স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-র নিয়োগ প্রক্রিয়ার সময়সীমা বাড়াল সুপ্রিম কোর্ট। ৩১ ডিসেম্বরের পরিবর্তে আগামী ৩১ অগস্ট পর্যন্ত নিয়োগ প্রক্রিয়ার সময়সীমা বৃদ্ধি করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশের ফলে, আগামী ৩১ অগস্ট পর্যন্ত বেতন পাবেন ‘যোগ্য’ শিক্ষকেরা।
এর আগে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। ওই সময় পর্যন্ত ‘যোগ্য’ শিক্ষকেরা স্কুলে শিক্ষকতা করতে পারবেন। বেতনও পাবেন। তবে রাজ্য, এসএসসি এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে ওই সময়সীমাকে বৃদ্ধি করার জন্য় আবেদন জানানো হয় সুপ্রিম কোর্টে। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতেই এ বার পদক্ষেপ করল সুপ্রিম কোর্ট।
এ বিষয়ে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্য, এসএসসি এবং বোর্ড ছিল। আমরা নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রায় শেষ করে নিয়ে এসেছি। একাদশ-দ্বাদশের বাছাই প্রক্রিয়ায় ৭ জানুয়ারি আমরা চূড়ান্ত রেজ়াল্ট পাবলিশ করে দেব। ১৫ জানুয়ারি থেকে কাউন্সেলিং শুরু করে দেব। নবম-দশমের ক্ষেত্রে বাছাই প্রক্রিয়া শেষ হবে মার্চ মাসের মাঝামাঝি। তার পরে কাউন্সেলিং হবে। তাই অগস্টের শেষ পর্যন্ত সময়সীমা বৃদ্ধির আবেদন জানানো হয়েছিল।”
কল্যাণ আরও জানান, ওই আবেদনের ভিত্তিতে অগস্ট মাস পর্যন্ত সময়সীমা বৃদ্ধি করেছে সুপ্রিম কোর্ট। যাঁরা দাগি নন, এমন শিক্ষকেরা আগামী অগস্ট মাস পর্যন্ত কাজ করতে পারবেন বলেও জানান তিনি।
সুপ্রিম কোর্ট নিয়োগের সময়সীমা বৃদ্ধি করার পরে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেন রাজ্যের শিক্ষমন্ত্রী ব্রাত্য বসুও। এক্স হ্যান্ডলে তিনি লেখেন, ‘সর্বোচ্চ আদালত নিয়োগ প্রক্রিয়া ৩১ অগস্টের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছেন যা আমাদের রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঠিক দিক নির্দেশের প্রতি আস্থার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এই সময়সীমার মধ্যে আগের শিক্ষকরা আগের মতোই কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন। বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চের এই নির্দেশে পরিষ্কার ওয়েস্ট বেঙ্গল সেন্ট্রাল স্কুল সার্ভিস কমিশন স্বচ্ছতা এবং দায়বদ্ধতার সঠিক পথেই এগোচ্ছেন।’
সুপ্রিম কোর্টের বৃহস্পতিবারের নির্দেশের পরে ‘যোগ্য’ শিক্ষকদের অন্যতম প্রতিনিধি মেহবুব মণ্ডল বলেন, “যে সময়সীমা বৃদ্ধি হয়েছে, তা আমরা সদর্থক ভাবে দেখছি। এই সময়সীমা না বাড়লে যাঁরা গত পাঁচ বছর ধরে চাকরি করছিলেন, তাঁরা বেতনহীন হয়ে পড়তেন। আশা করব অগস্ট মাসের মধ্যে এসএসসি তাঁর নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে।”
‘যোগ্য’ শিক্ষকদের অপর প্রতিনিধি চিন্ময় মণ্ডলের কথায়, “এটি সাময়িক স্বস্তি।” তাঁর বক্তব্য, ৩১ ডিসেম্বরের পরে এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারত। আদালত সময়সীমা বৃদ্ধি করার ফলে সেটি হল না। চিন্ময় বলেন, “আমরা চাই চাকরির স্থায়িত্ব। আমরা নির্দোষ। প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির কারণে আমাদের চাকরি গিয়েছে। ‘যোগ্য’ হয়েও যাঁরা নথি যাচাইয়ে ডাক পেলেন না, তাঁদের আইন মেনে নিয়োগের ব্যবস্থা করুক সরকার। এক জন ‘যোগ্য’ও যেন বঞ্চিত না হন।”