Advertisement
E-Paper

বাংলার লঙ্কার গন্তব্য জাপান

এ দেশে যেমন সবুজ লঙ্কা পছন্দ করেন আমজনতা, জাপানে তেমন লাল লঙ্কা। তথ্য পরিসংখ্যান বলছে, জাপানে মাত্র ১২-১৫ শতাংশ লোক কৃষিজীবী। ফলে শাকসব্জির প্রায় পুরোটাই ভিন দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এত দিন ভিয়েতনাম ও তাইল্যান্ড থেকে আনাজ যেত।

দেবজিৎ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১০:০০

এ বার বাংলার লঙ্কা পাড়ি দেবে জাপানে!

বছর দুয়েক আগে বিশ্ব বঙ্গ শিল্প সম্মেলনে পশ্চিমবঙ্গের লঙ্কা জাপানে নিয়ে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছিল একটি জাপানি বেসরকারি সংস্থা। কৃষি বিপণন দফতরের সঙ্গে এত দিন আলোচনা চলছিল। শেষ পর্যন্ত নবান্নের সবুজ সঙ্কেত মিলেছে। তার পরেই কলকাতার এক রফতানিকারক সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করেন জাপানি প্রতিনিধিরা। সব ঠিক থাকলে খুব শিগগিরই জাপানের বাজার মাতাবে বাংলার লঙ্কা।

সব আনাজ ছেড়ে কেন লঙ্কায় নজর? এ দেশে ওই সংস্থার উপদেষ্টা পরাণ দাস বলেন, ‘‘জাপানে অনেক আগে থেকেই বাঙালি রেস্তোরাঁ রয়েছে। সেগুলো খুবই জনপ্রিয়। ধীরে ধীরে সংখ্যায়ও বাড়ছে। পাশাপাশি চিন ও কোরিয়ার একাধিক সংস্থা ‘রেস্তোরাঁ চেন’ খুলেছে। জাপানিদের স্বাদ মেটাতে ওই সব রেস্তেরাঁয় লঙ্কার চাহিদা বিস্তর।’’

তবে কি জাপানিদের খাদ্য তালিকায় লঙ্কা আবশ্যিক?

পরাণের দাবি, আবশ্যিক না হলেও পাতের পাশে লাল লঙ্কা সাজিয়ে রাখাই দস্তুর।

এ দেশে যেমন সবুজ লঙ্কা পছন্দ করেন আমজনতা, জাপানে তেমন লাল লঙ্কা। তথ্য পরিসংখ্যান বলছে, জাপানে মাত্র ১২-১৫ শতাংশ লোক কৃষিজীবী। ফলে শাকসব্জির প্রায় পুরোটাই ভিন দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এত দিন ভিয়েতনাম ও তাইল্যান্ড থেকে আনাজ যেত। এখন দক্ষিণ পূর্ব এশিয়াকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে জাপান। বাংলাও রয়েছে সেই পছন্দের তালিকায়।

কৃষি বিপণন দফতরের হিসেবে, রফতানির পথ খুলে গেলে প্রতি দিন গড়ে ১০০০ কেজি লঙ্কা পাঠানোর সুযোগ পাবেন স্থানীয় রফতানিকারীরা। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, জাপানে উন্নত মানের এক কেজি লাল লঙ্কার বাজারদর ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৮০০ টাকা। আর এ রাজ্য থেকে লঙ্কা আমদানি করলে খরচ দাঁড়াবে কেজি প্রতি ২১০ টাকা।

চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সরবরাহে কোনও ঘাটতি হবে না বলে দাবি রাজ্যের। কৃষি বিপণন দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, পশ্চিমবঙ্গে যে পরিমাণ লঙ্কা চাষ হয়, তাতে রাজ্যবাসীর চাহিদা মিটিয়েও তামিলনাড়ু, মহারাষ্টের মতো বেশ কয়েকটি রাজ্যে রফতানি হয় ফি বছর। মূলত হলদিবাড়ি, ধূপগুড়ি, কালিয়াগঞ্জ, মানিকচক, বেলডাঙা, পূর্বস্থলী, মেমারি, এগরা ও কাঁথিতে লঙ্কার চাষ হয়। এক সময় সাগরে প্রচুর লঙ্কা হত। কিন্তু ইদানীং সেখানকার চাষিরা অন্য চাষে মন দেওয়ায় লঙ্কার পরিমাণ ও মান দুই-ই পড়েছে। তা সত্ত্বেও দেশের বাজারে বাংলার লঙ্কার জোগান কিছুমাত্র কমেনি। এমনকী, খ্যাতি ছড়িয়েছে সাগরপারেও।

তবে এই ব্যবসা শুরুর আগে চাই প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো। কলকাতার একটি রফতানিকারী সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর অঙ্কুশ সাহা বলেন, ‘‘জাপানিদের পছন্দ, লঙ্কা লাল কিন্তু শুকনো হবে না। এর জন্য -১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে আনাজ হিমায়িত রাখতে হবে। কিন্তু আমাদের রাজ্যে সেই সুযোগ নেই।’’ সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, এই জাপানি সংস্থাটি সিঙ্গুরে একটি গুদামঘর বানাচ্ছে। সেখানে আনাজ হিমায়িত রাখার বন্দোবস্ত থাকার কথা। গোটা রাজ্যে ১০০টি গুদামঘর তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে তাদের।

Red Chilies Import India Japan জাপান লঙ্কা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy