Advertisement
E-Paper

বহিরঙ্গে সৌন্দর্যায়ন, অবহেলায় ঢেকে রোনাল্ড রস স্মারক ফটক

লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে হচ্ছে সৌন্দর্যায়নের নানা কাজ। কিন্তু ঝোপে ঢেকে গিয়েছে ওই হাসপাতালের ‘রোনাল্ড রস স্মারক ফটক’। হাসপাতালের বহিরঙ্গে চারদিকে চলছে হরেক সংস্কারের কাজ। অযত্নে, অবহেলায় পড়ে ঐতিহ্যবাহী ওই ফটক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৫ ১৪:৩৩

লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে হচ্ছে সৌন্দর্যায়নের নানা কাজ। কিন্তু ঝোপে ঢেকে গিয়েছে ওই হাসপাতালের ‘রোনাল্ড রস স্মারক ফটক’। হাসপাতালের বহিরঙ্গে চারদিকে চলছে হরেক সংস্কারের কাজ। অযত্নে, অবহেলায় পড়ে ঐতিহ্যবাহী ওই ফটক।

১৮৯৭ সালে রোনাল্ড রস কলকাতার পিজি হাসপাতালে বসে আবিষ্কার করলেন ম্যালেরিয়া রোগের জীবাণু প্লাসমোডিয়াম কী ভাবে মশার শরীরে থেকে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে, তার সম্পূর্ণ জীবনচক্র। বহু দিন পর্যন্ত বিশ্বাস ছিল খারাপ হাওয়াই (mal = খারাপ, air = হাওয়া) ম্যালেরিয়া রোগের কারণ। রসই প্রথম বুঝেছিলেন ম্যালেরিয়া রোগের কারণ হল এক ধরনের পরজীবী, যার বৈজ্ঞানিক নাম প্লাসমোডিয়াম। পরে একটি অ্যানোফিলিস মশার পেটে প্লাসমোডিয়ামের অস্তিত্ব আবিষ্কার করে রস বুঝতে পারেন যে ম্যালেরিয়া রোগের জীবাণু প্লাসমোডিয়াম হলেও সেটা ছড়ায় অ্যানোফিলিস মশার মাধ্যমে।

পিজি থেকে এসএসকেএম। বহিরঙ্গে অনেক বদল হয়েছে। সাম্প্রতিকতম নিদর্শন তিনটি বিশাল ফটক। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের বিপরীতে নতুন তৈরি একটি ফটকের অদূরে ১৯২৭ সালের ৭ জানুয়ারি একটি স্মারক ফটকের উদ্বোধন করেন স্বয়ং নোবেলজয়ী রস। ফটকটি বহু বছর ধরে তালাবন্ধ। ভিতরে একরাশ বর্জ্য। গেটের সামনে ঝোপ। ফটকে রসের খোদাই করা ছবি ছাড়াও একটি ফলকে লেখা, ‘‘ইন দি স্মল ল্যাবরেটরি সেভেন্টি ইয়ার্ডস টু দি সাউথইস্ট অব দিস গেট স্যার রোনাল্ড রস, আইএমএস ইন ১৮৯৮ ডিসকভার্ড দি ম্যানার ইন হুইচ ম্যালেরিয়া ইজ কনভেড বাই মসকুইটোজ।’’

অ্যানোফিলিস মশা ম্যালেরিয়া রোগীকে কামড়ালে রোগীর রক্তে মিশে থাকা প্লাসমোডিয়াম মশার শরীরে প্রবেশ করে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় এবং গ্যামেটোসাইটে পরিণত হয়ে মশার লালায় প্রবেশ করে। এই মশা এ বার কোনও সুস্থ মানুষকে কামড়ালে তার শরীরে প্লাসমোডিয়ামের গ্যামেটোসাইট ঢুকে তাকে ম্যালেরিয়া রোগাক্রান্ত করে। কলকাতায় রোনাল্ড রসের এই আবিষ্কার হইচই ফেলে দেয় গোটা বিশ্বে। নোবেল পুরস্কার চালু হওয়ার এক বছর বাদে, ১৯০২ সালে যুগান্তকারী আবিষ্কর্তা রস-কে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।

পরবর্তীকালে ওই ‘স্মারক ফটক’ এবং রস-এর এই যুগান্তকারী আবিষ্কারের সূতিকাগারকে ঐতিহ্যবাহী বলে সরকারিভাবে চিহ্ণিত করা হয়। পরীক্ষাগারটির গায়ে রস-এর গবেষণার ফক লাগানো হয়েছে। কাছেই, বেশ ক’বছর আগে একটি বড় ভবন এবং একটি উদ্যাণ চিহ্ণিত হয়েছে তাঁর নামে। কিন্তু কেন ফটকটির এই হাল?

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, এগুলো তো আমরা দেখি না। পূর্ত দফতরের দেখার কথা! তদারকির দায়িত্বে থাকা পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ার অঞ্জন সাহার কাছে জানতে চাইলে বলেন, ‘‘আমরা তো অনেক টাকা খরচ করে ওই হাসপাতালে নতুন গেট করে দিয়েছি!’’ কিন্তু ঐতিহ্যবাহী ওই ফটকে তো পরিচর্যার অভাবের ছাপ প্রকট হয়ে উঠেছে? অঞ্জনবাবুর জবাব, ‘‘ঠিক জানা নেই। খোঁজ করব।’’

ronald ross sskm ronald ross memorial gate
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy