Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

মুখ্যমন্ত্রীর হাসিমুখে ফিরল স্বস্তি

২৪ ঘণ্টা পরে শুক্রবার বিকেলে যখন মুখ্যমন্ত্রী বাগডোগরা বিমানবন্দরে ঢুকছেন, তখনও দেখা গিয়েছে তাঁর হাসিমুখ। তাতেই দিনের শেষ কিছুটা হলেও স্বস্তিতে পুলিশ-প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা।

মুখ্যমন্ত্রী: বাগডোগরা বিমানবন্দরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাদ্যায়। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

মুখ্যমন্ত্রী: বাগডোগরা বিমানবন্দরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাদ্যায়। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

কিশোর সাহা ও অনির্বাণ রায়
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:৫৯
Share: Save:

রায়গঞ্জের হেমতাবাদে নিরাপত্তায় গলদে যে তিনি যে ক্ষুব্ধ ও বিরক্ত উত্তরকন্যায় পৌঁছনোর পরেই তা বুঝতে পেরেছিলেন পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা। তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার বিকেলে উত্তরকন্যায় পৌঁছনোর পর থেকে তটস্থ ছিলেন তাঁরা। কিন্তু, কিছু ক্ষণের মধ্যেই সবাইকে নিজের অফিসে ডেকে নেন মুখ্যমন্ত্রী। শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে খোঁজখবর নেন। বেশ কিছু উন্নয়নমূলক কাজে গতি আনার নির্দেশ দেন। শুধু তাই নয়, ২৪ ঘণ্টা পরে শুক্রবার বিকেলে যখন মুখ্যমন্ত্রী বাগডোগরা বিমানবন্দরে ঢুকছেন, তখনও দেখা গিয়েছে তাঁর হাসিমুখ। তাতেই দিনের শেষ কিছুটা হলেও স্বস্তিতে পুলিশ-প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা।

এক পুলিশ কর্তা জানান, বৃহস্পতিবার নিরাপত্তায় গাফিলতি দেখার পরে হেলিকপ্টারে ওঠার আগে পর্যন্ত প্রচণ্ড বিরক্ত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। শিলিগুড়ির ফুলবাড়িতে কপ্টার থেকে নামার পরেও তাঁকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখেছেন অনেকে। কিন্তু, নিজেকে সামলে স্বাভাবিক ভাবে প্রশাসনিক কাজকর্মে ডুবে যাওয়ায় অফিসাররা হাঁফ ছাড়েন।

এ দিন সকালে ঘুম ভাঙার পর উত্তরকন্যার কন্যাশ্রী আবাসনের সামনে প্রায় ঘণ্টাখানেক হাঁটেন মুখ্যমন্ত্রী। পুলিশ-প্রশাসনের অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করেন। দুপুরে রওনা হওয়ার আগে হালকা খাবার খান। উত্তরকন্যায় কর্তব্যরত অফিসারদের কয়েক জনকে ডেকে আলাদা করে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। এমনকী উত্তরকন্যায় তাঁর অফিসের সামনে সুন্দর ফুলের বাগানের ঢালাও প্রশংসাও করেছেন তিনি।

বেলা ৩টে নাগাদ রওনা হন বাগডোগরার দিকে। ফুলবাড়ির কাছে যেতেই রাস্তার দু’পাশে উপচে পড়া ভিড়। জানালার কাচ নামিয়ে হাতজোড় করে প্রতি নমস্কার করেন সকলকে। কখনও কাউকে বলেন, ‘‘ভাল থাকবেন।’’ কাউকে ‘‘ভাল থেকো’’ বলে আশীর্বাদও করেছেন তিনি। হেমতাবাদের ঘটনার পরে বাগডোগরা বিমানবন্দরেও পুলিশ-প্রশাসন ছিল ত্রস্ত।

প্রতিবারই মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গ সফরে এলে বাগডোগরা বিমানবন্দরের নিরাপত্তা থাকে যথেষ্ট মজবুত। মোটা দড়ি দিয়ে আলাদা প্যাসেজ করে রাখা হয় মুখ্যমন্ত্রীর যাওয়ার জন্য। এ বার দড়ির বদলে ছিল গার্ডরেল। দু’টি গার্ডরেল পাশাপাশি রেখে তৈরি হয়েছিল প্যাসেজ। সাদা পোশাকের পুলিশ এবং মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা পুরো চত্বর ঘিরে রেখেছিল। বিমানবন্দরে ঢোকার দু’পাশে মোতায়েন হয়েছিল মূলত মহিলা কনস্টেবলদের। পুলিশ অফিসারদের চোখেমুখে উৎকণ্ঠা।

মুখ্যমন্ত্রী গাড়ি থেকে নেমে দু’দিকে হাত নাড়তে নাড়তে লাউঞ্জে ঢুকে যান। বিমানবন্দরে আসা তৃণমূল নেতা কৃষ্ণ পাল, নান্টু পাল, রঞ্জন সরকার, রঞ্জন শীলশর্মাদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সাংসদ শান্তা ছেত্রীর সঙ্গেও হাসিমুখে কথা বলেন। তৃণমূল নেতাদের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ভাল থাকিস সকলে। ভাল থাকিস। মন দিয়ে কাজ করিস।’’ এরপর হাসিমুখেই বিমানবন্দরের ভিতরে ঢুকে যান। এক পুলিশ অফিসার বলেন, ‘‘শেষ ভাল যার, সব ভাল তার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE