Advertisement
E-Paper

জিএসটির কৃতিত্ব রাজ্যের, ক্ষতি স্বীকার করেও মানছি মানুষের কথা ভেবে! নয়া হার চালুর আগে মোদীর ‘ভাষণকে’ খোঁচা মমতার

রবিবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকারের নয়া জিএসটি নীতির ঘোষণা করে জাতির উদ্দেশে বক্তৃতা করেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সময় দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন পুজো মণ্ডপের উদ্বোধন করছিলেন মমতা।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৯:০৯
(বাঁ দিকে) নরেন্দ্র মোদী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

(বাঁ দিকে) নরেন্দ্র মোদী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

মহালয়ার সন্ধ্যায় দুর্গাপুজোর উদ্বোধন করতে গিয়ে উৎসবের মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকারের নয়া জিএসটি নীতির ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। সেই বিষয়ে কথা বলতে জাতির উদ্দেশে বক্তৃতা করেন তিনি। সেই বক্তৃতা চলাকালীন দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন পুজো মণ্ডপের উদ্বোধন করছিলেন মমতা। মোদীর বক্তৃতা শেষ হওয়ার পর দক্ষিণ কলকাতার ৯৫ পল্লীর মঞ্চ থেকেই নাম না করে দেশের প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী।

মমতা বলেন, “জিএসটি নিয়ে কেউ কেউ বড় বড় ভাষণ দিচ্ছেন। আমি একটা কথাই বলি, এই যে ইন্সিওরেন্সের থেকে টাকা বা জিএসটি কমানো বা না থাকা। ফার্স্ট চিঠি আমি লিখি এবং বিভিন্ন সাধারণ ডাক থেকে শুরু করে বিভিন্ন জিনিসের উপরে। জিরেতে ট্যাক্স আর হিরেতে মুক্ত। হিরেতে ট্যাক্স নেই, জিরেতে ট্যাক্স আছে। মানুষের খুব কষ্ট হচ্ছিল। এর জন্য ক্রেডিট কার জানেন? যাঁরা ভাষণ দিচ্ছেন, তাঁদের নয়, ক্রেডিট হচ্ছে রাজ্যের।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এর জন্য আমাদের রাজ্যের কত লোকসান হয়েছে জানেন? আমাদের রেভিনিউ আর্নিং যা দিয়ে আমি কখনও লক্ষ্ণীর ভান্ডার করি। কখনও বিনা পয়সায় রেশন দিই। কখনও কৃষক বন্ধু দিই। কখনও সাইকেল দিই। কখনও ট্যাব দিই। আমরা বলেছি, কোনও ইন্সিওরেন্সের প্রিমিয়াম যেন বাড়ানো না হয়। এটার জন্য আমাদের রাজ্যে রেভিনিউ লোকসান হচ্ছে ৯০০ কোটি টাকা। বাদবাকি নিয়ে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা।’’

মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ এনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও কনট্রিবিউশন নেই, ভাষণ দেওয়া ছাড়া। টাকাটা কেটেছে রাজ্যের জিএসটি থেকে। তার জন্য আমার দুঃখ নেই। সাধারণ মানুষের কাজটা হচ্ছে। এতে আমি খুশি। এর জন্য স্টেটকে কোনও কমপেনসেশন দেওয়া হয়নি। বিজেপির রাজ্যগুলিতে ওরা ঘুরিয়ে টাকা দেবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমাদের এখানে তো ১০০ দিনের কাজ বন্ধ। বাংলার বাড়ির কাজ বন্ধ। রাস্তার কাজ বন্ধ। জলের টাকা বন্ধ। সর্বশিক্ষা অভিযানের টাকা বন্ধ। ১৫৬টি কমিটি এসেছে। এখানে টিকটিকি দৌড়ালেও, কেন্দ্রের কমিটি চলে আসে। আর উত্তরপ্রদেশে কিছু হলে দেখতে পায় না। বিহারে কী হচ্ছে, চোখে দেখতে পায় না।’’

জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী জানান, দেশকে আত্মনির্ভর করার দিকে সোমবার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করা হবে। তিনি বলেন, ‘‘আগামিকাল থেকে দেশবাসীর সাশ্রয় শুরু হবে। এর ফলে দেশবাসীর সঞ্চয় বৃদ্ধি পাবে এবং অনেক পণ্য সস্তা হয়ে যাবে। এর ফলে দেশবাসী নিজেদের পছন্দ মতো জিনিস সহজেই কিনতে পারবেন। জিএসটির এই ‘সাশ্রয় উৎসব’ দেশের সর্বস্তরের মানুষকে সুবিধা দেবে বলে জানান তিনি । জবাবে মমতা বলেন, ‘‘এরা চোখে দেখতে পায় না। জিএসটির ক্রেডিট রাজ্যের, আমার রাজ্যের মানুষ যে বেনিফিট পাবে, তার জন্য আমাদের ২০ হাজার কোটি টাকার রেভিনিউ লস হচ্ছে। এটা স্টেটের জিএসটি, সেন্ট্রালের নয়। কাজেই পুজোর দিনে এগুলোর সুবিধা নিন। আমরা এটাই চাই, সাধারণ মানুষকে ইন্সিওরেন্সের টাকা যাতে দিতে না হয়। কই স্বাস্থ্যসাথীর জন্য তো আপনাদের টাকা দিতে হয় না। ওটার ইন্সিওরেন্স তো আমরা দিই।’’

তাঁর কথায়, ‘‘এক লক্ষ ৯২ হাজার কোটি টাকার মতো আমরা পাই। আরও ২০ হাজার কোটি টাকা গেল। গেল তার জন্য আমার দুঃখ নেই, কিন্তু আমাদের পাওনাটা আমাদের দিয়ে দাও।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কাটল টাকা আমাদের! আর প্রচার হচ্ছে ওনাদের। এ এক আজব দেশ। কী ঘোরাচ্ছ ভাই? তোমার গায়ে লাগছে? মানুষকে আমার কথা শুনতে দাও, তোমাদের আমার কথা পছন্দ নাই হতে পারে। আমি যখন বলছি, আমি দায়িত্ব নিয়েই বলছি। এই টাকাটা তো আমাকে জোগাড় করতে হবে। কোথা থেকে করব?’’

Mamata Banerjee Narendra Modi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy