বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে চলে আসা হিন্দুদের মধ্যে কাদের সিএএ বা নয়া নাগরিকত্ব আইনে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে, তা নিয়ে প্রতিটি ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা ভাবে বিচার হবে বলে সুপ্রিম কোর্ট মনে করিয়ে দিল। প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ এ দিন পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, ‘‘এই নাগরিকত্বের বিচার প্রতিটি ক্ষেত্রে আলাদা ভাবে হবে।’’
পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর-এর ফলে বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু বিশেষত মতুয়াদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। কারণ অনেকেই সিএএ-তে আবেদন করলেও এখনও নাগরিকত্ব পাননি। এ দিকে পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর শুরু হয়ে যাওয়ায় ভোটার তালিকা থেকে নাগরিকত্বের প্রমাণের অভাবে নাম বাদ যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই আশঙ্কায় বাংলাদেশ থেকে এসে পশ্চিমবঙ্গে বসবাস করা হিন্দুদের তরফে সুপ্রিম কোর্টে মামলাজমা পড়েছে।
সেই মামলাতেই প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘আমাদের সমস্যা হল, আমরা হিন্দু বা জৈন বলে কাউকে আলাদা করতে পারি না।’’ সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন, কেন্দ্রের বক্তব্য জানতে চেয়ে নোটিসজারি করেছে।
মতুয়া সমাজের এই উদ্বেগের বিষয়টি আজ বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার দলের শীর্ষ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছেন। সূত্রের মতে, রাজ্যের সীমান্ত সংলগ্ন প্রায় আশি থেকে নব্বইটি আসনে মতুয়াদের প্রভাব রয়েছে। যার মধ্যে অন্তত সিকিভাগ আসনে গত বিধানসভা ভোটে বিজেপি জিতেছিল বা ভাল লড়াই করেছিল।
মতুয়া সমাজের কয়েক লক্ষ নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ গেলে মতুয়া ভোট পিছন থেকে সরে যেতে পারে বলে আশঙ্কায় ভুগছে গেরুয়া শিবির। বিজেপি গত সপ্তাহে এই সমস্যা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে গিয়েছিল। তাদের মতে, যে সকল ব্যক্তি ২০০২ সালের পরে বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে পালিয়ে এসেছিলেন, এসআইআর-এর ফলে তাঁদের নাম তালিকায় থাকা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। উস্কানিদিচ্ছে তৃণমূল।
এসআইআর থেকে বাদ পড়ার আশঙ্কা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশ থেকে এসে বসবাস শুরু করা িন্দুদের তরফে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছে উত্তর ২৪ পরগনার একটি অসরকারি সংগঠন। তাদের আর্জি, শীর্ষ আদালত কেন্দ্রীয় সরকারকে দ্রুত নাগরিকত্বের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলুক। এসআইআর-এ আপাতত বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দুদের ভোটার তালিকায় স্থান দেওয়া হোক।
সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ৯ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর নিয়ে মামলার সঙ্গেই এর শুনানি হবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)