Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Suvendu Adhikari

শুভেন্দু এ বার সরকারি মঞ্চে, তবু বহাল জল্পনা

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ দিন বলেছেন, তৃণমূলে বড় বিস্ফোরণ আসন্ন।

অনুষ্ঠান মঞ্চে শুভেন্দু অধিকারী। রবিবার রাজারামচকে। নিজস্ব চিত্র

অনুষ্ঠান মঞ্চে শুভেন্দু অধিকারী। রবিবার রাজারামচকে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২০ ০৪:২৮
Share: Save:

নীল-সাদা শামিয়ানায় বিজয়া সম্মিলনী করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রবিবার পরিবহণমন্ত্রী হিসেবে নন্দীগ্রামে সরকারি ম়ঞ্চে দাঁড়ালেন শুভেন্দু অধিকারী। তবে সেখানে তিনি আগাগোড়াই রইলেন মাপা। তাঁর দফতরের বরাদ্দ করা টাকায় হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের মাধ্যমে রূপায়িত পথবাতি প্রকল্পের উদ্বোধনের ওই কর্মসূচিতে কোনও রাজনৈতিক মন্তব্যই করেননি শুভেন্দু। মনে করিয়ে দিয়েছেন, তিনি সাংসদ হওয়ার পর থেকে নন্দীগ্রামের উন্নয়ন অব্যাহত। মঞ্চের পিছনে ব্যানারে উজ্জ্বল ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় প্রকল্প রূপায়ণের কথা। মঞ্চে উপস্থিত সরকারি আধিকারিকদের শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন শুভেন্দু।

তবে শুভেন্দুকে নিয়ে গুঞ্জন তাতে আদৌ স্তিমিত হয়নি। বরং বিষয়টিকে আরও এগিয়ে দিতে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ দিন বলেছেন, তৃণমূলে বড় বিস্ফোরণ আসন্ন। শুভেন্দুর দলবদল সম্পর্কে নির্দিষ্ট ভাবে কিছু না বললেও তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমরা দরজা বড় করে রেখেছি সবাইকে নেওয়ার জন্য। কোনও রাজনীতিবিদ যদি রাজনীতি করতে চান, বিজেপি সুযোগ দেবে।’’ সেই সঙ্গেই তাঁর দাবি, ‘‘শুভেন্দুর সঙ্গে আমার কোনও কথা হয়নি। তবে বিধায়কেরা অনেকেই যোগাযোগ করেছেন। আমরা তাঁদের বলেছি, আপনারা প্রস্তুতি নিন। যে দিন আসবেন, আপনাদের গ্রহণ করব। যে কোনও সময়ে এটা হতে পারে।’’

দিলীপবাবুর এই বিস্ফোরণ তত্ত্বকে অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। দলের এক শীর্ষ নেতার বক্তব্য, ‘‘কালীপুজো-দেওয়ালির সময় ও রকম দু’-একটা বাজি-পটকা ফাটে। দু’দিনেই সে সবের রেশ মিলিয়ে যায়। আর বিস্ফোরণের ভয় তৃণমূল পায় না। কারণ তৃণমূল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে লড়াই করে বড় হয়েছে। তৃণমূল লড়তে জানে, জিততে জানে। কারণ মানুষ তার শক্তি। যাঁরা এখানে ভুঁইফোঁড় রাজনীতি করতে এসেছেন, তাঁরা সব দু’দিনের পাখি। কালীপুজোর বাজির মতো মিলিয়ে যাবেন।’’

আরও পড়ুন: বাজি বিক্রি নয়, সিদ্ধান্তে কালিকাপুর বাজিবাজার​

এরই মধ্যে রাজ্য বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ-পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেননকে নিয়ে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে একটি মন্দিরে পুজো দিতে যান সাংসদ তথা দলের যুব মোর্চার রাজ্য় সভাপতি সৌমিত্র খান। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারী মানুষের জন্য কাজ করতে চান। অবিলম্বে সিদ্ধান্ত নিয়ে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জন্য এই মন্দির চত্বরে দাঁড়িয়ে তাঁকে আবেদন জানালাম।’’

অন্য দিকে, নন্দীগ্রামে এ দিন শুভেন্দুর মিনিট পনেরোর বক্তব্যের আগাগোড়া জুড়েই ছিল জমি আন্দোলনের সময় থেকে নন্দীগ্রামের প্রতি তাঁর আবেগ ও দায়বদ্ধতার কথা। তিনি মনে করিয়েছেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে সব ধর্মীয় অনুষ্ঠানে তিনি নন্দীগ্রামে হাজির থাকেন। শুভেন্দুর কথায়, ‘‘প্রতি সপ্তাহে প্রতিদিন নন্দীগ্রামে উপস্থিত হতে পারি না। কিন্তু দায়িত্ব পালন করেছি। নন্দীগ্রামের মানুষের পাশে থেকেছি।’’ বক্তৃতায় অবশ্য এক বারও মুখ্যমন্ত্রীর নাম নেননি শুভেন্দু।
অধিকারীদের ‘প্রতিপক্ষ’ বলে পরিচিত তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর অখিল গিরির কটাক্ষ, ‘‘রাজ্য সরকার ও দলের পদে থেকে উনি সরকারের সমালোচনা করছেন। কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে কোনও কথা বলছেন না। এমন সব মন্তব্য করছেন যাতে দলের নেতা-কর্মীরা বিভ্রান্ত হচ্ছেন। জেলা নেতৃত্বের মধ্যে বিভাজনের চেষ্টা করছেন। দল ভাঙার চেষ্টা করছেন। ক্ষমতা থাকে তো দলের ও সরকারের পদ ছেড়ে কথা বলুন।’’

আরও পড়ুন: এ বার যাত্রী প্রত্যাখ্যানের রোগ বাইক ট্যাক্সিতেও

তৃণমূলের নন্দীগ্রাম বিধানসভা কমিটির চেয়ারম্যান মেঘনাদ পালের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘সরকারি অনুষ্ঠানে আমার নিমন্ত্রণ ছিল না। মন্ত্রী অনুষ্ঠানে কী বলেছেন সে নিয়ে মন্তব্য করতে পারব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE