ধৃত মুসাভির হুসেন সাজিব এবং আবদুল মাথিন তাহা। — ফাইল চিত্র।
শুধুই সৈকত পর্যটন কেন্দ্র নয়, পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় এমন একাধিক জায়গা রয়েছে যেগুলির নিরাপত্তা সর্বাগ্রে জরুরি। সেই তালিকায় আছে হলদিয়া বন্দর থেকে একাধিক মৎস্যবন্দর, কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। জেলার তাজপুরে গভীর সমুদ্র বন্দর আর জুনপুটে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে। নিরাপত্তার নিরিখে এমন জরুরি একটি জেলার এক প্রান্তে দুই আইএস জঙ্গির লুকিয়ে থাকার ঘটনায় আলোড়ন পড়েছে। জেলার সুরক্ষার প্রশ্নে শুরু হয়েছে তৎপরতাও।
বেঙ্গালুরুর কাফেতে আইইডি বিস্ফোরণের পরে অন্যতম দুই অভিযুক্ত আব্দুল মাথিন ত্বহা এবং মুসাভির হোসেন শাজিব কলকাতা-সহ রাজ্যের নানা প্রান্ত ঘুরে শেষে উঠেছিল নিউ দিঘার হোটেলে। বৃহস্পতিবার রাতে সেখানে হানা দিয়েই দু’জনকে গ্রেফতার করে এনআইএ এবং এসটিএফ। জুনপুটে যেখানে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্র তৈরি হওয়ার কথা, নিউ দিঘা থেকে তা ৪২ কিলোমিটার দূরে। ইতিমধ্যে সেখানে লঞ্চিং প্যাড তৈরি হয়েছে। পাশে উপকূল রক্ষী বাহিনীর রেডার তৈরির কাজও চলছে। জাতীয় নিরাপত্তার দিক থেকে অন্যতম সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ এই কেন্দ্রটি।
১০ কিলোমিটারের মধ্যেই এশিয়ার বৃহত্তম মৎস্যবন্দর পেটুয়াঘাট। হাজার খানেক ট্রলারের নিত্য আনাগোনা সেখানে। দিঘা থেকে ২৯ কিলোমিটার দূরে রয়েছে শৌলা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র আর মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে শঙ্করপুর মৎস্যবন্দর। জলপথে এই গোটা অঞ্চল বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত। সেখানে নানা বেআইনি কারবারের অভিযোগও ওঠে। এর সঙ্গে যোগ করা যেতে পারে হলদিয়া বন্দর, সেখানকার পেট্রো-রসায়ন নির্ভর কারখানাগুলিকেও। কোলাঘাটে রয়েছে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। দুই মেদিনীপুর, হাওড়া-সহ রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ হয় এখান থেকেই। হলদিয়ার নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে শিল্প-নিরাপত্তা বাহিনী। আর কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিরাপত্তার ভার রয়েছে জেলা পুলিশের হাতেই। তার পরেও প্রশ্ন, এই সব এলাকা ততটাই সুরক্ষিত তো?
সম্প্রতি হলদিয়া বন্দরের ভিতরে বিনা নথিতে জাহাজে আসা বিদেশি নাগরিকদের মোবাইলের সিমকার্ড বিক্রির চক্রের কথা প্রকাশ্যে আসে। তার পরে বন্দরে গেট পাস নিয়ে কড়াকড়ি শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই দুই আইএস জঙ্গি ধরা পড়ায় নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্রের অধীন শিল্প নিরাপত্তা বাহিনী এবং উপকূল রক্ষী বাহিনী। হলদিয়ার শিল্প নিরাপত্তা বাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত এক আধিকারিক বলছেন, ‘‘অত্যন্ত কড়া নজরদারি চলছে। বাড়তি সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।’’ জলপথে টহলদারি বাড়িয়েছে উপকূল রক্ষী বাহিনী। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) শুভেন্দ্র কুমারও মানছেন, ‘‘সন্দেহভাজন জঙ্গি গ্রেফতারের পরে জেলার সব থানাকে বাড়তি সতর্ক করা হয়েছে। তবে কোথাও অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েনের খবর নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy