Advertisement
E-Paper

ঋণের সুযোগ বাড়াতে সংশোধন আসছে আইনে

অর্থ দফতরের প্রাক্তন সচিব ও কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক সুখবিলাস বর্মার মতে, রাজ্যের ঋণের পরিমাণ ইতিমধ্যেই ৫ লক্ষ কোটি টাকার বেশি হয়ে গিয়েছে।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৬:২৩
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

ঋণ নেওয়ার ক্ষমতা আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে আইন সংশোধন করছে রাজ্য সরকার। বিধানসভার চলতি অধিবেশনেই আসতে চলেছে আর্থিক শৃঙ্খলা ও বাজেট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণ (এফআরবিএম) আইনের উপরে সংশোধনী বিল। তার ফলে এ বার রাজ্যের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিএসডিপি) ৪% পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবে রাজ্য সরকার। পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের সুপারিশ এবং তার পরে কেন্দ্রীয় সরকারের আরও একটি অনুমোদনের দৌলতে ঋণের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানো যাচ্ছে এবং সেই লক্ষ্যেই বিল আনা হচ্ছে বলে সরকার পক্ষের যুক্তি। বিরোধীদের অবশ্য অভিযোগ, ঋণের ভারে ইতিমধ্যেই কাহিল রাজ্য আরও আর্থিক বিশৃঙ্খলার দিকে এগোবে।

পরিষদীয় সূত্রের খবর, চলতি অধিবেশনেই পেশ হতে চলেছে ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ফিসক্যাল রেসপন্সিবিলিটি অ্যান্ড বাজেট ম্যানেজমেন্ট ( সেকেন্ড অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০২২’। বিধানসভায় আগামী ২০ সেপ্টেম্বর বিলটির উপরে দু’ঘণ্টা আলোচনার পরিকল্পনা রয়েছে। যদিও বিধায়কদের মধ্যে রীতিমাফিক এখনও বিল বিলি হয়নি। ওই সশোধনী বিলে বলা হয়েছে, রাজ্যে ২০১০ সালের এফআরবিএম আইন অনুযায়ী রাজ্যের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ৩% পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যেত। পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের জন্য ওই সীমা বেড়ে হয়েছে ৩.৫%। অর্থ কমিশনের ওই সুপারিশের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের ব্যয় বিভাগের কাছে দরবার করে ২০২১-২২ সালে বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের কাজের সুবাদে রাজ্য আরও ০.৫% অতিরিক্ত ঋণ নেওয়ার অনুমতি পেয়েছে। সব মিলিয়ে ঋণের অনুপাত দাঁড়াচ্ছে রাজ্যের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ৪%। এই পরিমাণ ঋণ নেওয়ার আইনি সংস্থান তৈরি করতেই এফআরবিএম আইন সংশোধন করা হচ্ছে। তবে তা আপাতত ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের জন্যই।

রাজ্যের অর্থ দফতরের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের ব্যাখ্যা, ‘‘অর্থ কমিশনের সুপারিশ ছিল। রাজ্য বাজেটে আমরা বিষয়টা উল্লেখ করেছিলাম। তার পরেও কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের অনুমোদন আছে। সব মিলিয়েই ঋণের অনুপাত ৪% করার জন্য বিল আনা হচ্ছে।’’ প্রধান বিরোধী দল বিজেপির অভিযোগ, আগে ঋণ নিয়েই বেহিসেবি খরচ করছে রাজ্য। এখন বাড়তি ঋণ নিয়েও তার অন্যথা হবে না। তবে অর্থ কমিশন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদনের যুক্তি রাজ্যের হাতে থাকায় বিজেপির পক্ষে সরাসরি সংঘাতে যাওয়ার বিড়ম্বনা আছে। দলের অর্থনীতিবিদ-বিধায়ক অশোক লাহিড়ীর পরামর্শ নিয়ে এই বিষয়ে তাদের অবস্থান চূড়ান্ত হবে।

অর্থ দফতরের প্রাক্তন সচিব ও কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক সুখবিলাস বর্মার মতে, রাজ্যের ঋণের পরিমাণ ইতিমধ্যেই ৫ লক্ষ কোটি টাকার বেশি হয়ে গিয়েছে। ঋণ নিয়েও উৎপাদন শিল্প বা গঠনমূলক কিছু রাজ্যে হয়নি। মেলা-খেলা-খয়রাতিতে টাকা খরচ হয়েছে। রাজ্যের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ৪% ধরলে যে টাকা আরও ঋণ হিসেবে রাজ্যের হাতে আসতে পারে, তাতে একই জিনিসের পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা থাকছে। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীরও বক্তব্য, ‘‘ঋণের বোঝা এমনিতেই বিপুল। খরচ মানে সব বেহিসেবি। বিল এনে হয়তো ঋণের আইনি সংস্থান পাওয়া যাবে কিন্তু বিষয়টা এগোবে সেই আর্থিক বিশৃঙ্খলার দিকেই।’’

FRBM Act Mamata Banerjee West Bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy