Advertisement
E-Paper

দক্ষিণের কড়চা

তিনি কেবল রাঙামাটির বাউল শিল্পী নন। অজস্র লোক গানের পদকর্তা, নৃত্যশিল্পী এবং সাধক! তিনি সনাতন দাস বাউল। সম্প্রতি ৯২ বছর বয়সে চলে গেলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের লালন পুরস্কার প্রাপ্ত এই সাধক শিল্পী। গত শুক্রবার এই আপনভোলা বাউল শিল্পীকেই স্মরণ করল গোবরডাঙা লোক উৎসব কমিটি। প্রতি বছরের গোড়াতেই লোক সংস্কৃতি উৎসবের আয়োজন করে এই সংস্থা। এ বারেও জানুয়ারি মাসে স্থানীয় মিলন সঙ্ঘ মাঠে সেই উৎসব হয়।

শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৬ ০০:৪৮
গোবরডাঙায় চলছে অনুষ্ঠান। নিজস্ব চিত্র।

গোবরডাঙায় চলছে অনুষ্ঠান। নিজস্ব চিত্র।

মাটির গানে স্মরণে সনাতন

ওযার মন ভালো নয়, দিল ভালো নয়, সে পিরিতের মর্ম কী জানে।’’

তিনি কেবল রাঙামাটির বাউল শিল্পী নন। অজস্র লোক গানের পদকর্তা, নৃত্যশিল্পী এবং সাধক! তিনি সনাতন দাস বাউল। সম্প্রতি ৯২ বছর বয়সে চলে গেলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের লালন পুরস্কার প্রাপ্ত এই সাধক শিল্পী। গত শুক্রবার এই আপনভোলা বাউল শিল্পীকেই স্মরণ করল গোবরডাঙা লোক উৎসব কমিটি। প্রতি বছরের গোড়াতেই লোক সংস্কৃতি উৎসবের আয়োজন করে এই সংস্থা। এ বারেও জানুয়ারি মাসে স্থানীয় মিলন সঙ্ঘ মাঠে সেই উৎসব হয়। তখন সেখানে অস্থায়ী বাউল আখড়া তৈরি করা হয়েছিল। সেখানেই গান, আলোচনায় স্মরণ করা হয় সনাতন দাস বাউলকে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে তরুণ ক্ষ্যাপা, আনন্দ দাস বাউল, বিমল বিশ্বাস বাউল-সহ প্রায় ১৫-১৬ জন বাউল এসেছিলেন। উপরিউক্ত গানটি ছাড়াও সনাতন দাস বাউলের লেখা অজস্র পদ গেয়ে শোনান তাঁরা। সশরীরে উপস্থিত থাকতে না পারলেও ফোনের ওপারে থেকে গুরুকে স্মরণ করেন পার্বতী বাউল। বাংলার ১৩৩০ সালে ১২ মাঘ অধুনা বাংলাদেশের খুলনা জেলার লকপুর গ্রামে এই শিল্পীর জন্ম। সোনামুখীর ধুলাই অঞ্চলের খয়েরবুনি গ্রামে তাঁর আখড়া ছিল। অনুষ্ঠানের অন্যতম উদ্যোক্তা রাজীব রায় বলেন, ‘‘সনাতন দাস প্রচার বিমুখ বাউল ছিলেন। তাঁর মৃত্যু বাউল সমাজের কাছে একটা বড় ক্ষতি। তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতেই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন।’’

বহুরূপীর সম্মান

শম্ভু মিত্রের পরে যিনি কলকাতার বহুরূপী সংস্থাকে পরম যত্নে লালন করেছিলেন তিনি হলেন কুমার রায়। ২০১০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি কুমারবাবুর মৃত্যু হয়। তার পরের বছর থেকে কুমারবাবুর জন্মদিন ২ মার্চ ‘কুমার রায় স্মারক বক্তৃতা’র আয়োজন করে আসছে বহুরূপী। প্রতি বছরেই এই অনুষ্ঠানে জেলার নাটকের দলগুলিকে পুরস্কৃত করে তারা। ইতিমধ্যে এই সম্মান পেয়েছে নদিয়া, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, পূর্ব মেদিনীপুরের কয়েকটি নাটকের দল। এই বছর এই সম্মান পেল হুগলির বৃশ্চিক নাট্যসংস্থা। ২ মার্চ কলকাতার গোর্কিসদনে এই অনুষ্ঠান হয়। অতিথি হিসেবে ছিলেন অভিনেতা এবং পরিচালক অমল পালেকর, শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়।

বাংলাদেশে ঝাড়গ্রাম

নাটকই ধ্যানজ্ঞান। নাটক নিয়েই নিরন্তর পরীক্ষা। তিনি বছর তিরিশের অভিষেক বর্মন। ঝাড়গ্রাম শহরের বাসিন্দা অভিষেকের প্রথাগত নাটকের ডিগ্রি নেই। তবে রয়েছে বর্ণময় অভিজ্ঞতা। কৈশোর থেকেই ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন নাটকের দলে অভিনয়। বিজনেস ম্যানেজমেন্টের স্নাতক অভিষেক এখন কলকাতার অল্টারনেটিভ লিভিং থিয়েটারের (এএলটি) শিল্পী। ঝাড়গ্রাম শহরে ছোটদের নাটক শেখানোর একটি স্কুলও চালান। সম্প্রতি এএলটি-এর সদস্য হিসেবে বাংলাদেশে অভিনয় করে তিনি।

আঁকা নিয়ে লেখা

তিনি বিনা দ্বিধায় বলতে পারতেন, কেমন ছবি আঁকি সেটা জানি না কিন্তু কেন আঁকি সেটা বলতে পারি। তিনি বলতেন, শিল্প কোনও গোষ্ঠীর হতে পারে না। শিল্প সব স্তরের মানুষের জন্য। শিল্প সম্পর্কে এই ভাবনা ছিল জয়নুল আবেদিনের। বাংলাদেশের এই চিত্রশিল্পীর জীবন, শিল্প ভাবনা নিয়েই সেজেছে মেদিনীপুর থেকে প্রকাশিত আঁকা নিয়ে প্রকাশিত পত্রিকা চিত্রমের সাম্প্রতিক সংখ্যা। জেলায় তো বটেই, সারা রাজ্যেই শুধুমাত্র ছবি আঁকাকে বিষয় করে পত্রিকার সংখ্যা হাতেগোনা। এই সংখ্যাতেও পত্রিকার সামগ্রিক কাজ প্রশংসার দাবি রাখে।

সোনালি পাখির গল্প

অনেক দিন পরে গ্রামের বাড়িতে ফিরে ঠাকুমার কাছে বসে রূপকথার ‘সোনালি পাখি’র গল্প শোনে এক খুদে। মন দিয়ে সেই গল্প শোনার পরে সে ঠাকুমার কাছে থেকে যাওয়ার বায়না জুড়ে দেয়। এই গল্পের সুতো দিয়েই বোনা হয়েছে ১০ মিনিট ৪০ সেকেন্ড দ‌‌ৈর্ঘ্যের অ্যানিমেশন সিনেমা ‘সোনালি পাখি’। ছবিটি তৈরি করে ইতিমধ্যেই দেশ-বিদেশের খ্যাতি কুড়িয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের দেবরাজ সরকার। নিজের আঁকা স্কেচ, ইলাস্ট্রেশনের সাহায্যে অ্যানিমেশনের সিনেমা তৈরি করেন একটি বেসরকারি আর্ট কলেজ থেকে দৃশ্যকলা বিষয়ে স্নাতক দেবরাজ। দেবরাজের কথায়, ‘‘অ্যানিমেশনের মাধ্যমে সিনেমা বানানোর কোনও প্রথাগত শিক্ষা আমার নেই। তবে অনলাইনে এই বিষয়ে কিছু পড়াশোনা করেছি। তারপর ঠাকুরমার মুখে শোনা গল্পকেই কল্পনার চোখ দিয়ে সাজিয়ে ‘সোনালি পাখি’ তৈরি করেছি।’’ এই সিনেমায় বটগাছের নীচে খেলা, দোল খাওয়া, পুকুরে স্নান, জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানো, জমিদার বাড়ির ভাঙা অংশ, ট্রেন যাওয়ার মতো জায়গাগুলি সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। দেবরাজ জানালেন, ছবিটি তৈরি করতে তাঁর সময় লেগেছে প্রায় ১৪ মাস। সাদা-কালো পেনসিল স্কেচের সঙ্গে রং-এর ব্যবহার তাঁর তৈরি এই সিনেমাকে আরও সুন্দর করে তুলেছে। গত তিন বছরে মুম্বই, কলকাতা, বেঙ্গালুরু-সহ বিভিন্ন শহর এবং ইতালি, লেবাননের মতো কয়েকটি দেশের ফিল্ম ফেস্টিভালে বিভিন্ন বিভাগে ১২টি পুরস্কার ঝুলিতে ভরে ফেলেছেন এই তরুণ পরিচালক। তাঁর ছবি দেখানো হয়েছে টরেন্টো, ব্রাজিল, কম্বোডিয়ায়। প্রায় ৪০টি ফিল্ম ফেস্টিভালে। পড়ুয়াদের হাতে-কলমে কাজ শেখানোর জন্য ইতিমধ্যেই তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছে গুজরাটের একটি সংস্থা।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy