মৃত: সমরেশ হাজরা। —নিজস্ব চিত্র।
তরুণ ডব্লুবিসিএস অফিসারের অপমৃত্যুতে স্ত্রী, শ্বশুর ও শ্বাশুড়ির নামে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা রুজু করল পুলিশ। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ছাদ থেকে সমরেশ হাজরা নামে ওই যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের পরেই মৃতের দাদা-বাবা অভিযোগ করেছিলেন, শ্বশুরবাড়ির লোকেরা সমরেশকে নানা ভাবে মানসিক চাপ দিচ্ছিলেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, সমরেশের মৃতদেহের পাশ থেকে একটি সুইসাইড নোট মেলে। তাতেও স্ত্রী পৌলমী রায়চৌধুরী, শ্বশুর রূপক রায়চৌধুরী, শ্বাশুড়ি মিঠু রায়চৌধুরীর নামের উল্লেখ ছিল। তার ভিত্তিতেই ওই তিন জনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা রুজু করা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
মঙ্গলবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ছাদ থেকে বছর বত্রিশের সমরেশের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। সমরেশ ওই হাসপাতালে চিকিত্সাধীন ছিলেন। সোমবার হঠাৎ সিসিইউ থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। পরদিন হাসপাতালের ছাদে গলায় গামছার ফাঁস লাগানো অবস্থায় ওই যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। প্রচুর পরিমাণে ঘুমের অসুধ খেয়ে অসুস্থ হয়েই মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি হয়েছিলেন সমরেশ। তারপর তাঁর ঝুলন্ত দেহ মেলায় পুলিশের অনুমান ছিল, তিনি আত্মহত্যাই করেছেন। পরে বাড়ির লোকের অভিযোগ এবং সুইসাউড নোট খতিয়ে দেখে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা রুজু করা হয়।
ডব্লুবিসিএস অফিসার সমরেশের বাড়ি হুগলির চুঁচুড়ার রবীন্দ্রনগরে। শালবনিতে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের রেভিনিউ অফিসারের প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন তিনি। ৭ জানুয়ারি থেকে শালবনিতেই ছিলেন। তারপর অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খেয়ে গত ১৮ জানুয়ারি তিনি মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন।
দরিদ্র পরিবারের মেধাবী সন্তান সমরেশ ডব্লুবিসিএস অফিসার হওয়ার পরে পরিবার-পরিজনের স্বপ্নপূরণ হয়েছিল। তবে তাঁর দাম্পত্য জীবন সুখের ছিল না বলে জানা গিয়েছে। পৌলমীর সঙ্গে তাঁর প্রেমের বিয়ে। অথচ বিয়ের কিছু দিনের মধ্যেই স্ত্রী বাপের বাড়িতে চলে যান। এ ক্ষেত্রে পৌলমী শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন। মঙ্গলবার মাঝরাতে সমরেশের মৃতদেহ এসে পৌঁছয় চুঁচুড়ায় রবীন্দ্রনগরের বাড়িতে। সে রাতেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় তাঁর।
সমরেশের দাদা অমলেশ হাজরা বলেন, ‘‘ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর আমার ভাইয়ের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটন সম্ভব। তদন্তের স্বার্থে আমরা পুলিশকে সব রকম সাহায্য করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy