গত মার্চ মাসে নবান্ন থেকে নির্দেশিকা জারি করে রাজ্য সরকার চুক্তিভিত্তিক চালকদের নতুন বেতনক্রম ঘোষণা করেছিল। ওই সুবিধার আওতায় এসেছিলেন রাজ্যের সব ক’টি সরকারি পরিবহণ নিগমে চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত চালকেরা। সরকারি নির্দেশিকায় চাকরির শুরুতেই ১৬ হাজার টাকা দেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। চাকরির মেয়াদ পাঁচ বছর পেরোলে বেতন মিলবে ২০ হাজার টাকা। এর পরে ১০, ১৫ এবং ২০ বছরের ক্ষেত্রে ওই বেতন যথাক্রমে ২৫, ৩১ এবং ৩৮ হাজার টাকা করার কথা জানানো হয়েছিল।
এর পাশাপাশি, চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত কন্ডাক্টর এবং রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা মেকানিকদের জন্যও দ্রুত বর্ধিত বেতন ঘোষণা হওয়ার ইঙ্গিত মিলেছিল।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পরিবহণ নিগমে এজেন্সির মাধ্যমে নিযুক্ত চুক্তিভিত্তিক চালকদের চলতি মাসে ১৬ হাজার টাকা বেতনক্রমের আওতায় আনা হয়েছে বলে খবর। তবে, সংস্থায় সরাসরি চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত চালকেরা এখনও বর্ধিত বেতন হাতে পাননি। আগামী মাসে তাঁরা বর্ধিত বেতন পেতে পারেন বলে খবর।
তবে কন্ডাক্টর এবং মেকানিকদের বেতন বৃদ্ধির ঘোষণা না হওয়ায় গত সোমবার থেকে উত্তরবঙ্গ পরিবহণ নিগমে যৌথ মঞ্চ গড়ে আন্দোলনে নেমেছিলেন তাঁরা। কলকাতার উল্টোডাঙা ডিপোয় গত সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত তিন দিনের অবস্থান-বিক্ষোভ করেছেন কর্মীরা। উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম ছাড়াও ট্রাম কোম্পানি, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পরিবহণ নিগম-সহ সব ক’টি নিগমে এ নিয়ে কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন বাস ডিপোর দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, সুষ্ঠু পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে চালকের মতোই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে কন্ডাক্টরদের। ফলে, একই কাজে বেরিয়ে বেতনক্রমের বিপুল ফারাক থাকলে কাজের প্রতি নিষ্ঠা এবং আগ্রহে টান পড়ার আশঙ্কা থাকে। সেই জায়গা থেকেই কন্ডাক্টর এবং মেকানিকদের সমস্যা দ্রুত বিবেচনায় আনার দাবি উঠেছে।
এর আগে নবান্ন থেকে সারা রাজ্যের সমস্ত সরকারি ক্ষেত্রের চালকদের বেতনক্রম পুনর্বিন্যাস নিয়ে নির্দেশিকা জারি হয়েছিল। পরিবহণ নিগমগুলি বেশ কিছু ক্ষেত্রে উদ্যোগী হয়ে বেতন পুনর্বিন্যাসের বিষয়টি জানিয়ে নবান্নে ফাইল পাঠিয়েছে। কিন্তু, অর্থ দফতর বিষয়টি এখনও বিবেচনায় আনেনি বলে খবর।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু পরিষেবার স্বার্থে চুক্তিভিত্তিক বাসকর্মীদের বেতনে অবিলম্বে সামঞ্জস্য আনা উচিত বলে জানাচ্ছেন বিভিন্ন ডিপোয় পরিচালন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকেরা। বাসকর্মীদের মধ্যেও বিষয়টি নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। সমস্যা দ্রুত সামাল না দিলে পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন আধিকারিকেরা।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)