এগিয়ে আসছে সময়। ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ (আপাস) কর্মসূচিতে জেলা প্রশাসনগুলির উপর বাড়ছে অর্থের চাপ। এই অবস্থায় স্বল্প পরিমাণে টাকা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অর্থ দফতর। সোমবার থেকে জেলাগুলিকে পরিকল্পনা-পরিসংখ্যান দফতরের মাধ্যমে অর্থ দেওয়া শুরু হয়েছে। তবে কর্মসূচির যা ব্যাপ্তি এবং খরচের বোঝা, তাতে ৮০ হাজার বুথে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সব কাজ শেষ করা যাবে কি না, তা নিশ্চিত করতে পারছে না জেলা প্রশাসনগুলি।
সোমবার রাত পর্যন্ত ২৩টির মধ্যে যে ১২টি জেলাকে অর্থ দেওয়ার তথ্য মিলেছে, তার সম্মিলিত পরিমাণ প্রায় ৩৪ কোটি টাকা। আগে নবান্নই জানিয়েছিল, রাজ্যের প্রায় ৮০ হাজার বুথে এই কর্মসূচির এক-একটিতে খরচের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ১০ লক্ষ টাকা করে। সব মিলিয়ে খরচের বোঝা প্রায় আট হাজার কোটি টাকা। সেই হিসেবে সে দিন পর্যন্ত যা বরাদ্দ হয়েছে, তাতে কমবেশি ৩৩৮টি ব্লকে আপাস শিবিরে সিদ্ধান্ত হওয়া কাজগুলি করা সম্ভব। মঙ্গলবারও অবশ্য বরাদ্দ দেওয়ার কাজ হয়েছে। সূত্রের দাবি, এ দিন পর্যন্ত তা ৭০ কোটি টাকা ছাপিয়ে যেতে পারে।
আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, আগামী বছর ভোটের আগে তড়িঘড়ি এমন কর্মসূচির নেপথ্যে ভোটকুশলী একটি বেসরকারি সংস্থার মাথা কাজ করেছিল। কিন্তু রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আসেনি। এমন আংশিক বরাদ্দে তারই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে।
তবে প্রশাসনের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘যে প্রকল্পগুলি বাছাই এবং চূড়ান্ত হচ্ছে, সেগুলির মধ্যে যাদের টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ, সেগুলির নিরিখেবরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। এ ভাবেই অর্থ দেওয়া হয়। এ নিয়ে ভিন্ন চর্চার অবকাশনেই।’’ যদিও প্রশাসনিক সূত্রেরই দাবি,আপাসের বরাদ্দ নিশ্চিত করতে শুরুতেকেন্দ্রের পঞ্চদশ অর্থ কমিশন, জলজীবন মিশন ও স্বচ্ছ ভারত মিশনেরতহবিল ব্যবহারের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু সেই বরাদ্দ আটকে থাকায় তা সম্ভব হয়নি। তারপর থেকেতহবিল জোগাড়ের নিজস্ব চেষ্টা শুরু হয়। জেলা প্রশাসনগুলিকে জানিয়ে দেওয়া হয়, অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজগুলি বেছে নেওয়া হোক। সেরে রাখা হোক দরপত্র প্রক্রিয়া। অর্থের অনুমোদন দেওয়া হলে তার পরে কাজের বরাত দেওয়া হোক।
সরকারি সময়সূচি অনুযায়ী, ২ অগস্ট থেকে শুরু হওয়া আপাস এবং দুয়ারে সরকার ৩ নভেম্বর পর্যন্ত চলার কথা। বাছাই করা প্রকল্পগুলি ১৫ নভেম্বরের মধ্যে চূড়ান্ত করার কথা। ১৫ জানুয়ারির মধ্যে কাজ শুরু বা শেষ করে ফেলতে হবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)