েক জন নেতার নাম আছে। তবে নিছক নামের উল্লেখ আছে, এমন ‘তথ্যের’ ভিত্তিতেই কারও নাম এই নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে জড়ানো যায় কি না, সেই প্রশ্নও উঠতে পারে।

Recruitment Scam Kuntal Ghosh Tapas Mandal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy