ভাঙড়: পড়শি এক মহিলার সঙ্গে ছোট ছেলের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি মা-বাবা। এই নিয়ে পরিবারে নিত্য অশান্তি লেগে ছিল। মা-বাবার অভিযোগ, বাড়ি থেকে টাকাপয়সা নিয়ে গিয়ে ওই মহিলার পিছনে খরচ করত ছেলে। এই নিয়ে তাকে বকাবকি করেছিলেন বাবা। তার জেরে তাঁকে কোদালের বাট দিয়ে মেরে খুনের অভিযোগ উঠল ছোট ছেলের বিরুদ্ধে। বুধবার গভীর রাতে, ভাঙড় থানার বড়ালি মল্লিকপাড়ায়। মৃতের নাম আবেদ আলি মল্লিক (৭৫)। তাঁর বড় ছেলে নজরুল মল্লিকের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত ছোট ছেলে রশিদ মল্লিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, স্ত্রী ভানু বিবি, পাঁচ ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে থাকতেন আবেদ। ছোট
ছেলে রশিদ বাদে বৃদ্ধের অন্য ছেলেমেয়েদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বড়ালিঘাট এলাকায় একটি জুতোর কারখানায় কাজ করত রশিদ। সম্প্রতি ওই কাজ ছেড়ে দেয় সে। এর পরে পড়শি এক মহিলার সঙ্গে রশিদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দুই সন্তানের মা ওই গৃহবধূকে নিয়ে কয়েক দিন আগে রশিদ পালিয়ে যায়। পরে ফিরে আসে।
এর পরেই রশিদের মা-বাবা ছেলের জন্য পাত্রী দেখা শুরু করেন। কিন্তু অভিযোগ, যত
বারই বিয়ের ঠিক হয়, রশিদ সেই বিয়ে ভেঙে দেয়। পরিবারের আপত্তি সত্ত্বেও ওই বধূর সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখে।
বুধবার গভীর রাতে ছেলে বাড়ি ফিরলে আবেদ তাঁকে ফের বকাবকি করেন। তখনই রশিদ
কোদালের বাট দিয়ে বাবার মাথায় মারে। রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন আবেদ। পরিবারের সদস্যেরা তাঁকে নলমুড়ি ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি
হওয়ায় পরে আবেদকে পাঠানো হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানে মারা যান তিনি। তদন্তে নেমে পুলিশ ওই রাতেই অভিযুক্ত ছেলেকে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার তাকে বারুইপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
আবেদের স্ত্রী ভানু বিবি বলেন, ‘‘ছেলের বেহিসেবি চালচলনের জন্য প্রায়ই বাড়িতে
গোলমাল হত। শেষ পর্যন্ত বাবাকে খুনই করল ছেলে। ওর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)