‘দাগি অযোগ্য’দের তালিকায় নাম থাকা আবেদনকারীদের অ্যাডমিট কার্ড বাতিল করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। শুধু তা-ই নয়, আবেদনে ত্রুটি থাকায় ঝাড়াই-বাছাই পর্বে বাদ পড়েছে আরও অনেক নাম। এ ছাড়া, আরও নানা কারণে অনেক আবেদনকারীর আবেদনপত্রও বাতিল করেছে এসএসসি। নতুন নিয়োগপরীক্ষায় যোগ দেওয়ার জন্য আবেদনকারীদের মধ্যে সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ২০ হাজার আবেদনপত্র বাতিল হয়েছে বলে এসএসসি সূত্রে খবর।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে গত ৩০ অগস্ট ‘দাগি অযোগ্য’দের তালিকা প্রকাশ করে। সেই তালিকায় নাম ছিল ১৮০৬ জনের। কমিশন সূত্রে জানা যায়, তাঁদের মধ্যে অনেকেই নতুন নিয়োগপরীক্ষায় বসতে চেয়ে আবেদন করেছিলেন। তবে শীর্ষ আদালতের স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে, ‘দাগি অযোগ্য’রা আর পরীক্ষায় বসতে পারবেন না। সেই কারণে তালিকায় নাম থাকা আবেদনকারীদের বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে কমিশন। এসএসসি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, মোট ১৪০০ ‘দাগি অযোগ্যে’র অ্যাডমিট কার্ড তারা বাতিল করেছে।
শুধু তা-ই নয়, আরও বেশ কয়েক জন আবেদনকারীর আবেদনপত্রও বাতিল করা হয়েছে। কমিশন সূত্রে খবর, প্রথমে আবেদনকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল পাঁচ লক্ষ ৮৫ হাজার। তবে ঝাড়াই-বাছাইয়ের পর সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচ লক্ষ ৬৫ হাজার। অনেকের মনে প্রশ্ন, যদি ১৪০০ ‘দাগি অযোগ্যে’র অ্যাডমিট কার্ড এসএসসি শুধু বাতিল করে, তবে কী ভাবে ২০ হাজার আবেদনপত্র বাদ পড়ল? এ বিষয়ে কমিশনের ওই কর্তার ব্যাখ্যা, অনেক ক্ষেত্রে একই ‘দাগি অযোগ্য’ চাকরিপ্রার্থী নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ উভয় স্তরের জন্যই আবেদন করেছিলেন। তাই মোট ‘দাগি অযোগ্যে’র সংখ্যার তুলনায় বাতিল হওয়া অ্যাডমিট কার্ডের সংখ্যা বেশি।
এ ছাড়াও, ভুল তথ্য দেওয়া, আবেদনপত্রের সঙ্গে প্রয়োজনীয় নথি না দেওয়ার মতো ঘটনাও রয়েছে। সেই সব বিষয় খতিয়ে দেখে এসএসসি আবেদনপত্র বাতিল করেছে। সেই সংখ্যাটাও কম নয় বলে খবর কমিশন সূত্রে।
আরও পড়ুন:
অন্য দিকে, ‘দাগি অযোগ্য’দের তালিকায় থাকা চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগপত্র বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করল রাজ্য। শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, নিয়োগপত্র বাতিলের জন্য আইনি মতামত নেওয়াও হচ্ছে। পাশাপাশি, তাঁদের বেতনের টাকা কী ভাবে ফেরত নেওয়া সম্ভব, সেই বিষয়েও আলোচনা চলছে। নেওয়া হচ্ছে আইনি পরামর্শও। প্রশ্ন উঠছে, ‘দাগি অযোগ্য’দের নিয়োগপত্র বাতিল হলে, ‘যোগ্য’দের কেন হবে না? কমিশনের এক কর্তার মতে, সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ ছিল, ‘দাগি অযোগ্য’দের তালিকা প্রকাশ করে তাঁদের নিয়োগ বাতিল করার। সেই সঙ্গে বেতন ফেরত দেওয়ার বিষয়ও ছিল। সেইমতো প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে আদালত এ-ও জানিয়েছিল, ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চাকরি ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বহাল থাকবে। তার মধ্যে রাজ্য সরকারকে পরীক্ষা নিয়ে নতুন নিয়োগ করতে হবে। সেই নিয়োগপরীক্ষায় বসতে পারবেন ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই চাকরি থাকবে তাঁদের। যে হেতু সুপ্রিম কোর্ট ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চাকরি থাকার কথা বলেছিল, সে হেতু এখনই তাঁদের নিয়োগপত্র বাতিল করা হচ্ছে না।