Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Russia Ukraine War

Russia Ukraine Conflict: ছেলে যেন ইউক্রেন থেকে দ্রুত ফিরে আসে, আর্জি ইসলামপুরের ডাক্তারি পড়ুয়ার মায়ের

মাঝেমধ্যে পাভেলের সঙ্গে ফোনে কথাবার্তাও হচ্ছে। তবে তা-ও দুশ্চিন্তা কাটছে না পাভেলের মায়ের।

পাভেল দাস।

পাভেল দাস। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ইসলামপুর শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৮:২৩
Share: Save:

বাড়ির একমাত্র ছেলে ইউক্রেনে আটকে পড়েছে। ছেলে কবে বাড়িতে ফিরবে? আদৌ কি সুস্থ ভাবে দেশে ফিরতে পারবে? উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে ইসলামপুরের বাসিন্দা পাভেল দাসের মায়ের। টেলিভিশনের পর্দায় চোখ রেখে বসে রয়েছেন অনুপমা দাস। মাঝেমধ্যে পাভেলের সঙ্গে ফোনে কথাবার্তাও হচ্ছে। তবে তা-ও দুশ্চিন্তা কাটছে না তাঁর। মায়ের আর্জি, ছেলেকে দ্রুত দেশে ফেরানোর বন্দোবস্ত করুক ভারত সরকার।

বছর তিনেক আগে এমবিবিএস পড়তে ইউক্রেনে গিয়েছিলেন উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর শহরের বাসিন্দা পাভেল। মার্চের গোড়ায় বাড়িতে ফেরার কথা ছিল তাঁর। তবে বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়া অভিযান শুরু করায় পরিস্থিতি পাল্টে গিয়েছে। পাভেল আদৌ বাড়িতে ফিরতে পারবে কি না, তা জানেন না অনুপমা। স্বামীর মৃত্যুর পর একমাত্র ছেলেকে নিয়ে সংসার টানছেন এই আইসিডিএস কর্মী। পাভেলের আটকে পড়ার খবর শুনে রামকৃষ্ণপল্লি এলাকায় তাঁদের বাড়িতে চলে এসেছেন জেঠু রথীন দাস। দুশ্চিন্তা তাঁরও কম নয়। তিনি বলেন, ‘‘ইউক্রেনে এমবিবিএস পড়াশোনা করছে আমার ভাইপো পাভেল দাস। মেডিক্যালের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। প্রতি দিনই অন্তত এক বার করে পাভেলের সঙ্গে কথাবার্তা হয়। তবে ইউক্রেনে যা অবস্থা হয়েছে তাতে ওর জন্য যথেষ্ট উদ্বেগের মধ্যে রয়েছি। আমরা চাই যাতে ভারত সরকার ইউক্রেনের দূতাবাসের মাধ্যমে ওখানে আটকে পড়া সমস্ত নাগরিকদের ফিরিয়ে আনুক।’’

ছেলের ঘরে ফেরার অপেক্ষায় অনুপমা দাস।

ছেলের ঘরে ফেরার অপেক্ষায় অনুপমা দাস। —নিজস্ব চিত্র।

রথীনের মতোই ছেলের জন্য চিন্তামুক্ত হতে পারছেন না অনুপমা। ইউক্রেনের পরিস্থিতি নিয়ে চোখ রয়েছে টিভি-র পর্দায়। তবে তারই মাঝে ছেলের কথায় চোখে জল এসে যাচ্ছে। ছেলেকে হোয়াট্‌সঅ্যাপে কল করে জানতে পেরেছেন, ইউক্রেনের পরিস্থিতি ক্রমশ বিগড়াচ্ছে। সুদূর ইউক্রেন থেকেই হোয়াট্‌সঅ্যাপের মাধ্যমে পাভেল বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার রাতে (ইউক্রেনীয় সময় অনুসারে) রাশিয়ার আক্রমণের পর ইউক্রেনে এখন জরুরি অবস্থা চলছে। পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। আমাদের থেকেও বাড়ির লোকেরা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। শোনা যাচ্ছে যে কিভ শহরে তিন দিন পর্যন্ত উড়ান বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। আমরা সকলেই এখান থেকে বেরিয়ে যেতে চাই।’’ কবে দেশে ফিরতে পারবেন, তা নিয়ে নিশ্চিত নন পাভেল। তাঁর কথায়, ‘‘বাড়িতে ফেরার জন্য ৭ মার্চ টিকিট কাটা ছিল আমার। তবে তা হবে কি না, বোঝা যাচ্ছে না। বেশ ভয়ও করছে। কারণ ইউক্রেন আর সুরক্ষিত নয়। ভারত সরকারের কাছে আবেদন যাতে এখান থেকে উদ্ধার করে আমাদের অন্তত ইউক্রেনের সীমান্ত পার করিয়ে দেওয়া হয়।’’

ছেলে ভালয় ভালয় ফিরে আসুক, চাইছেন পাভেলের মা-ও। কান্নাভেজা কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘‘ছেলের সঙ্গে কথা হয়েছে। তবে ওই দেশের এই পরিস্থিতিতে টেনশন হচ্ছে। ওকে যাতে ফিরিয়ে আনা হয়, সেটাই চাইছি। আমার ছেলে যেন ভাল ভাবে বাড়ি ফিরে আসে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE