Advertisement
০৭ ডিসেম্বর ২০২৩
West Bengal SSC Scam

পনির ছাড়াই পনির বাটার মসালা বানাচ্ছে সিবিআই! নিয়োগ মামলার শুনানিতে কেন বললেন বিচারক?

জামিন চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিলেন অভিযুক্তেরা। সিবিআইয়ের তদন্ত নিয়ে প্রশ্নও তোলেন তাঁরা। আত্মপক্ষ সমর্থনে তদন্তকারী সংস্থা পাল্টা যুক্তি দিলে সেই যুক্তি খারিজ করে দেয় আদালত।

Court says CBI cooking panir butter masala without panir.

সিবিআই তদন্তকে পনিরহীন পনির বাটার মসালার সঙ্গে তুলনা করেছেন বিচারক। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৪:৪১
Share: Save:

গল্প আছে অথচ মূল চরিত্রেরই দেখা নেই!— নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সিবিআই তদন্তকে কিছুটা এ ভাবেই বিঁধল আদালত। স্কুল নিয়োগ দুর্নীতিতে সম্প্রতিই তাপস মণ্ডল, নীলাদ্রি ঘোষ, আব্দুল খালেক-সহ বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। তাঁদের হেফাজতে চেয়ে সোমবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা আদালতে গেলে সিবিআইয়ের তদন্তের ধরন নিয়েই প্রশ্ন তোলেন বিচারক। তিনি বলেন, ‘‘সিবিআই পনির বাটার মসালা বানাবে ভাবছে অথচ পনিরই নেই তাদের কাছে!’’ অর্থাৎ সম্ভবত বোঝাতে চাইলেন, সিবিআই তদন্তের আসল জায়গাতেই বড় ফাঁক রয়ে গিয়েছে।

আদালতে তখন গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্তরা নিজেদের জামিনের দাবিতে সওয়াল করছেন। উপস্থিত ছিলেন, তাপস, কুন্তল, নীলাদ্রি, আব্দুল, শাহি ইমাম, আলি ইমাম এবং কৌশিক ঘোষের আইনজীবীরা। কেউ বলছিলেন, তদন্তে সহযোগিতার পরও তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আবার কারও আইনজীবীর দাবি, তাঁদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ না পাওয়া সত্ত্বেও গ্রেফতার করেছে সিবিআই। সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে সেই সময় সরাসরিই প্রশ্ন তোলেন আব্দুল খালেকের আইনজীবী। তিনি বলেন, তাঁর মক্কেলকে তিন দিন হেফাজতে নিয়ে রাখলেও সিবিআই নতুন কিছু দেখাতে পারেনি। বাড়ি থেকে একটি মোবাইল এবং ল্যাপটপই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে শুধু। কিন্তু সরাসরি যোগের কোনও তথ্যই দেখাতে পারেনি সিবিআই। এর জবাবে আত্মপক্ষ সমর্থনে তদন্তকারী অফিসার পাল্টা যুক্তি দেখাতে গেলে সেই যুক্তিই খারিজ করে দেয় আদালত।

খালেকের অভিযোগ প্রসঙ্গে সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেছিলেন, ‘‘একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগ দুর্নীতিতে খালেকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। বেশ কয়েক জন চাকরিপ্রার্থীর হয়ে সুপারিশপত্র পাঠিয়েছিলেন।’’ এসএসসির সুপারিশ সংক্রান্ত বিষয়ের দায়িত্বে ছিল উপদেষ্টা কমিটি। সেই কমিটির প্রধান ছিলেন শান্তিপ্রসাদ সিনহা। সিবিআই তাদের হেফাজতের দাবিতে বলতে চেয়েছিল, শান্তিপ্রসাদের সঙ্গেই খালেকের যোগাযোগ ছিল। যা শুনে বিচারক বলেন, ‘‘এসপি সিনহাকে টাকা দেওয়ার কথা বলছেন, কিন্তু তাঁকেই তো এই মামলায় আপনারা হেফাজতে নেননি। পনির বাটার মসালা বানাবেন ভাবছেন, পনিরই নেই আপনার কাছে…!’’

নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে এর আগেও প্রশ্ন তুলেছে, নগর দায়রা আদালত এমনকি কলকাতা হাই কোর্টও। সোমবার অবশ্য আদালতের প্রশ্নের জবাবে সিবিআই পাল্টা বলে, ‘‘আমাদের তদন্তের বিষয় হল কোন পথে টাকা এসেছে, কাদের দেওয়া হয়েছে, কার থেকে নেওয়া হয়েছে, তা খুঁজে বার করা। অভিযুক্তদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে সেই তদন্তের স্বার্থেই।’’

সোমবার মামলার শুনানির পর তাপস, কুন্তল এবং নীলাদ্রিকে ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সিবিআই হেফাজত এবং বাকিদের ২ মার্চ পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE