আলোচনা: প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার দুর্গাপুরে সিটি সেন্টারে সৃজনী পেক্ষাগৃহে। ছবি: বিকাশ মশান
পঞ্চায়েত নির্বাচন দোরগোড়ায়। এমন সময়ে দুর্গাপুরে পশ্চিম বর্ধমানের প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিয়ে কাঁকসায় ক্ষুদ্র শিল্পের ‘ক্লাস্টার’ গড়ার কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার অতিরিক্ত মুখ্য শিল্প সচিব রাজীব সিংহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় ‘ক্লাস্টার’ গড়ার পরিকল্পনা জানাতে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কাঁকসাকেই বাছুন না। গরিব এলাকা।’’
দুর্গাপুর শহর নয়। গত ডিসেম্বরে সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন, শিলান্যাস ও পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানের জন্য কাঁকসার রঘুনাথপুরকেই বেছে নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিনও দুর্গাপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে উঠল সেই কাঁকসার প্রসঙ্গ।
কেন? স্থানীয় রাজনীতির গতিপ্রকৃতির পর্যবেক্ষকদের একাংশের ধারণা, কাঁকসা মূলত আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা। বামেদের বিভিন্ন সভা-সমিতিতে এখনও আদিবাসীদের একটা অংশকে দেখা যায়। আবার বিজেপি-র রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও ইদানিং আদিবাসীদের উপস্থিতি নজরে আসছে। তার উপরে রয়েছে শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বজনিত সমস্যা এবং স্থানীয় উন্নয়নে তার ‘প্রভাব’। ঘনিষ্ঠ মহলে জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের একাংশ মানেন, কাঁকসায় তাঁদের দলের অন্দরে একাধিক শিবিরের উপস্থিতির জন্য মুখ্যমন্ত্রীর চালু করা অনেক সরকারি প্রকল্পের সুফল আদিবাসীরা সার্বিক ভাবে পাচ্ছেন না। পঞ্চায়েত ভোটের আগে সে সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে বিরোধীরা। তা অজানা নয় তৃণমূল নেত্রীর। হয়তো সে জন্যই ঘুরেফিরে কাঁকসার কথা এসেছে।
ডিসেম্বরে মুখ্যমন্ত্রী কাঁকসায় বলে গিয়েছিলেন, ‘‘রাজ্য সরকার সার্বিকভাবে আদিবাসী সমাজের উন্নয়ন চায়। কোনও রকম কুৎসা বা অপ্রচারে কেউ পা দেবেন না।’’ এ দিন তিনি সরাসরি এমন আর্জি না জানালেও কাঁকসার উন্নতির প্রসঙ্গ টানায়, কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না সিপিএম। দলের জেলা কমিটির সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, ‘‘দুর্গাপুরে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সংখ্যা গত কয়েক বছরে অর্ধেকে নেমে এসেছে। পুরনো শিল্প বাঁচাতেই কোনও চেষ্টা নেই। বাম আমলে গড়ে ওঠা কাঁকসার বিভিন্ন কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সেখানে পঞ্চায়েত ভোটের আগে নতুন করে শিল্প স্থাপনের কথা বলে মুখ্যমন্ত্রী কাঁকসার মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছেন।’’ কংগ্রেসের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই সরকারের আমলে শিল্পের অস্তিত্ব নেই। তাই এমন কথার অর্থ নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy