Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

জুহির পাশে দাঁড়িয়েই বিজেপিকে চাপ রূপার

শিশু-পাচার চক্রে অভিযুক্ত জুহি চৌধুরীর পাশেই দাঁড়ালেন বিজেপি-র মহিলা মোর্চার সভানেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:৫৯
Share: Save:

শিশু-পাচার চক্রে অভিযুক্ত জুহি চৌধুরীর পাশেই দাঁড়ালেন বিজেপি-র মহিলা মোর্চার সভানেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়।

রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় বিজেপি-র অনেক কর্মীর মতো জুহির বিরুদ্ধেও পুলিশ মিথ্যা অভিযোগ এনেছে বলে সংগঠনের হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপে বুধবার দাবি করেছেন রূপা। জুহির সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে জুহির বৈঠকের খবর প্রকাশ্যে আসার পরে সোমবার দিল্লিতে একপ্রস্ত মুখ খুলেছিলেন এই বিজেপি সাংসদ। কেন জুহির পাশে সর্বতো ভাবে দল দাঁড়াচ্ছে না, সে প্রশ্ন তুলে ফের এ দিন রূপা হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপে লিখেছেন, ‘যে রাজ্যে হাজার হাজার বিজেপি কর্মী প্রতিদিন মিথ্যা পুলিশ কেস পাচ্ছে, সেই রাজ্যে কোনও কেস কাগজে বেরোলে তাকে অচ্ছুৎ করে ফেললে আমরা কী করে এক পরিবার হলাম?’

দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বা কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহেরাও এর আগে জুহিকে ফাঁসানোর তত্ত্ব দিয়েছেন। এর পরে রূপা এ ভাবে ‘বাচ্চা মেয়ে’ বলে জুহির প্রতি সহমর্মিতা দেখানোয় দলের মধ্যেই চর্চা হচ্ছে, নির্দোষ হলে কাউকে পালিয়ে বে়ড়াতে হবে কেন? যে কোনও রকমের তদন্তের মুখোমুখি হতে সে ক্ষেত্রে তৈরি থাকা উচিত! রূপা নিজেই জুহিকে নিয়ে দিল্লির কর্তাদের সঙ্গে দেখা করিয়েছিলেন কি না, তা নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে দলের একাংশে। অনেকেরই মত, রূপার মতো ‘অরাজনৈতিক’ ব্যক্তিত্বের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে বিজেপি-তে। তাঁরা নানা পদে থেকে দলের
অস্বস্তি বাড়াচ্ছেন।

রূপা অবশ্য প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘রাজ্য সরকার ৮-৯ মাস আগে ওই সংস্থা বন্ধ করে দিয়েছে বলা হচ্ছে। ওই সংস্থা তো সিআইডি-র নাকের ডগায় চলছিল! তখন সিআইডি কিছু বলেনি কেন? হঠাৎ এখন দু’জনকে ধরার পরে বিজেপির কথা আসছে কেন?’’

বস্তুত, জুহির বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর থেকেই ‘দ্বিধাবিভক্ত’ বিজেপি শিবির। জুহির পাশে দল কেন ঠিক ভাবে দাঁড়াচ্ছে না, সেই প্রশ্নের ইঙ্গিত দিয়ে রূপার অনুযোগ, ‘‘সবাই একা একাই যুদ্ধ করে যাব? কেউ কারও পাশে দাঁড়াব না? এ কেমন পরিবার?’’ রাজ্য বিজেপি-র নেতাদের উপরে চাপ বাড়াতে এ দিন রূপা লিখেছেন, ‘দিলীপদা ওঁর ঘরে ডেকে আমাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন জুহিকে সাধারণ সম্পাদক করতে।’’ রূপার কথায়, ‘‘প্রতাপ’দা (রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়) জুহির নাম লেখা নথিতে সই করেছিলেন। এ ভাবেই জুহিকে চিনেছি।’ কিন্তু রূপার আবার মন্তব্য, জুহিকে সংগঠনের পদাধিকারী করার দায় দলীয় নেতৃত্বের উপরে চাপানোর সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি তা করবেন না। তাঁর কথায়, ‘‘আমি যত দিন বিজেপি-র পদাধিকারী থাকব, তত দিন আমি আমার সব সদস্যের পাশে দাঁড়াব।’’

গত পাঁচ-ছ’মাস ধরে জুহির সঙ্গে তাঁর পরিচয় বলে রূপা জানিয়েছেন। কিন্তু প্রতাপবাবুর পাল্টা দাবি, ‘‘যে কোনও মোর্চার সভাপতি নিজেই তাঁর কমিটির প্যানেল তৈরি করেন। রাজ্য সভাপতি তা অনুমোদন করলে নিয়ম অনুযায়ী দলের সাধারণ সম্পাদক তাতে সই করেন। এ ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে।’’ দিলীপবাবুরও বক্তব্য, ‘‘কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার আগে প্রদেশ নেতৃত্ব তো মোর্চাকে কারও নাম সুপারিশ করতেই পারে। এর মধ্যে অসুবিধার কী আছে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE