এই মুহূর্তে তাঁদের বিজেপিতে যোগদানের কোনও সম্ভাবনা যে নেই, তা আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বৈশাখীর সাংবাদিক সম্মেলন শেষ হতেই মিডিয়ার সামনে এলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। এই প্রথম বার বিশদে মুখ খুললেন তাঁকে ঘিরে তৈরি হওয়া জল্পনা নিয়ে। শোভনের গলায় দলের প্রতি অভিমান স্পষ্ট। কোনও ‘অন্যায়’-এর সঙ্গে আপোস করবেন না বলে এ দিন মন্তব্য করেছেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র। রায়চকে তাঁর সঙ্গে যা ঘটেছে, তাতে তিনি অত্যন্ত ‘মর্মাহত’ বলে শোভন এ দিন জানিয়েছেন। সেই সঙ্গেই তাঁর তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘তৃণমূল কোনও এক জন মানুষের দল নয়।’’
বিজেপির তরফ থেকে কেউ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেননি, কোনও দলের কাছ থেকে কোনও লোকসভা আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রস্তাব পাননি— এ দিন সংবাদমাধ্যমকে এমনই জানান শোভন। কিন্তু বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ফোন তো এসেছে, তিনি তো বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, যে কোনও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত একসঙ্গেই নেবেন বলেও তো বৈশাখী একাধিক বার জানিয়েছেন। শোভন এ সব প্রশ্নের জবাব খুব বিশদে দিতে চাননি। বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় এক জন স্বাধীন মানুষ, তাঁর সঙ্গে কার যোগাযোগ বা কথা বা বৈঠক হবে, তাঁকে কে কী ধরনের প্রস্তাব দেবেন, তা তিনি (শোভন) নিয়ন্ত্রণ করেন না— শোভনের বক্তব্যের সারকথা ছিল এই। তবে এ কথা জানানোর পাশাপাশি রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী এ দিন ফের বলেছেন, ‘‘বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় আমার বিপদের বন্ধু। বিপদের দিনে উনি যে ভাবে আমাকে সাহায্য করেছেন এবং সে কারণে তাঁকে নিয়ে যে ধরনের আলোচনা হচ্ছে, তা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। পরিস্থিতির অপব্যবহার করা হচ্ছে। যা যা বলা হচ্ছে, তার সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল নেই।’’
তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, তার কারণ সম্পর্কেও শোভন এ দিন মুখ খুলেছেন। সরাসরি কিছু বলেননি, তবে ইঙ্গিত খুব স্পষ্ট। তাঁকে নিয়ে নানা ‘অপব্যাখ্যা’ তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে কোনও কোনও শিবির থেকে এবং তার জেরে তাঁর সঙ্গে ‘অন্যায়’ হয়েছে— দাবি শোভনের। সেই ‘অন্যায়’ তিনি মেনে নেবেন না এবং কোনও ‘অপব্যাখ্যা’র জবাব দেওয়ার দায় তাঁর নেই— এই বার্তা বেশ স্পষ্ট ভাবেই এ দিন দিতে চেয়েছেন বেহালা পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক।