শুভেন্দু অধিকারী
পঞ্চায়েত ভোটের আগে বার্তা দিয়েছিলেন বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েতের। শুভেন্দু অধিকারীর ওই বার্তার পরেই পঞ্চায়েত ভোটে জেলায় বহু আসনে শাসক দলের কর্মী-সমর্থকদের বাধায় তাঁরা প্রার্থী দিতে পারেননি বলে অভিযোগ তুলেছিলেন বিরোধীরা। লোকসভা ভোটের পর জেলার খেজুরি, নন্দীগ্রামে কিছুটা বেকায়দায় শাসক দল। এমনকী লোকসভা ভোটে নন্দীগ্রামে আশানুরূপ লিড না পাওয়ায় এর আগে দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সতর্ক করার পাশাপাশি মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ আরও গুরুত্ব দেন।
বুধবার তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে সেই নন্দীগ্রামে এসেই শুভেন্দুর গলায় আত্মসমালোচনার সুর। যা শুনে বিরোধীদের কটাক্ষ, লোকসভা ভোটে এই এলাকায় দলের হাল দেখেই পঞ্চায়েতের সুর বদলে অন্য সুর ধরেছেন শুভেন্দু। এ দিন বুধবার নন্দীগ্রামের একটি দলীয় অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে সরাসরি জনসংযোগ করেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। মঞ্চ থেকে পরিবহণ মন্ত্রী বলেন, ‘‘কেউ যদি আদর্শগতভাবে বিরোধী দল করে থাকে তাতে আপত্তির কিছু নেই। গণতন্ত্রে বিরোধী দল থাকা আবশ্যক। কিন্তু যদি আমাদের ভুল বুঝে দূরে সরে যান সেটা আমাদের ক্ষেত্রে দুঃখজনক। তাই আমাদের ভুল ত্রুটি তুলে ধরুন। যাতে আমরা আগামী দিনে নিজেদের শুধরে এগিয়ে যেতে পারি।’’ এর পরেই তাঁর সংযোজন, ‘‘২০০৪ সালে যখন লক্ষ্মণবাবুর (লক্ষ্মণ শেঠ) কাছে আমি লোকসভা নির্বাচনে হেরে যাই তখন কিন্তু পালিয়ে যাইনি। হার জিৎ যাই হোক না কেন, আমি নন্দীগ্রামের মানুষের পাশে ছিলাম। কিন্তু ৬ মাস আগে (লোকসভায়) আপনারা নদিয়া থেকে আগত যে মানুষটিকে ভোট দিয়েছিলেন ছ’মাস ধরে তাঁকে এলাকায় দেখা যায়নি।’’ এ দিন নারায়ণচকে এক সময় মঞ্চ থেকে নেমে পরিবহণ মন্ত্রীকে জন সাধারণের সঙ্গে কথাও বলতে দেখা যায়।
নন্দীগ্রামে তাঁর গলায় আত্মসমালোচনার সুর থাকলেও কাঁথিতে দলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠানে সরাসরি বিজেপিকে আক্রমণ করেন শুভেন্দু। কড়া সমালোচনা করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের। প্রসঙ্গত, গত ২৭ ডিসেম্বর কাঁথিতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন চালুর সিদ্ধান্তের সমর্থনে মিছিল করে বিজেপি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ স্বয়ং উপস্থিত ছিলেন। মিছিলে বিজেপি কর্মীদের উপস্থিতি যথেষ্ট ছিল বলে বিজেপি নেতৃত্ব দাবি করেছিলেন। এদিন সেই প্রসঙ্গ তুলে দিলীপকে ‘বড় মাপের নেতা’ বলে কটাক্ষ করেন শুভেন্দু। এদিন দলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে তিন শতাধিক মানুষের হাতে শীতবস্ত্র তুলে দেন পরিবহণ মন্ত্রী। অনুষ্ঠানে তিনি ছাড়াও বিধায়ক ও জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির আহ্বায়ক অর্ধেন্দু মাইতি, জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কনিষ্ক পন্ডা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার রাত ১২টায় কাঁথি শহরের ক্যানাল পাড়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন সাংসদ ও জেলা তৃণমূল সভাপতি শিশির অধিকারী। অনুষ্ঠানে তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীও উপস্থিত ছিলেন। তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে হলদিয়ার বিভিন্ন এলাকায় দিনটি উদযাপন করা হয়। টাটাস্টিলের হুগলি মেট কোক তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের উদ্যোগে দুঃস্থ পড়ুয়াদের পড়াশোনার সামগ্রী বিতরণ করা হয়। হলদিয়া যুব তৃণমূলের উদ্যোগে টাউনশিপ থেকে দুর্গাচক পর্যন্ত একটি বাইক র্যালির আয়োজন করা হয়েছিল। নেতৃত্বে ছিলেন হলদিয়ার প্রাক্তন পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ মণ্ডল ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy