Advertisement
E-Paper

বিস্ফোরণ-কাণ্ডে বিরোধী তোপের মুখে শাসক দলই

বর্ধমানে বিস্ফোরণ-কাণ্ডে শাসক দলের দিকেই তোপ দাগল বিরোধীরা। বিজেপির অভিযোগ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজত্বে পশ্চিমবঙ্গ এখন জেহাদিদের নিরাপদ আশ্রয়ে পরিণত হয়েছে! ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের যোগসাজশ নিয়ে আঙুল তুলে বিরোধী বামেদেরও অভিযোগ, নরম সাম্প্রদায়িকতার মোড়কে রাজ্যের শাসক দল যে রাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছে, তার জেরেই বিপজ্জনক পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে রাজ্য তথা দেশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:১৭

বর্ধমানে বিস্ফোরণ-কাণ্ডে শাসক দলের দিকেই তোপ দাগল বিরোধীরা। বিজেপির অভিযোগ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজত্বে পশ্চিমবঙ্গ এখন জেহাদিদের নিরাপদ আশ্রয়ে পরিণত হয়েছে! ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের যোগসাজশ নিয়ে আঙুল তুলে বিরোধী বামেদেরও অভিযোগ, নরম সাম্প্রদায়িকতার মোড়কে রাজ্যের শাসক দল যে রাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছে, তার জেরেই বিপজ্জনক পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে রাজ্য তথা দেশ। তৃণমূল অবশ্য পাল্টা দাবি করেছে, সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি করার জন্যই বিজেপি-সিপিএম এমন অভিযোগ করছে।

বস্তুত বিজেপি-সিপিএম, দু’দলই বর্ধমানের ঘটনায় রবিবার শাসক দল তথা রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছে। তাদের প্রশ্ন, এমন একটি ঘটনার পরেও স্থানীয় মানুষ ও সংবাদমাধ্যমকে ঘটনাস্থলে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছিল কেন? কেন জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনআইএ)-র গোয়েন্দারাও প্রাথমিক ভাবে বাধার মুখে পড়েছিলেন? যে বাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটেছে, তার নীচের তলা থেকে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ের সাইনবোর্ড কেন তড়িঘড়ি সরিয়ে ফেলা হল? এই পরিপ্রেক্ষিতেই বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক তথা দলের তরফে পশ্চিমবঙ্গের পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিংহের দাবি, মমতা- প্রশাসন তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করার চেষ্টা করেছে। সিদ্ধার্থনাথের কথায়, “এনআইএ-কে খবর দিতে কেন এক দিন দেরি হল? ওই বাড়ির নীচের তলায় তৃণমূলের কার্যালয় কি ছিল না? আমরা যদি বলি, মমতার শাসনে পশ্চিমবঙ্গ দেশ-বিরোধী এবং জেহাদি কর্মকাণ্ডের নিরাপদ আশ্রয়ে পরিণত হয়েছে?” বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামীরও অভিযোগ, রাষ্ট্রবিরোধী শক্তির সঙ্গে জোট বেঁধেছে তৃণমূল।

বর্ধমানের খাগড়াগড়ের ঘটনাকে রাজ্য ও দেশের পক্ষে বিপদ-সঙ্কেত বলে বর্ণনা করে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসুও এ দিন অভিযোগ করেছেন, “কোনও অজ্ঞাত কারণে তড়িঘড়ি ওই বাড়ি থেকে তৃণমূলের সাইনবোর্ড খুলে ফেলা হয়েছে। বাড়িওয়ালা, ভাড়াটে সবাই তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। ঝালে-ঝোলে-অম্বলে সবেতেই তৃণমূল থাকে! কোনও ভাল কিছুর সঙ্গে তো তৃণমূলের যোগাযোগের খবর পাওয়া যায় না!” তৃণমূলের রাজ্যসভার এক সাংসদের জামাত-যোগ থাকার অভিযোগ প্রসঙ্গে বিমানবাবু বলেন, “এ জিনিস আগে তো এখানে শোনা যায়নি! নরম সাম্প্রদায়িকতার মোড়কে তৃণমূলের মতাদর্শ চলছে। তারা ভাবাবেগে সুড়সুড়ি দিয়ে মানুষের সমর্থন আদায় করেছে। নরম সাম্প্রদায়িকতার এই পথে শাসক দল যত যাবে, বাংলায় তত বিপদ হবে!” উৎসবের মরসুমে আরও বেশি করে সতর্ক থাকার আহ্বানও জানান তিনি।

বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সুরেই দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহও এ দিন বলেছেন, “পুলিশ যতই তৃণমূলের পতাকা সরিয়ে দলটাকে বাঁচানোর চেষ্টা করুক, লাভ হবে না। তৃণমূল যে সমাজবিরোধীদের দল, সেটা জানা ছিল। তার পর জানা গেল, তাদের জামাতে ইসলামির সঙ্গে যোগের কথা। এখন জানা যাচ্ছে, আইএসআইয়ের সঙ্গেও তাদের যোগ। এরা শুধু বাংলা নয়, রাষ্ট্রের পক্ষে বিপজ্জনক।”

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ের পাল্টা অভিযোগ, বিজেপি নেতাদের ফোন পেয়েই বিমানবাবু একই অভিযোগ তুলেছেন! বিরোধীদের তোলা প্রশ্নের সরাসরি জবাব না দিয়ে মুকুলবাবুর বক্তব্য, “উৎসবের সময়ে মুখ্যমন্ত্রী রাত জেগে পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছেন। আর বিজেপি-সিপিএম রাজ্যে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি করতে চাইছে। বিজেপি-সিপিএমের কাছ থেকে আমাদের দেশপ্রেম শিখতে হবে না!” মুকুলবাবুর মতে, ঘটনার তদন্ত হলে সব তথ্যই জানা যাবে। তবে এনআইএ-র সঙ্গে অসহযোগিতার অভিযোগকে প্রশাসনের ব্যাপার বলে এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। ওই বাড়িতে তৃণমূলের কার্যালয় প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, “কে দেখেছে? আলিমুদ্দিনে কাকে ভাড়া দেওয়া হচ্ছে, বিমানবাবু কি জানেন?” সিপিএমের রাজ্য সদর দফতরে অবশ্য কেউ ভাড়া থাকে না বলেই খবর!

কিন্তু মুকুলবাবু তাঁদের দিকেই উত্তেজনা সৃষ্টির অভিযোগ এনেছেন শুনে বিমানবাবু আবার পরে মন্তব্য করেছেন, “ওঁর রাজনৈতিক কেরিয়ার শুরুর অনেক আগে থেকেই বামপন্থীরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সক্রিয়। তার বহু নজির আছে। মুকুলবাবু অবশ্য সে সব জানবেন বলে আশা করি না। উনি টাকা গুনতেই ভাল জানেন!”

burdwan blast nia khagragadh al jihad tmc connection death state news online state news opposition
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy