E-Paper

নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়ানো শিক্ষকের স্বেচ্ছাবসরে বিতর্ক

মালদহের ইংরেজবাজারের রায়গ্রাম হাই স্কুলে বিজ্ঞানের শিক্ষক ছিলেন স্বপন। গত এপ্রিলে তিনি স্বেচ্ছাবসরের জন্য রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতরে আবেদন করেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০২৫ ০৯:৩৮
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

শিক্ষায় নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েও জামিন পেয়ে স্কুলে ফিরেছিলেন মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক ও ইতিহাসের শিক্ষক জীবনকৃষ্ণ সাহা। কিন্তু মালদহের ইংরেজবাজারের রায়গ্রাম হাই স্কুলের শিক্ষক তথা তৃণমূল নেতা স্বপন মিশ্র নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়ানোর পর থেকে নিরুদ্দেশ! সম্প্রতি ইডি-র হাতে জীবনকৃষ্ণ ফের গ্রেফতার হতে, সেই স্বপনের স্বেচ্ছাবসরের (ভিআরএস) আবেদন মঞ্জুর হল কী করে, সে প্রশ্নে সরগরম মালদহ। তবে স্বপনের নামে লিখিত অভিযোগ নেই বলে দাবি পুলিশ-প্রশাসনের।

মালদহের ইংরেজবাজারের রায়গ্রাম হাই স্কুলে বিজ্ঞানের শিক্ষক ছিলেন স্বপন। গত এপ্রিলে তিনি স্বেচ্ছাবসরের জন্য রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতরে আবেদন করেন। সম্প্রতি তা গৃহীত হওয়ার খবর জানাজানি হয়। স্কুলের প্রধান শিক্ষক উত্তমকুমার কর্মকার বলেন, “ওঁর চাকরির মেয়াদ আরও তিন বছর ছিল। তবে অনেক আগে থেকেই স্কুলে আসা ছেড়ে দিয়েছিলেন।’’

মোথাবাড়ির বাঙিটোলার বাসিন্দা হলেও ইংরেজবাজার শহরের রিজেন্ট পার্কে নিজস্ব বাড়ি তৈরি করেছিলেন স্বপন। ২০১৯ সালে মালদহ জেলা পরিষদ এবং ২০১৩ সালে ইংরেজবাজার পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের সদস্য হন। ২০১৪ সালে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানও ছিলেন।

প্রাথমিকে চাকরি, রেশনের ডিলারশিপ করে দেওয়ার নামে স্বপন কোটি কোটি টাকা তুলে ছিলেন বলে অভিযোগ। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মানিক ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠ হিসাবেও পরিচিত ছিলেন তিনি। ২০২৩-এর শেষ দিক থেকে কলেজ পড়ুয়া ছেলে, স্ত্রীকে নিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যান স্বপন। টাকা ফেরত চেয়ে স্বপনকে মারধরের একটি ভিডিয়ো বছর খানেক আগে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়েছিল। ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, বাড়ি ও আমবাগান বিক্রি করে বিভিন্ন জনের থেকে নেওয়া টাকার কিছুটা ফেরত দিয়েছেন এই প্রাক্তন শিক্ষক। এখনও প্রচুর টাকা বকেয়া।

জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) বাণীব্রত দাস বলেন, “আমি জেলায় দায়িত্ব নেওয়ার আগেই উনি ভিআরএসের আবেদন করেছিলেন। পরে সেই সংক্রান্ত চিঠি পেয়েছি।” তবে শিক্ষা দফতরের একাংশের দাবি, স্বপনের আবেদন গৃহীত কী করে হল তা নিয়ে ধোঁয়াশা আছে। কারণ, তিনি জেলায় কয়েক বছর ধরে নিখোঁজ। শিক্ষা দফতরের একটি সূত্র অবশ্য জানাচ্ছে, স্বপন কলকাতায় মধ্য শিক্ষা পর্ষদে স্বেচ্ছাবসরের আবেদন করেছিলেন।

বিজেপির দক্ষিণ মালদহের সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “নিয়োগ-দুর্নীতিতে স্বপন মিশ্রকে ধরা হলে, জেলার তৃণমূলের আরও বড় বড় নাম সামনে আসবে। তাই কি তাঁকে স্বেচ্ছাবসর নিয়ে গা-ঢাকা দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হল?” তৃণমূলের জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী বলেন, “স্বপন দলের পদে নেই। অভিযোগ থাকলে, প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Malda

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy