কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্থা রুখতে বিশাখা নির্দেশিকা চালু হয়েছে। তার পরেও যৌন হেনস্থার সংজ্ঞার মধ্যে কিছু ধূসর জায়গা রয়ে গিয়েছে। বুধবার সত্যেন্দ্রনাথ বসু জাতীয় মৌলবিজ্ঞান কেন্দ্রে ‘কর্মক্ষেত্রে যৌনহেনস্থা’ শীর্ষক আলোচনাসভায় উপস্থিত বক্তাদের কথায় ঘুরেফিরে এল সেই কথাই।
‘জওহরলাল নেহরু সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড সায়েন্টিফিক রিসার্চ’ এর অধ্যাপিকা শোভনা নরসিংহম যেমন প্রশ্ন তুললেন, কর্মক্ষেত্রে কোনও মেয়েকে কেউ ‘ডেট’-এ যাওয়ার প্রস্তাব দিলে কি সেটা যৌন হেনস্থার মধ্যে পড়বে? কর্মক্ষেত্রে কেউ প্রেম নিবেদন করলে কি তাকে যৌন হেনস্থা বলা হবে? কর্মক্ষেত্রে ‘প্রাপ্তবয়স্ক ঠাট্টা-তামাশা’ করাটা উচিত না অনুচিত? যদি কর্মক্ষেত্রে এক জন পুরুষ অন্য পুরুষকে বা কোনও মেয়ে অন্য মেয়েকে এবং কোনও মেয়ে অন্য পুরুষকে যৌন হেনস্থা করেন তখনও কি একই আইন প্রযোজ্য হবে? ভারতীয় সিনেমায় হামেশাই দেখা যায়, নায়িকা প্রেমের প্রস্তাবে প্রথমে ‘না’ বলছেন, পরে নায়কের নাছোড়বান্দা উপরোধে ‘হ্যাঁ’ বলছেন। কর্মক্ষেত্রে এমন উপরোধ চালিয়ে গেলে কি তাকে যৌন হেনস্থা বলা হবে? আইনে এই ধরনের সমস্যার কোনও স্পষ্ট সমাধান বলা নেই। এ দিনের অন্যতম বক্তা সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি আলতামাস কবীর ঠিক এই কারণেই মনে করিয়ে দিলেন, ‘‘আমাদের বেশির ভাগ সিনেমা বা সিরিয়ালে যে ভাবে মেয়েদের তুলে ধরা হয়, সবার আগে তার পরিবর্তন দরকার।’’
সাংবাদিক ভাস্বতী চক্রবর্তীর পরামর্শ, কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন কর্মী বিভিন্ন ধরনের সামাজিক, অর্থনৈতিক স্তর, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় পরিমণ্ডল থেকে আসেন। ফলে তাঁদের আচরণ, ধ্যানধারণা আলাদা হতে বাধ্য। তাই তাঁদের মধ্যে কেউ যৌন হেনস্থামূলক কাজ করছে বলে মনে হলে কয়েক দিন একটু অপেক্ষা করে তিনি ঠিক কোন উদ্দেশে তা করছেন খতিয়ে দেখা উচিত ও তাঁকে সাবধান করা উচিত। তার পরেও তাঁর আচরণ পরিবর্তন না-হলে অবশ্যই যৌন হেনস্থা প্রতিরোধ সেলে লিখিত অভিযোগ করা দরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy