ফাইল চিত্র
কালিয়াচক সীমান্ত দিয়ে চিনা নাগরিক হান চুনওয়েই কেন এবং কী ভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছে, সেই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে তদন্তভার হাতে নিল রাজ্যের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। রাজ্য সরকার মঙ্গলবার দুপুরে জেলা পুলিশকে এই তদন্তের দায়িত্ব এসটিএফের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। এসটিএফ আজ, বুধবার মালদহ জেলা আদালতের মাধ্যমে হানকে হেফাজতে নেবে।
এসটিএফ জানিয়েছে, হানের অ্যাপল ল্যাপটপ ও আইফোনের পাসওয়ার্ড দেওয়া আছে উত্তর ও দক্ষিণ চিনের মান্দারিন ভাষায়। সেই ভাষাগত সমস্যা এবং হানের অসহযোগিতার ফলে ওই ল্যাপটপ, ফোন এখনও খোলা সম্ভব হয়নি। এই অবস্থায় গুগ্ল ট্রান্সলেটরের পাশাপাশি ভাষাবিদেরও সাহায্য নেওয়ার কথা ভাবছে এসটিএফ।
বিএসএফ বা সীমান্তরক্ষী বাহিনী গত বৃহস্পতিবার কালিয়াচকের মিলিক সুলতানপুরে হানকে আটক করে এবং তার প্রায় ২৪ ঘণ্টা পরে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ হানকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তদন্ত শুরু করে। ইতিমধ্যে তাকে সীমান্তে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণও করেছে তারা। পুলিশের দাবি, পুনর্নির্মাণে এটা স্পষ্ট যে, হান ভুল করে জমি, নদী পেরিয়ে ভারতে আসেনি। ছক কষেই সে এ দেশে ঢুকেছে। তাকে সীমান্তে পৌঁছে দিতে ও-পারের মতো এ-পারেও কোনও ‘গাইড’ সহযোগিতা করে থাকতে পারে বলে গোয়েন্দাদের সন্দেহ। কারণ, মিলিক সুলতানপুরে দু’দেশের উন্মুক্ত সীমান্তে প্রাচীর হয়ে রয়েছে মরা ভাগীরথী নদী। তার গভীরতা ৬-৭ ফুট। বাংলাদেশের চাঁদপাড়া সেতু সংলগ্ন এলাকায় নদীর জল হাঁটুসমান। কেউ পথ না-দেখালে সেই জল পেরিয়ে হান আসতে পারত না বলেই মনে করছেন গোয়েন্দারা। এ-পারের কোন ‘গাইড’ তাকে সেই পথের সন্ধান দিল, তার খোঁজ করছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতারের পরে বিএসএফ, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের পাশাপাশি রাজ্যেরও একাধিক গোয়েন্দা বিভাগের তরফে হানকে জেরা করা হয়েছে। কিন্তু তার ভেঙে পড়ার কোনও লক্ষণই নেই। পুলিশের অনুমান, হান প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। তারা জানাচ্ছে, ধৃতের কাছ থেকে রুপোর তার উদ্ধার হয়েছে। আত্মরক্ষার কাজে সে ওই তার ব্যবহার করত বলে প্রাথমিক জেরায় জানিয়েছে হান।
পুলিশের বক্তব্য, সীমান্ত সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য হান ওই এলাকায় হাজির হয়ে থাকতে পারে। গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনেরও লক্ষ্য ছিল তার। মান্দারিন, ইংরেজির সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় ভাষা সম্পর্কে হান কতটা ওয়াকিবহাল, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া। তিনি বলেন, “বিষয়টি এসটিএফের হাতে গিয়েছে। এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy