Advertisement
E-Paper

শিক্ষক নিগ্রহে দুই অভিযুক্ত ধৃত, কাউন্সিলরকে ‘শোকজ

তৃণমূলের অস্বস্তি বেড়েছে ঘটনার নেপথ্যে কোন্নগর পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর তন্ময় দেবের নাম জড়িয়ে যাওয়ায়।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রকাশ পাল

শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৯ ০৩:৪৮
প্রতিবাদ: অধ্যক্ষের কাছে স্মারকলিপি কলেজের শিক্ষকদের। ছবি: দীপঙ্কর দে

প্রতিবাদ: অধ্যক্ষের কাছে স্মারকলিপি কলেজের শিক্ষকদের। ছবি: দীপঙ্কর দে

যাদের যাওয়ার কথাই নয়, কোন্নগরের নবগ্রাম হীরালাল পাল কলেজ ছিল তাদের ‘রাজ্যপাট’!

শুধু ওই কলেজে যাওয়াই নয়, শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের নামে সেখানে রীতিমতো ছড়ি ঘোরানোর অভিযোগ উঠেছে সেখানকার শিক্ষক-নিগ্রহ কাণ্ডে ধৃত সন্দীপ পাল এবং বিজয় সরকারের বিরুদ্ধে। কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ২০১৫-১৬ সালে সন্দীপ সেখানে পড়ত। ফলে, এখন তার কলেজে যাওয়ার কারণ নেই। বিজয় নিয়মিত পড়ুয়া নয়। তবে পরীক্ষা দেবে। ফলে কলেজের খাতায় তার নাম আছে। নিয়মিত ছাত্র না হওয়ায় বিধি অনুয়ায়ী তারও নিয়মিত কলেজে যাওয়ার কথা নয়।

তৃণমূলের অস্বস্তি বেড়েছে ঘটনার নেপথ্যে কোন্নগর পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর তন্ময় দেবের নাম জড়িয়ে যাওয়ায়। অভিযোগ, কলেজটি নবগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় হলেও রেল লাইনের অপর প্রান্তে কোন্নগর পুর এলাকা থেকে উজিয়ে নিয়মিত কলেজে আসতেন তন্ময়বাবু। আক্রান্ত কলেজ শিক্ষক সুব্রত চট্টোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদবকে ওই কাউন্সিলরের নামে অভিযোগ করেন। এসএফআই তাঁর গ্রেফতারের দাবি তুলে কলেজের গেটে বিক্ষোভ দেখায়। তারপরেই তন্ময়বাবুর কাছে দলের তরফে কারণ দর্শানোর চিঠি পাঠানো হয়।

এসএফআইয়ের জেলা সভাপতি নবনীতা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যে কাউন্সিলর শিক্ষককে মারতে ছাত্রদের উত্তেজিত করেন, তাঁর ক্ষমা হয় না। ওঁকে অবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক।’’ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জেলা তৃণমূল সভাপতি বলেন, ‘‘ওই কাউন্সিলরের কলেজে উপস্থিতি নিয়ে দল নিশ্চিত। কলেজের সিসিটিভি ফুটেজে তাঁকে দেখা গিয়েছে। তাই কারণ দর্শানোর চিঠি পাঠানো হয়েছে।’’ এ নিয়ে তন্ময়বাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘নিন্দনীয় ঘটনা। বুধবার একটা গোলমালের খবর শুনে কলেজে গিয়েছিলাম। আমার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক যে অভিযোগ তুলেছেন, তা ভুল। বরং কলেজের সিসিটিভি ফুটেজ দেখলেই চোখে পড়বে, ওই শিক্ষক কী ভাবে ক্যামেরাম্যান ডেকে এনে সবাইকে উত্তেজিত করে পরিকল্পিত ভাবে ওই ঘটনা ঘটিয়েছেন।’’

ধৃত দু’জনেরই বাড়ি কোন্নগরে। টিএমসিপি নেতৃত্ব নিজেদের ঘাড় থেকে তাদের ঝেড়ে ফেলতে চাইছেন। জেলা টিএমসিপি সভাপতি গোপাল রায় বলেন, ‘‘ওরা আমাদের সংগঠনের কেউ নয়।’’ বৃহস্পতিবার অবশ্য তাদের ‘ঔদ্ধত্য’ উধাও। থানা থেকে আদালত পর্যন্ত তারা গিয়েছে মুখ ঢেকে। সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নে রা কাড়েনি।

এ দিন সকালে শ্রীরামপুরের নেতাজি সুভাষ অ্যাভিনিউতে সুব্রতবাবুর ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখা যায়, অনেকেই তাঁর খোঁজ নিতে আসছেন। তাঁর স্ত্রী অন্নপূর্ণাদেবী স্কুল শিক্ষিকা। মেয়ে শিঞ্জিনী নবম শ্রেণির ছাত্রী। অন্নপূর্ণাদেবী বলেন, ‘‘আমরা ভীষণ আতঙ্কিত। কলেজে তর্কাতর্কি হতে পারে। কিন্তু শিক্ষকের গায়ে হাত তোলা হবে! ঘটনাটা শোনার পরে মেয়ে হাউহাউ করে কেঁদেছে। রাতে ঘুমোতে পারিনি।’’

TMCP Konnagar Hiralal Paul College Mamata Banerjee Subrata Chatterjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy