জালিয়ানওয়ালাবাগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কোনও মূর্তি নেই । তৃণমূল সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্নের জবাবে বৃহস্পতিবার এ কথা জানাল কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত রাজ্যসভায় সাংসদ ঋতব্রতের প্রশ্নের উত্তরে জানান, পঞ্জাবের অমৃতসরের ওই গণহত্যাস্থলে কেবল শহিদ স্মৃতিসৌধ এবং কুয়ো রয়েছে।
১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিল ব্রিটিশ সেনার মেজর জেনারেল রেগিনাল্ড ডায়ারের নির্দেশে ওই উদ্যানে জমায়েত নিরস্ত্র জনতার উপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করা হয়েছিল। সে সময়ে বাঁচার জন্য বহু মানুষ ওই কুয়োয় ঝাঁপ দিয়েছিলেন। মোট নিহতের সংখ্যা ছিল প্রায় দু’হাজার! ব্রিটিশ সরকারের দমনমূলক রাওলাট আইনের প্রতিবাদে জালিয়ানওয়ালাবাগে জমায়েত হয়েছিল জনতা। সেই সমাবেশে গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নাইট উপাধি ত্যাগ করেছিলেন। তৃণমূল সাংসদ ঋতব্রতের দাবি, অমৃতসরের বধ্যভূমিতে তাই রবীন্দ্রনাথের প্রতিকৃতি রাখা উচিত।
ঋতব্রত বলেন, ‘‘আমরা সংস্কৃতি মন্ত্রকের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, জালিয়ানওয়ালাবাগে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কোনও মূর্তি আছে কি না এবং না-থাকলে মূর্তি বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে কি না। ওঁরা জানিয়ে দিয়েছেন, ‘নেই’।’’ তৃণমূল সাংসদদের দাবি, জালিয়ানওয়ালাবাগ গণহত্যার পরে ‘সর্বাগ্রে, সবচেয়ে তীব্র এবং তীক্ষ্ণ প্রতিবাদ’ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। ১৯১৯-এর ১০ মার্চ রাওলাট আইন কার্যকরের পরেই আন্দোলনে অশান্ত হয়ে উঠেছিল পঞ্জাব। তা দমন করতে মার্শাল ল’ জারি করেছিল ব্রিটিশ সরকার। তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ।
আরও পড়ুন:
এর পরে ঘটেছিল জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড। পত্রপাঠ নাইট উপাধি ত্যাগের কথা ঘোষণা করেছিলেন তিনি। খোলা চিঠিতে তিনি লিখেছিলেন, ‘‘পাশবশক্তি যে চেহারাতেই নিজেকে প্রকাশ করুক না কেন তার ভেতরে কোনও বিচারবোধ নেই, যুক্তি নেই।’’ ঋতপ্রভ বলেন, ‘‘যে চিঠিটি লিখে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নাইটহুড ত্যাগ করেছিলেন, জালিয়ানওয়ালাবাগের শহিদ স্মৃতিসৌধে সসম্মানে সেটি প্রদর্শিত করা হোক।’’ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সরকার পাঠ্যক্রম থেকে রবীন্দ্রনাথকে বাদ দিয়ে রামদেবকে (যোগগুরু) অন্তর্ভুক্ত করেছে বলেও অভিযোগ করেন তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ।