মন্ত্রীর হাত থেকে চেক নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন এক মৃতে পরিবারের সদস্য। —নিজস্ব চিত্র।
শিবের মন্দিরে জল ঢালতে গেলেও গা়ড়িতে জেনারেটর বা ডিজে বাজিয়ে কেউ যেন না যান। রাজ্য প্রশাসনের কাছে এই আর্জি জানালেন শীতলখুচির মৃতদের পরিবারের সদস্যেরা। তাঁদের দাবি, গাড়িতে ডিজে বাজানো বা জেনারেটর নিয়ে যাওয়া অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। সে জন্য প্রশাসনকে নজরদারি চালানোর আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা। এ ধরনের দুর্ঘটনায় দোষীদের কঠোর শাস্তিরও দাবি করেছেন মৃতদের পরিবারের সদস্যরা।
কোচবিহারের শীতলখুচি থেকে জলপাইগুড়ির জল্পেশ মন্দিরে যাওয়ার পথে রবিবার চ্যাংড়াবান্ধায় পিকআপ ভ্যানের ভিতরে জেনারেটরের তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় দশ জনের। তাঁরা সকলেই শীতলখুচির বাসিন্দা ছিলেন। ওই দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার শীতলখুচি ব্লকের কমিউনিটি হলে মৃতদের প্রত্যেক পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। পরিবারের সদস্যদের হাতে ওই ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। মন্ত্রীর হাত থেকে চেক নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মৃতদের পরিবারের সদস্যরা। দুর্ঘটনায় মৃত শুভঙ্কর বর্মণের বাবা দিলীপকুমার বর্মণ বলেন, ‘‘গাড়িতে জেনারেটর উঠিয়ে ডিজে বাজিয়ে শিবমন্দিরে জল ঢালতে যাওয়ার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আমার ১৪ বছরের ছেলের মৃত্যু হয়েছে। আমার যা ক্ষতি হওয়ার, তা হয়ে গিয়েছে। ভবিষ্যতে আর কেউ যেন গাড়িতে জেনারেটর, ডিজে নিয়ে জল ঢালতে না যায়। আর কারও যেন এ ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটে।’’
দুর্ঘটনা এড়াতে প্রশাসনের নজরদারি প্রয়োজন বলে মনে করেন দিলীপ। এ বিষয়ে সরকার চিন্তা-ভাবনা করছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘‘এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছে প্রশাসন। এ নিয়ে নির্দেশিকা জারি করা হবে।’’ চেক বিতরণ অনুষ্ঠানের পর তিনি আরও বলেন, ‘‘দুর্ঘটনাগ্রস্তদের খোঁজ নেওয়ার জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৎক্ষণাৎ আমাকে পাঠিয়েছেন। তৃণমূল থেকে রাজ্য সরকার, স্থানীয়স্তরের নেতা এবং প্রশাসন, সকলেই দুর্ঘটনাগ্রস্তদের পাশে রয়েছে। মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে চেক প্রদান করা হয়েছে।’’
চ্যাংড়াবান্ধায় দুর্ঘটনায় জখমদের অনেককেই হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। মাথাভাঙার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত বর্মা বলেন, ‘‘জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে যে ১৪ জনকে ভর্তি করানো হয়েছিল, তার মধ্যে ন’জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ওই দুর্ঘটনার পর থেকে গাড়ির চালক পলাতক। তাঁর খোঁজ চালানো হচ্ছে। তা ছাড়া, দশটি কেস করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ময়নাতদন্তের পর চিকিৎসকেরা জানিয়ে দিয়েছেন যে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েই দশ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে এখনও ময়নাতদন্তের সবিস্তার রিপোর্ট আসা বাকি। দুর্ঘটনার কারণ জানতে ফরেন্সিক টিম গাড়িটির পরীক্ষা করে রিপোর্ট দেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy