Advertisement
২৮ মার্চ ২০২৩
Dilip Ghosh

রাজ্য সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দিলীপকে কেন্দ্রে মন্ত্রী করা হতে পারে? শুরু জল্পনা

দিলীপবাবুর মতো যাঁরা সংগঠনের শীর্ষে বসেন, তাঁরা মূলত সঙ্ঘ পরিবারের। তা ছাড়া, দলে ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি বজায় রাখার প্রবণতা বেড়েছে।

বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২১ ০৫:৫৮
Share: Save:

কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় রদবদলের সম্ভাবনা সামনে আসার পরেই বঙ্গ বিজেপিতে নতুন জল্পনা শুরু হয়েছে। যার কেন্দ্রে মূলত দিলীপ ঘোষ।

Advertisement

রাজ্যে নির্বাচনী ধাক্কার পরে রাজ্য সভাপতি পদে দিলীপবাবু থাকবেন কি না, এই প্রশ্ন কিছু দিন ধরেই বিজেপি মহলে ঘুরছে। যদিও দিলীপবাবু এ সব বিষয়কে এখনও আমলই দিতে চান না। তবে দলের একাংশের ধারণা, শুভেন্দু অধিকারী নন্দীগ্রামে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়ে দেওয়ার পরে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে যে ভাবে ‘গুরুত্ব’ পাচ্ছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সংগঠনে রদবদলের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

সে ক্ষেত্রে দিলীপবাবু সরলে শুভেন্দুকে রাজ্য সভাপতি করা হবে কি না, সেই প্রশ্নে মতভেদ আছে। দলের একটি বড় অংশ মনে করেন, ভোটে জেতা আর দলের সাংগঠনিক শীর্ষে বসা-- সঙ্ঘ পরিবারের চোখে দু’টি আলাদা। দিলীপবাবুর মতো যাঁরা সংগঠনের শীর্ষে বসেন, তাঁরা মূলত সঙ্ঘ পরিবারের। তা ছাড়া, দলে ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি বজায় রাখার প্রবণতা বেড়েছে।

কিন্তু দিলীপবাবুকে রাজ্য সভাপতির পদ থেকে সরানো হবে না, তেমন কথাও নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না। তাতেই প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি দিলীপবাবুকে কেন্দ্রে মন্ত্রী করা হতে পারে?

Advertisement

২০১৯-এ বিজেপি রাজ্যে ১৮টি লোকসভা আসন জেতার পরেও সম্ভাব্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসাবে তাঁর নাম নিয়ে বিস্তর চর্চা হয়। তবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পুরনো প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে

দ্বিতীয় দফাতেও রাখেন। সঙ্গে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হিসাবে যুক্ত করেন দেবশ্রী চৌধুরীকে। রাজ্য কোনও পূর্ণ মন্ত্রী পায়নি। মন্ত্রিত্ব নিয়ে প্রশ্নে দিলীপবাবুর সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমাকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করা হবে, এই কথাটা আমাকে আগেও কেউ বলেননি, এখনও বলছেন না।’’

অন্য দিকে, রাজ্যের তিন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ, অর্জুন সিংহ, নিশীথ প্রামাণিক দিল্লিতে কেন ‘ঘাঁটি’ গেড়ে বসে রইলেন, আলোচনা চলছে তা নিয়েও। তাঁরা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টাও করেন।

রবিবার দিল্লির খবর, বাকিরা ফিরে গেলেও সৌমিত্র এ দিনও রাজধানীতে আছেন। সূত্রের মতে, বঙ্গ বিজেপির ভাঙন রুখতে ও কর্মীদের মনোবল বাড়াতে উত্তরবঙ্গ থেকে মন্ত্রিসভায় প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর কথা ভাবা হচ্ছে। সেই কারণে কিছুটা হলেও দৌড়ে এগিয়ে নিশীথ। প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে পূর্ণমন্ত্রী করার বিষয়টিও ভাবনায় আছে।

তবে বিজেপি-র একটি সূত্রের বক্তব্য, যে সব সাংসদকে রাজ্যে বিধানসভার প্রার্থী করা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে জিতেছেন মাত্র দু’জন। কোচবিহারে নিশীথ, নদিয়ায় জগন্নাথ সরকার। তবে তাঁরা বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়ে সাংসদই রয়েছেন। বিধানসভায় বাবুল-সহ বিজেপির আর কোনও সাংসদ প্রার্থী জেতেননি। সে ক্ষেত্রে যাঁরা বিধানসভায় জিততে পারেননি, তাঁদের ‘জোরের’ জায়গা একটু কমার সম্ভাবনা। সেই তালিকায় বাবুলও ব্যতিক্রম নন।সে ক্ষেত্রেও দিলীপবাবুর নাম চর্চায় এসে পড়ছে। কারণ, তিনি সাংসদ, রাজ্য সভাপতি এবং বিধানসভা ভোটে দাঁড়াননি।

যদি দিলীপবাবুকে কেন্দ্রে মন্ত্রী করা হয়, তা হলে রাজ্য সভাপতি পদের দাবিদার কারা? দলীয় সূত্রের খবর, সেখানেও প্রত্যাশীর সংখ্যা বড় কম নয়। তাতে বর্তমান কমিটির একাধিক সাধারণ সম্পাদক এবং সহ সভাপতি আছেন বলে আভাস মি‌লছে। তবে সবটাই নির্ভর করবে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, তার উপরে।

রাজ্য সংগঠনে যাঁরা দিলীপবাবুর ‘সমালোচক’ বলে পরিচিত, তাঁরা স্বাভাবিক ভাবেই তাঁকে সরানোর জন্য তাঁর উপরে রাজ্যের নির্বাচনী বিপর্যয়ের দায় চাপানো থেকে শুরু করে তাঁর ভাষা ব্যবহার ইত্যাদি বহু অভিযোগই তুলছেন। পাশাপাশি, দিলীপ-সমর্থকদের যুক্তি, নির্বাচন পরিচালনার লাগাম ছিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের হাতে। প্রার্থী বাছাইতেও রাজ্যের ভূমিকা ছিল কার্যত নগণ্য। তাই দল ‘বাঁচাতে’ সভাপতি বদলের ভাবনা যুক্তিগ্রাহ্য নয়। অবশ্য দিলীপবাবুকে কেন্দ্রে মন্ত্রী করা হলে তাঁর ঘনিষ্ঠদের বিশেষ আপত্তি থাকবে, তেমন ইঙ্গিত এখনও পাওয়া যাচ্ছে না। বরং, এটাও বলা হচ্ছে, তাঁর মতো লোক কেন্দ্রে মন্ত্রী হলে রাজ্য সংগঠনেও তার প্রভাব পড়তে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.