Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

রোদ ওঠায় গতি বাড়ল উদ্ধারে, খুলছে রাস্তাও

শনিবার রাতভর জোর বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু রবিবার সকাল থেকে বৃষ্টি বন্ধ হওয়ায় পাহাড়ের পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। উদ্ধার কাজে যেমন গতি এসেছে, তেমনই শিলিগুড়ি থেকে সরাসরি মিরিক যাওয়ার রাস্তাও খোলা হয়েছে। এ দিন সকালেও সিকিম যাওয়ার প্রধান রাস্তা ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের শ্বেতীঝোরায় ধস নামে।

টিংলিঙে ধস বিধ্বস্ত এলাকায় দুর্গতদের উদ্ধারের কাজে এনডিআরএফ কর্মীরা। ছবি: রবিন রাই।

টিংলিঙে ধস বিধ্বস্ত এলাকায় দুর্গতদের উদ্ধারের কাজে এনডিআরএফ কর্মীরা। ছবি: রবিন রাই।

কৌশিক চৌধুরী
শ্বেতীঝোরা (কালিম্পং) শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৫ ০২:৪৬
Share: Save:

শনিবার রাতভর জোর বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু রবিবার সকাল থেকে বৃষ্টি বন্ধ হওয়ায় পাহাড়ের পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। উদ্ধার কাজে যেমন গতি এসেছে, তেমনই শিলিগুড়ি থেকে সরাসরি মিরিক যাওয়ার রাস্তাও খোলা হয়েছে।

এ দিন সকালেও সিকিম যাওয়ার প্রধান রাস্তা ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের শ্বেতীঝোরায় ধস নামে। তবে বৃষ্টি না হওয়ায় ধস সরিয়ে দুপুর নাগাদ ওই জাতীয় সড়কটিও খোলা গিয়েছে। মিরিকের গয়াবাড়ির রাস্তাটিও চালু হয়েছে। রাতে রোহিণী রোড ধরে পণ্যবাহী বড় গাড়িও চলাচল করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন।

এ দিন উদ্ধার কাজ চালাতে গিয়ে ন্যাশনাল ডিসাস্টার রেসপন্স ফোর্সের (এনডিআরএফ) কর্মীরা কালিম্পঙের ৮ মাইল এলাকা থেকে রমেশ রাই (৫৮) নামে এক ব্যক্তির দেহ উদ্ধার করেছেন। তবে তাঁর স্ত্রী কুসুম রাইয়ের এখনও হদিস মেলেনি। এই নিয়ে ধসে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৩১ জন। এখনও ৯ জন নিখোঁজ। দার্জিলিঙের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবা স্তব বলেন, ‘‘আবহাওয়া কিছুটা ভাল থাকায় উদ্ধার কাজে সুবিধা হচ্ছে। ত্রাণ শিবিরগুলিও ঠিকঠাক চলছে। মিরিক ও সিকিমগামী রাস্তাও আপাতত খোলা।’’

গত মঙ্গলবার রাতে মিরিক, কালিম্পং মিলিয়ে দার্জিলিং পাহাড়ের বিধ্বংসী ধসের পর থেকেই বিস্তীর্ণ এলাকা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। বারবার ধসে বন্ধ ছিল পাহাড়ের রাস্তাও। টানা বৃষ্টিতে ব্যাহত হয়েছে উদ্ধার কাজ।

এর মধ্যে ১৩ জুলাই এই রাস্তা ধরেই সিকিমের নাথুলা হয়ে কৈলাস মানস সরোবর যাত্রার দ্বিতীয় দফায় যাত্রীদের সফর শুরু হওয়ার কথা। মোট ৫টি তীর্থযাত্রীদের দল এই রুটে সিকিম যাবে। কিন্তু তিন দিন বন্ধ থাকার পর শনিবার শ্বেতীঝোরার রাস্তাটি খোলার পরে বিকালের পর থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। ভোর রাতে ফের রাস্তাটি বন্ধ হয়ে যায়। জেলার বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নিতিন গডকড়ীকে এই ১০ নম্বর জাতীয় সড়কটি দ্রুত মেরামতির জন্য ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছেন।

এ দিন সকালে রাস্তাটি খুলেছে শুনে বহু গাড়ির চালক ওই রাস্তায় ঢুকে আটকেও পড়েন। দেখা যায় যানজটও। পরে সীমান্ত সড়ক সংস্থার কর্মীরা মাটি পাথর সরিয়ে দুপুর নাগাদ রাস্তাটি খুলতে সমর্থ হন। অনেকে ধসের এলাকায় হেঁটে এপারে এসে গাড়ি ধরে শিলিগুড়ি পৌঁছন।

গত শনিবার সকাল থেকে মিরিক যাতায়াতকারী রাস্তায় উড়ে যাওয়া সেতুর পাশেই বিকল্প ব্যবস্থা করতে কাজ শুরু করেন পূর্ত দফতরের বাস্তুকারেরা। নদীর উপর বড় পাথর ফেলে সেখানে বসানো হয় একের পর এক ‘হিউমপাইপ’। তার পরে বালি, মাটি, পাথর বিছিয়ে বিকল্প অস্থায়ী রাস্তা তৈরি হয়। এ দিন দুপুর নাগাদ প্রথমে বাইক চলাচল শুরু হয়। পরে ছোট গাড়ি চলাচল করেছে। পূর্ত দফতরের বাস্তুকারেরা জানিয়েছেন, আপাতত হিউম পাইপ কালভার্ট দিয়ে রাস্তাটি সচল করা হয়েছে। পাইপের ভিতর দিয়ে নদীর জল বইবে। তবে নদীতে বেশি জল হলে বা টানা বৃষ্টিতে পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে, তা নিয়ে অবশ্য চিন্তায় রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE