Advertisement
E-Paper

রোজ ভ্যালি ভুল বুঝিয়ে টাকা তুলেছে, অভিযোগ

মানুষকে ভুল বুঝিয়ে কোটি কোটি টাকা তোলার অভিযোগে রোজ ভ্যালি-র চেয়ারম্যান গৌতম কুণ্ডুর বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করল ইডি। তদন্তকারীদের দাবি, বাজার থেকে বিভিন্ন ভাবে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা তুলেছে গৌতমের সংস্থা। গৌতম ছাড়াও রোজ ভ্যালির পাঁচ কর্তা— শিবময় দত্ত, বি কে মল্লিক, রামলাল গোস্বামী, অশোক সাহা এবং অরুণ মুখোপাধ্যায়ের নাম রয়েছে এই চার্জশিটে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:৩০

মানুষকে ভুল বুঝিয়ে কোটি কোটি টাকা তোলার অভিযোগে রোজ ভ্যালি-র চেয়ারম্যান গৌতম কুণ্ডুর বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করল ইডি। তদন্তকারীদের দাবি, বাজার থেকে বিভিন্ন ভাবে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা তুলেছে গৌতমের সংস্থা।

গৌতম ছাড়াও রোজ ভ্যালির পাঁচ কর্তা— শিবময় দত্ত, বি কে মল্লিক, রামলাল গোস্বামী, অশোক সাহা এবং অরুণ মুখোপাধ্যায়ের নাম রয়েছে এই চার্জশিটে। প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট-এর তিন নম্বর ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। এঁদের মধ্যে শিবময় সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর। বি কে মল্লিক রোজ ভ্যালির কোম্পানি সেক্রেটারি পদে রয়েছেন। রামলাল এবং অশোক যথাক্রমে আগরতলা ও কলকাতার ডিরেক্টর। অরুণ সংস্থার ডেভেলপমেন্ট অফিসার। এই ছ’জনের মধ্যে গৌতমই এখন জেলে রয়েছেন। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এ দিন চার্জশিট আদালতে জমা দেওয়ার পরে বাকিদেরও গ্রেফতার করার আবেদন করা হয়েছে।

এঁরা ছাড়াও, রোজ ভ্যালি রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড-এর নামও চার্জশিটে রাখা হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যেই এই মামলায় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দেওয়া হবে বলে ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে।

ইডি-র একটি সূত্রের খবর, চার্জশিট জমা দেওয়া নিয়ে এ দিন সকাল থেকে তদন্তকারীদের মধ্যে বিস্তর টানাপড়েন চলে। সূত্রের খবর, এ দিন সকাল পর্যন্ত চার্জশিট পুরোপুরি তৈরি ছিল না। সে কারণে এ দিন সকালে আদালতকেও এ ব্যাপারে কিছু জানানো সম্ভব হয়নি। বিকেলে চার্জশিট নিয়ে ইডি-র দুই অফিসার মনোজ কুমার এবং অক্ষয় সিংহ আদালতে আসেন। সঙ্গে দুই আইনজীবী ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিজিৎ ভদ্র। বিচারক গোপাল চন্দ্র কর্মকার তাঁদের কাছে জানতে চান, এত গুরুত্বপূর্ণ মামলার চার্জশিট এ ভাবে আচমকা কেন জমা দিতে চায় ইডি? পরে অবশ্য ইডি-র আবেদন মেনে তিনি চার্জশিট গ্রহণ করেন। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, মূল চার্জশিটটি ৪০ পাতার। সঙ্গে সাক্ষীদের বয়ান এবং অন্যান্য কাগজপত্র নিয়ে নথিটি মোট ১১৩৩ পাতার। আইনজীবীরা জানিয়েছেন, মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ৯ এপ্রিল।

২০১৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি সেবি (সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া) প্রথম রোজ ভ্যালির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায়। তার ভিত্তিতে তদন্তে নামে ইডি। সূত্রের খবর, সেবি-কে অন্ধকারে রেখে মোট ২৮২৫ জনের কাছ থেকে ১২ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা ডিবেঞ্চার মারফত বাজার থেকে তুলেছিলেন গৌতম। নিয়ম অনুযায়ী, ৪৯ জনের বেশি মানুষের কাছ থেকে ডিবেঞ্চার তুললে তা জানাতে হয় সেবি-কে। তদন্তকারীদের অভিযোগ, এই নিয়ম মানেনি রোজ ভ্যালি। ইডি জানিয়েছে, এই ১২ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকার বেনিয়ম নিয়েই এ দিন চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও এই সংস্থার নামে আরও চারটি মামলা করেছে ইডি। সেই সংক্রান্ত চার্জশিটও তাড়াতাড়ি জমা দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, যে ২৮২৫ জনের নাম ডিবেঞ্চারের মালিক হিসেবে ইডি-র কাছে জমা দেওয়া হয়েছিল, তাঁদের অনেককেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। দেখা গিয়েছে, অনেকেই এসে অবাক হয়ে জানিয়েছেন, তাঁরা কখনই রোজ ভ্যালির ডিবেঞ্চার কেনেননি। আবার তালিকায় নাম থাকা কয়েক জনকে পাঠানো নোটিস তাঁদের সেই ঠিকানায় না পেয়ে ফেরত এসেছে। অফিসারদের আশঙ্কা, ভুয়ো নামেও ডিবেঞ্চার ছেড়ে থাকতে পারে রোজ ভ্যালি।

তদন্তকারীদের বক্তব্য, এই ডিবেঞ্চারের বেশির ভাগই তোলা হয়েছে মন্দারমণি-তে রোজ ভ্যালির হোটেল দেখিয়ে। বিনিয়োগকারীদের বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত টাকা ফেরত না দিতে পারলে ওই সম্পত্তি বিক্রি করে তা ফেরৎ দেওয়া হবে। কার্যক্ষেত্রে তা হয়নি। অফিসারদের মতে, এ ব্যাপারে আরও তদন্তের প্রয়োজন। সেই তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার জন্যও আদালতের অনুমতি চেয়েছে ইডি।

এ দিন খড়্গপুরের ইন্দায় রোজ ভ্যালির অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন সংস্থার এজেন্টরা। সংস্থার ‘ফিল্ড কর্মী ইউনিয়ন’-এর খড়্গপুর শাখার নেতৃত্বে ইডি-র বাজেয়াপ্ত করা অ্যাকাউন্ট খোলার দাবিতেই বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে।

ED police Rose valley money real estate Kharagpur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy