সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আল কায়দার ভারতীয় উপমহাদেশের শাখা ‘আল কায়দা ইন ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট’-এর হয়ে কাজ করার অভিযোগে চার ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল গুজরাত পুলিশের সন্ত্রাসদমন শাখা (এটিএস)। নিষিদ্ধ সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীটির স্থানীয় মডিউলের ওই সদস্যেরা নাশকতামূলক তৎপরতা চালাচ্ছিলেন বলে গুজরাত পুলিশ জানিয়েছে।
এটিএস জানিয়েছে, ধৃত চার জনই ভারতীয়। এঁদের নাম মহম্মদ ফারুক, মহম্মদ ফারদিন, সইফুল্লা কুরেশি এবং জিশান আলি। প্রত্যেকের বয়স ২০ থেকে ২৫-এর মধ্যে। এঁদের এক জনকে দিল্লি এবং আর এক জনকে উত্তরপ্রদেশের নয়ডা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য দু’জনকে গুজরাতেরই অহমদাবাদ এবং মোডাসা থেকে ধরা হয়েছে। গত বছর উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান এবং ঝাড়খণ্ড থেকে ১৪ জন আল কায়দা জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাঁদের জেরা করেই সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে এই সাফল্য মিলেছে। এটিএসের দাবি, ধৃত জঙ্গিরা সমাজমাধ্যমের সাহায্যে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখত।
২০২৩ সালের মার্চ মাসে আল কায়দা জঙ্গি সন্দেহে গুজরাতের অহমদাবাদ থেকে চার বাংলাদেশি-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সে সময় ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছিল, বেশ কয়েকটি রাজ্যে সন্ত্রাসমূলক কাজকর্মে নানা ভাবে ইন্ধন জোগাচ্ছেন বাংলাদেশের কয়েক জন। তাঁদের সঙ্গী হিসাবে কাজ করছেন ভারতেরও কয়েক জন ব্যক্তি। সেই তথ্যের ভিত্তিতে জম্মু-কাশ্মীর, কর্নাটক, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা এবং অসমের নানা জায়গায় অভিযান চালিয়েছিল এনআইএ (জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা)। পশ্চিমবঙ্গে তারা উত্তরবঙ্গ ছাড়াও হানা দেয় কলকাতার বেনিয়াপুকুরে।
কয়েক বছর আগে রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি রিপোর্টে জানানো হয়েছিল, ‘আল কায়দা ইন ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট’ ভারতে সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা চালাচ্ছে। তালিবানের ক্ষমতা দখলের পরে আফগানিস্তানের লাঘমান, পাকতিকা, কন্দহর, গজনী ও জ়াবুল প্রদেশে হাজারখানেক আল কায়দা জঙ্গি নতুন করে ঘাঁটি বানিয়েছেন বলে ওই রিপোর্টে বলা হয়েছিল। নিহত ওসামা বিন লাদেন, আয়মান আল-জাওয়াহিরির হাতে গড়া সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীটি গত দু’দশক ধরেই ভারতে তৎপরতা বাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে তৎকালীন আল কায়দা প্রধান জাওয়াহিরি এক ভিডিয়োবার্তায় ভারতীয় উপমহাদেশ জুড়ে ‘জিহাদের পতাকা’ তুলে ধরতে নতুন শাখা গড়ার ঘোষণা করেছিলেন।