এজলাসে দাঁড়িয়ে বছর আঠারোর তরুণী চোস্ত ইংরেজিতে বিচারকের কাছে আবেদন করেবললেন, ‘‘আমার সন্তানকে ফিরিয়ে দিন। আমার বাবা-মা যদি ছেলেকে মেনে না-ও নেন, আমি নিজে কোনও কাজকর্ম করে ওকে লালনপালন করব। আমি সিঙ্গল মাদার হয়ে থাকব।’’
বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার একটি পকসো আদালতে। পুলিশ জানায়, কলকাতার বাসিন্দা এক মেয়ের সঙ্গেউত্তর ২৪ পরগনার এক যুবকের বন্ধুত্ব ছিল। মেয়েটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়াশোনা করেছে। নিজের জন্মদিন পালন করবে বলে যুবক মেয়েটিকে আমন্ত্রণ করে নিজের বাড়িতে। সেখানে তাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ।মেয়েটির বয়স সে সময়ে ছিল সতেরো। মহিলা থানায় পকসো আইনে মামলা রুজু হয়। যুবক গ্রেফতার হয়। বিমানবন্দরের কর্মী ওই যুবক এখন জেলে।
বিশেষ পকসো আদালতের সরকারি আইনজীবী সমীর দাস জানান, মেয়েটি পরবর্তী সময়ে হাসপাতালে একটি পুত্রসন্তান প্রসব করে, তখন তার বয়স আঠারো ছুঁইছুঁই। বাবা-মায়ের চাপে সেই সন্তানকে অবশ্য চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির মাধ্যমে কলকাতার একটি হোমে পাঠাতে বাধ্য হয় মা। পরে দু’বার চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির কাছে সন্তানের খোঁজ চাইলেও তারা কিছু জানাতে পারেনি।
সন্তানকে ফিরে পেতে চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন তরুণী। তাঁর বয়স এখন সবে আঠারো। সমীর বলেন, ‘‘তরুণীর আবেদনের মধ্যে সন্তানের প্রতি মায়ের ভালবাসা প্রকাশ পেয়েছে, যা আমরা উপেক্ষা করতে পারি না।’’ এ দিন বাবা-মায়ের সঙ্গে তরুণী আদালতে আসেন। কিন্তু এ বিষয়ে কেউ কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
সরকারি আইনজীবী জানান, এ দিন বিচারক চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারম্যানকে ৪ জুলাই আদালতে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। অভিযুক্ত যুবক মেয়েটিকে এখন বিয়ে করতে চাইছে। কিন্তু মেয়েটি তাতে রাজি নয়।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)