Advertisement
E-Paper

ঢ্যাঁড়া পিটিয়ে বিজেপিকে কার্যালয় ছাড়ার নির্দেশ! পেয়াদার ঘোষণায় কৃষ্ণনগরে রাজনৈতিক শোরগোল

কৃষ্ণনগর শহরের প্রাণকেন্দ্র রজনী মুখার্জি লেনের বাড়িটিতে দীর্ঘ ৪১ বছর ধরে রয়েছে বিজেপির জেলা কার্যালয়। বাড়িমালিক গৌতম সরকার কর্মসূত্রে থাকতেন উত্তরবঙ্গে। তিনি ওই বাড়িটি মৌখিক চুক্তিতে বিজেপিকে ভাড়া দিয়েছিলেন।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২৫ ১৯:৫৭
BJP Party Office

বিজেপি কার্যালয়ের সামনে ঢ্যাঁড়া পিটিয়ে উচ্ছেদের ঘোষণা পেয়াদার। পাশে বিজেপির কর্মীরা। —নিজস্ব চিত্র।

কৃষ্ণনগরের রজনী মুখার্জি লেনের উপর শ্যামপ্রসাদ-দীনদয়াল ভবন। নামফলকে লেখা, উদ্বোধকের নাম রাহুল সিন্‌হা। বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। মঙ্গলবার ভরদুপুরে বিজেপির ওই জেলা কার্যালয়ের সামনে হাজির পেয়াদা। ঢ্যাঁড়া পিটিয়ে তিনি জানিয়ে দিলেন ওই ভবন ছেড়ে দিতে হবে। কারণ, বেআইনি ভাবে বাড়িটি দখল করে রাখা হয়েছে। ‘রাজকীয় কায়দায়’ উচ্ছেদের ঘোষণায় শোরগোল নদিয়ার রাজনৈতিক মহলে। এই ঘটনার নেপথ্যে তৃণমূলের অভিসন্ধি দেখছে বিজেপি। অন্য দিকে, অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের কটাক্ষ, ‘‘লজ্জার ঘটনা ঘটিয়েছে বিজেপি।’’

স্থানীয় সূত্রে খবর, কৃষ্ণনগর শহরের প্রাণকেন্দ্র রজনী মুখার্জি লেনের বাড়িটিতে দীর্ঘ ৪১ বছর ধরে রয়েছে বিজেপির জেলা কার্যালয়। বাড়ির মালিক গৌতম সরকার কর্মসূত্রে থাকতেন উত্তরবঙ্গে। তিনি ওই বাড়িটি মৌখিক চুক্তিতে বিজেপিকে ভাড়া দিয়েছিলেন বলে পরিবারের দাবি। ২০১০ সালে ভাড়ার চুক্তির মেয়াদ শেষ হয় বলে দাবি মালিকপক্ষের। কিন্তু তার পর একাধিক বার বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার কথা বললেও তাতে নাকি কর্ণপাত করেননি স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। ২০১৪ সালে বাড়ির মালিক আদালতের দ্বারস্থ হন। পাঁচ বছর মামলা চলার পর ২০১৯ সালে তাঁর পক্ষে ডিক্রি পান গৌতম। ইতিমধ্যে মৃত্যু হয়েছে গৌতমের। ঘটনাক্রমে ২০২২ সালে ‘দখল করা বাড়ি’ উচ্ছেদের মামলা করেন গৌতমের স্ত্রী সুজাতা সরকার। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার পর চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল মামলাকারীর পক্ষে রায় দেন কৃষ্ণনগর মুনসেফ আদালতের বিচারক। আদালতের নির্দেশে উচ্ছেদের ঘোষণা করতে মঙ্গলবার দুপুরে ঢ্যাঁড়া পেটান পেয়াদা। শব্দ শুনে বিজেপির কার্যালয়ের সামনে জমে যায় উৎসুক জনতার ভিড়। কার্যালয় থেকে বেরিয়ে আসেন নেতা-কর্মীরা। ওই সময়ে বিজেপির জেলা সভাপতিও কার্যালয়ে ছিলেন। শুরু হয় কোতোয়ালি থানার পুলিশের সঙ্গে বিজেপি নেতা-কর্মীদের বচসা। উত্তেজনার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

শেষ পর্যন্ত আদালতের নির্দেশ শুনিয়ে বিজেপির কার্যালয় ছাড়ে পুলিশ, পেয়াদা এবং মালিকপক্ষ। যদিও গোটা ঘটনার নেপথ্যে শাসকদলের হাত দেখছে পদ্মশিবির। বিজেপির নদিয়া উত্তর জেলার সভাপতি অর্জুন ঘোষ বলেন, ‘‘আদালতের রায়কে সম্মান জানিয়ে পরবর্তী আইনি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা পদক্ষেপ করব। তবে ঢোল পিটিয়ে এ ভাবে পার্টি অফিস উচ্ছেদের চেষ্টা নিম্ন রুচির পরিচয়।’’ মালিকপক্ষ জানাচ্ছেন, পারিবারিক সম্পত্তি ভাগাভাগির পর বাড়ির একতলা তারা পায়। অন্য দিকে, বাড়িভাড়ার চুক্তি শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও বিজেপি ভবন পুননির্মাণ শুরু করেছিল। তখন বাড়ি পুনরুদ্ধারে উদ্যোগী হয়েছে তারা। ওই বাড়ির এক সদস্যের কথায়, ‘‘২০২২ সালেও একবার উচ্ছেদের চেষ্টা হয়েছিল। হয়নি। এ বার আদালতের রায় অনুযায়ী, প্রশাসনিক ভাবে পদক্ষেপ করা হয়।’’ তাঁর আরও দাবি, বিজেপির তরফে কেউ কোনও দিন ভাড়াও দেননি। আর লিখিত চুক্তি না হওয়ায় অসুবিধায় পড়েছিল পরিবার। এই ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূলের চেয়ারম্যান রুকবানুর রহমান বলেন, ‘‘ঢ্যাঁড়া পিটিয়ে পেয়াদা দিয়ে দখল করা বাড়ি উচ্ছেদ করা হচ্ছে এবং যে বাড়িটি নাকি দখল করে ছিল বিজেপি! এটা অত্যন্ত লজ্জার। নিজে থেকেই ওদের সরে যাওয়া উচিত ছিল।’’

BJP Party Office Krishnanagar TMC BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy