ছবি: সংগৃহীত।
পঞ্চায়েতের ক্ষমতা পেতে অনাস্থা প্রস্তাবের বাড়বাড়ন্তে তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ টানাপড়েনের ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। দলীয় নির্দেশ উপেক্ষা করে অনাস্থা নিয়ে তৎপর হয়েছে ক্ষমতার বাইরে থাকা দলেরই একাংশ। বিষয়টি এমন এক স্তরে পৌঁছেছে যে পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ও চাইছেন দলের তরফে আলোচনার মাধ্যমে এই প্রবণতায় রাশ টানা হোক।
ঘনঘন পদাধিকারী বদল ঠেকাতে দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসে পঞ্চায়েতে অনাস্থা প্রস্তাবের জন্য নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিয়েছিল রাজ্য। পুরনো আইন বদল করে বলা হয়েছিল, আড়াই বছরের আগে পঞ্চায়েতের কোনও স্তরেই অনাস্থা প্রস্তাব আনা যাবে না। সেই আইনে এখন একাধিক জেলায় অনাস্থা প্রস্তাবের এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আর ক্ষমতার জন্য এই টানাপড়েনের ছায়া স্পষ্ট হচ্ছে শাসক দলের নীচের তলায়। ২০১৮-র নির্বাচনের পরে গঠিত পঞ্চায়েতের তিন স্তরেই সেই সময়সীমা পেরিয়েছে গত বছর। বিধানসভা ভোটের আগে দলের নির্দেশে এ সব নিয়ে নাড়াচাড়া বন্ধ থাকলেও ভোট মিটতেই অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে তৎপরতা শুরু হয়েছে। বেশির ভাগই শাসক তৃণমূলের পঞ্চায়েত তৃণমূলের সদস্যদের আনা এই প্রস্তাব ঘিরে অশান্তিও হয়েছে। তৃণমূলের দু’পক্ষের মারামারিকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়েছে একাধিক জেলা।
এ ক্ষেত্রে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বা ক্ষমতার পাশাপাশি নির্বাচনে অন্তর্ঘাতের অভিযোগেও পঞ্চায়েতের পদাধিকারীদের এক অংশের বিরুদ্ধে অনাস্থা নিয়ে সক্রিয় অন্য অংশ। কমবেশি সব জেলাতেই এই প্রবণতা রয়েছে। তবে দুই মেদিনীপুর, নদিয়া, ২৪ পরগনাতেও একাধিক জায়গায় এইরকম প্রস্তাব জমা রয়েছে। মালদহে অনাস্থা প্রস্তাব কার্যকর করতে গিয়ে দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এসেছে। নদিয়ায় অনাস্থা প্রস্তাবের সংখ্যা এতই যে জেলা প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা তা সামলাতে ইতিমধ্যেই শাসক দলের বিধায়কদের সঙ্গে কথা বলেছেন। দু’একটি জায়গায় পুলিশকেও হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, কিছু দিন আগে এ ব্যাপারে দলের তরফে জানানো হয়েছিল, অনাস্থা প্রস্তাব আনতে গেলে রাজ্য নেতৃত্বের অনুমোদন নিতে হবে। কিন্তু বহু জায়গায় সেই অনুমোদন ছাড়াই অনাস্থা প্রস্তাবের উদ্যোগ চলছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা দলের সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘অনাস্থা প্রস্তাব রয়েছে। বেশির ভাগ অঞ্চলে করোনা পরিস্থিতিতে তা স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে।’’ সমস্যা নজরে এলেও এ ব্যাপারে সরকারি ভাবে কিছু করার নেই বলে জানান সুব্রত । তিনি বলেন, ‘‘আইনে অনাস্থা প্রস্তাবের সুযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে দু’বছরের মাথায় অনাস্থা আসতে পারে। দলীয় নেতৃত্বকে বলছি, অন্তত জেলা স্তরে আলাপ-আলোচনা করে অনাস্থা সংক্রান্ত সমস্যা মেটানো দরকার।’’ দুই মেদিনীপুরে কিছু জায়গায় রাজ্য নেতৃত্ব হস্তক্ষেপ করেছেন। তার পরেও স্থানীয় স্তরে তা ঘিরেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy