E-Paper

কেষ্ট-তালুকে শাহের সভায় ভিড় নিয়ে তরজা

সেখানে পৌঁছেই সার্কিট হাউস সংলগ্ন সিধো-কানহু ভবনে গিয়ে বি আর অম্বেডকর এবং সিধো-কানহুর মূর্তিতে মাল্যদান করেন শাহ। এর পরে সার্কিট হাউসে মধ্যাহ্নভোজন সারেন তিনি।

দয়াল সেনগুপ্ত  , সৌরভ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২৩ ০৭:১৮
সভা শেষে নেতাদের ছবি সংবলিত ফ্লেক্স নিয়ে ফিরছেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়

সভা শেষে নেতাদের ছবি সংবলিত ফ্লেক্স নিয়ে ফিরছেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়

একাধিকবার বাতিল হওয়ার পর শেষ পর্যন্ত চৈত্র সংক্রান্তিতে সিউড়িতে হল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের জনসভা। তাই শুক্রবার শাহের সফর ঘিরে চূড়ান্ত উদ্দীপনা ছিল গেরুয়া শিবিরের। যদিও সভার ভিড় নিয়ে তরজা শুরু হয়েছে বিজেপি-তৃণমূলের।

এ দিন সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন আসতে শুরু করেন সিউড়ির বেণীমাধব ইনস্টিটিউশনের মাঠে, সভাস্থলের উদ্দেশে। পড়শি জেলা মুর্শিদাবাদ, দুই বর্ধমান এমনকি ঝাড়খণ্ড থেকেও এ দিন মানুষজন এসে ছিলেন অমিত শাহকে দেখতে। বিজেপির তরফ থেকে গোটা শহর ঢেকে দেওয়া হয় শাহের ছবি সংবলিত পোস্টার ও দলীয় পতাকায়। শাহ ও নরেন্দ্র মোদীর মুখোশ পরেও অনেককে এ দিনের সভায় আসতে দেখা যায়। নির্ধারিত সময়ের প্রায় ৩০ মিনিট দেরিতে সিউড়িতে এসে পৌঁছয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হেলিকপ্টার। সেখানে তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে হাজির ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার, রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়, বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ধ্রুব সাহা, বিজেপি বিধায়ক অনুপ সাহা সহ দলের জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের অনেকেই। হেলিকপ্টারে শাহের সঙ্গেই ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

হেলিপ্যাড থেকে সরাসরি বীরভূম জেলা সার্কিট হাউসে যায় শাহের কনভয়। সেখানে পৌঁছেই সার্কিট হাউস সংলগ্ন সিধো-কানহু ভবনে গিয়ে বি আর অম্বেডকর এবং সিধো-কানহুর মূর্তিতে মাল্যদান করেন শাহ। এর পরে সার্কিট হাউসে মধ্যাহ্নভোজন সারেন তিনি। সেখান থেকে সরাসরি জনসভার মঞ্চে পৌঁছন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। জনসভা শুরুর পরেও মাঠের উদ্দেশ্যে লোকজনের যাওয়ার কোনও বিরাম ছিল না। মাঠের পাশাপাশি রাস্তার দুই ধারেও ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। জনসভা শেষ করে সিউড়িতে, বিজেপির নবনির্মিত জেলা কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন শাহ। সেখানে লোকসভার কোর কমিটির সঙ্গে বৈঠকও করেন তিনি।

চৈত্র সংক্রান্তি ও তাপপ্রবাহ উপেক্ষা করে মাঠে জমায়েত নিয়ে একটু চিন্তা ছিল বিজেপি নেতৃত্বের। তাঁদের দাবি, সাড়ে তিনশো বাস ও ছোটগাড়িতে করে আনা হয়েছিল হাজার হাজার কর্মী সমর্থককে। মাঠ পুরোপুরি গিয়েছিল। লক্ষ্য ছিল ত্রিশ হাজার। স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে সকলে আসায় সেই লক্ষ্য পুরণ হয়েছে। মহিলাদের উপস্থিতি ছিল নজরকাড়া। অন্য দিকে, জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী বলছেন, ‘‘আমাদের কাছে যা হিসেব, তাতে সভা ও রাস্তা মিলিয়ে বড়জোড় ৭-৮ হাজার লোক ছিল সভায়। সেটাও ভিন জেলা এবং পড়শি রাজ্য থেকে। আবার জেলা পুলিশের একটি সূত্র বলছে, সভায় লোক হয়েছিল ১০ -১৫ হাজার।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে এ দিন সকাল থেকে সিউড়িতে বিশেষ পুলিশি নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। জেলার সিভিক ভলান্টিয়ারদের পাশাপাশি জেলা ও ভিন্ জেলার বিভিন্ন থানা থেকে প্রায় ৫৫০ কনস্টেবলকে এ দিন সিউড়িতে মোতায়েন করা হয়েছিল। বিভিন্ন জেলা থেকে ডিআইজি, ডিএসপি পদমর্যাদার পুলিশ আধিকারিকেরাও এসেছিলেন নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে। অন্য দিকে শহরের যানচলাচল স্বাভাবিক রাখতে জনসভায় আসা বাস ও গাড়ি রাখার জন্য লম্বোদরপুরের মাঠ এবং বিজেপির জেলা কার্যালয়ে আসা গাড়ির জন্য কড়িধ্যার মাঠে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছিল জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে। সার্কিট হাউস, বেণীমাধব মাঠ এবং বিজেপির জেলা কার্যালয়ে যতক্ষণ অমিত শাহ ছিলেন, ততক্ষণ সেই সমস্ত রাস্তায় যান চলাচল সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। হেলিপ্যাড থেকে অমিত শাহের কনভয়ের সঙ্গে একটি বাইক মিছিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিজেপির একাংশ। নিরাপত্তার কারণে সেই মিছিলও আটকে দেওয়া হয়।

ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ফলে সিউড়ির বিভিন্ন রাস্তায় যানজট পরিস্থিতিও সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি জনসভার কারণে প্রায় ৩৫০ বাস তুলে নেওয়ায় সকাল থেকেই সিউড়িতে যাতায়াতের সমস্যা দেখা দেয়। অনেকেই সময়ে নিজের গন্তব্যে পৌঁছতে পারেননিবলে অভিযোগ।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Suri Amit Shah Anubrata Mondal BJP TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy