E-Paper

রাজ্যের ‘বাস্তব’ সেলিমের কলমে, আসছেন কারাট

আগামী ১৭ অক্টোবর কলকাতায় প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে দলের সাধারণ সভায় বক্তা হিসেবে আসছেন সিপিএমের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:০৫
md selim.

মহম্মদ সেলিম। —ফাইল চিত্র।

বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যই ভারতের বৈশিষ্ট্য। ঠিক সেই ভাবে রাজ্যভিত্তিক বৈচিত্র মাথায় রেখেই বিজেপি-বিরোধী লড়াইয়ে এগোতে হবে। সর্বভারতীয় কোনও আসন সমঝোতার মডেল গোটা দেশে প্রয়োগ করা সম্ভব নয়। বিজেপি-বিরোধিতায় ‘ইন্ডিয়া’ জোটে শামিল হলেও দলের এই রাজনৈতিক অবস্থান পুজোসংখ্যাতেও স্পষ্ট করে দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক ও পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম। তাঁর সাফ কথা, দেশ রক্ষা করার জন্য বিজেপিকে রোখা জরুরি। তেমনই বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসকে হারাতে না পারলে বিজেপিকে রোখা যাবে না, এটাই পশ্চিমবঙ্গের ‘বাস্তবতা’।

বাংলায় সিপিএমের দৈনিক মুখপত্রের শারদসংখ্যায় সেলিম এ বার বিজেপি ও তৃণমূলের কাজকর্ম পাশাপাশি তুলে ধরে সওয়াল করেছেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রাথমিক শর্ত হচ্ছে দুর্নীতিগ্রস্তদের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখা। সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়তে গেলে তেমনই দরকার সব রকমের সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে মুক্ত থাকা’। ওই শারদসংখ্যায় ‘বিজেপি-বিরোধী ঐক্য রাজ্যভিত্তিক বৈচিত্র স্বীকার করেই হবে’ শীর্ষক নিবন্ধে সেলিমের বক্তব্য: ‘দেশের বিজেপি-বিরোধী শক্তিগুলিকে পশ্চিমবঙ্গের বাস্তব অবস্থা নিয়ে ভাবিয়ে তুলতে হবে। তৃণমূল জন্মলগ্ন থেকেই বিজেপির সম্ভাব্য মিত্র (পোটেনশিয়াল অ্যালাই)। এখন তারা বিচ্ছিন্ন আছে, ভবিষ্যতে আবার সম্ভাব্য মিত্র হবে— ক্রমাগত তা পরিস্ফুট হচ্ছে। অন্যান্য বিজেপি-বিরোধী দলগুলির সবার নিজের নিজের রাজনীতি থাকতে পারে। তাই আমরা বলেছি, সর্বভারতীয় কোনও আসন সমঝোতার প্রশ্ন নেই। কারণ, তা বাস্তবসম্মত নয়’। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের দাবি, তাঁরা প্রথম থেকেই এই কথা বলে আসছেন এবং ‘ইন্ডিয়া’ জোট যাঁরা গঠন করেছেন, তাঁরাও এই ‘বাস্তব পরিস্থিতি’ মেনে নিচ্ছেন।

এ রাজ্যের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সেলিম আরও বলেছেন, ‘যাঁরা মনে করেছিলেন, নির্বাচনে অন্তত বাংলায় বিজেপিকে পরাস্ত করা গিয়েছে, তাঁরা দু’নয়ন মেলে এখন দেখতেই পারেন, তৃণমূলের লুট, দুর্নীতি এবং দুষ্কৃতী-রাজ কায়েম রাখার জন্য, আইনের হাত থেকে অপরাধীদের রক্ষা করার জন্য অবাধে সঙ্ঘ পরিবারের রাজনীতি কী ভাবে প্রতিদিন আমাদের সমাজ, সংস্কৃতি, সাহিত্য, সংস্কৃতিকে গ্রাস করছে’।

এই প্রেক্ষাপটেই আগামী ১৭ অক্টোবর কলকাতায় প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে দলের সাধারণ সভায় বক্তা হিসেবে আসছেন সিপিএমের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট। ভারতে কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠা দিবস হিসেবে ওই দিনটিই পালন করে সিপিএম। সেই উপলক্ষে ১৭ তারিখের সাধারণ সভায় বক্তৃতা করার কথা দলের রাজ্য সম্পাদক সেলিমেরও। সভাপতিত্ব করার কথা বিমান বসু। অতীতে প্রতিষ্ঠা দিবসের সভায় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বক্তা হয়েছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, সূর্যকান্ত মিশ্র, কারাট, সীতারাম ইয়েচুরিরা। সর্বভারতীয় স্তরে ‘ইন্ডিয়া’র মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতি এবং বাংলা ও কেরলের চাপে ‘ইন্ডিয়া’র সমন্বয় কমিটি থেকে সিপিএমের সরে থাকা, এ সবের জেরেই কি ইয়েচুরিকে ইদানিং বাংলায় দেখা যাচ্ছে না— এমন জল্পনা চলছে কোনও কোনও মহলে। দলীয় সূত্রে অবশ্য বলা হচ্ছে, প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানের সঙ্গে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের ঘটনাপ্রবাহের সম্পর্ক নেই। আগামী ৩ থেকে ৫ নভেম্বর সিপিএমের রাজ্য কমিটির বর্ধিত বিশেষ অধিবেশনে থাকতে পারেন ইয়েচুরি।

মুখপত্রের এ বারের শারদসংখ্যাতেই ‘হিন্দুত্ববাদী উপভাষ্যের মোকাবিলা’ প্রসঙ্গে ইয়েচুরি লিখেছেন, ‘ভারতকে চরম অসহিষ্ণু, ফ্যাসিবাদী ধাঁচের হিন্দুত্ব রাষ্ট্রে রূপান্তর করার প্রয়াস রুখতে হবে। তার পূর্বশর্ত হল সরকার এবং রাষ্ট্র ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ থেকে আরএসএস এবং বিজেপিকে দূরে রাখা’। সেখানে আলাদা করে বাংলা বা কোনও রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতির প্রসঙ্গে যাননি তিনি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Mohammed Salim CPM

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy