প্রতীকী ছবি।
বছর ষোলোর মেয়েটির গলায় দড়ি দেওয়া দেহ ঝুলছিল নিজের বাড়িতে। পাড়া-পড়শিরা উদ্ধার করেন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যায় কিশোরী।
সপ্তাহ তিনেক আগের ওই ঘটনায় ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টের ভিত্তিতে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমার মাটিয়া থানার পুলিশ জানায়, গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে মেয়েটি। কিন্তু এই রিপোর্টে সন্তুষ্ট নয় পরিবার। দ্বিতীয় বার ময়নাতদন্ত চেয়ে দিন তিনেক আগে বসিরহাট আদালতের দ্বারস্থ হন তাঁরা। বাবা-মায়ের দাবি, ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে মেয়েকে।
বসিরহাট আদালতের বিচারক মঙ্গলবার বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপারকে নির্দেশ পাঠান। ৭ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে মাটিয়া থানায়। অভিযুক্তেরা পলাতক। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে বুধবার মেয়েটির দেহ কবর থেকে তুলে দ্বিতীয় বার ময়নাতদন্তের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। তবে এ দিন ময়নাতদন্ত হয়নি। স্থানীয় থানার দাবি, মহালয়ার সরকারি ছুটি থাকায় কাজ হয়নি। দু’এক দিনের মধ্যে দেহ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্তে পাঠানো হবে।
মেয়ের বাবা বলেন, ‘‘আমাদের বিশ্বাস, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে কারচুপি করা হয়েছে। তাই ফের ময়নাতদন্তের আর্জি জানিয়েছি।’’ পুলিশ সুপার জবি থমাস কে বলেন, ‘‘মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে আগে কোনও লিখিত অভিযোগ করা হয়নি। পরে করা অভিযোগের ভিত্তিতে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
মেয়েটির বাবা-মা কর্মসূত্রে অন্যত্র থাকেন। মেয়েটি দু’টি বাড়িতে গৃহসহায়িকার কাজ করত। স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। দুপুরে নিজের বাড়িতে যেত। যে দু’টি বাড়িতে কাজ করত, সেখানেই এক জায়গায় রাতে থাকত।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ঘটনার দিনও মেয়েটি দুপুরে বাড়িতে স্নান-খাওয়া সারতে গিয়েছিল। ফিরতে দেরি দেখে এক মহিলা খোঁজ করতে আসেন। তাঁর বাড়িতে কাজ করত মেয়েটি। তিনি জানলা দিয়ে দেখতে পান, ঘরে ঝুলছে নাবালিকার দেহ। লোকজনকে ডাকেন তিনি। খবর দেওয়া হয় বাবা-মাকে। মাটিয়া থানার পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে দেহ ময়নাতদন্তে পাঠায়। দেহ কবরস্থ করে পরিবার।
সে সময়ে অবশ্য ধর্ষণ বা খুনের অভিযোগ করেননি বাবা-মা। তাঁদের দাবি, ঘটনার দু’একদিন পরে তাঁরা মনস্থ করেন, লিখিত অভিযোগ করবেন। কিন্তু পুলিশ অভিযোগ নিতে চায়নি, দাবি তাঁদের। পুলিশের বক্তব্য, মেয়ের মৃত্যুর পর দিন বাবা-মা লিখিত ভাবে জানিয়েছিলেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন, কোনও অভিযোগ করবেন কি না। মঙ্গলবার ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়েছে থানায়। পুলিশ জানিয়েছে, মেয়েটি যে দু’টি বাড়িতে কাজ করত, তার একটি পরিবারের কয়েক জনও আছেন অভিযুক্তের তালিকায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy