মাদক পাচারের সঙ্গে যুক্ত পান্ডাদের বিরুদ্ধে আর্থিক তদন্ত শুরু করেছে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ।
তিনটি পৃথক মামলায় ধৃত মাদক ব্যবসার ৩ পান্ডার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার কাজও শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, ওই তিন জনের যাবতীয় সম্পত্তির হিসাব গোয়েন্দাদের তরফে আয়কর দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। যার ভিত্তিতে তাঁদের সম্পত্তি ‘ফ্রিজ়’ করেছেন আয়কর আধিকারিকরা।
গোয়েন্দারা জানান, মাদক দমন আইনের ৬৮ ধারা অনুযায়ী রাজ্যে এই প্রথম মাদকের কারবারিদের বিরুদ্ধে ওই আর্থিক তদন্ত শুরু করা হয়েছে। প্রায় চল্লিশটি মাদক উদ্ধার এবং মাদক কারবারিদের গ্রেফতারের ঘটনার মধ্যে তিনটি ক্ষেত্রে ওই তদন্ত শেষও হয়েছে।
এক তদন্তকারী জানান, গ্রেফতারের সময়ে অভিযুক্তের কাছে মাদক মিললে তবেই তাঁর সাজা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সাধারণত পান্ডাদের বমাল ধরা মুশকিল হয়ে যায়। তাই তাঁদের আয়ের উৎস থেকে শুরু করে সম্পত্তি নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সম্পত্তির স্বপক্ষে কোনও নথি তাঁরা দেখাতে পারেননি। গোয়েন্দারা জানান, কিংপিনদের ‘শায়েস্তা’ করতে ওই আর্থিক তদন্ত করা হচ্ছে।
এসটিএফ জানিয়েছে, ২০২১-এ এয়ারপোর্ট থানা এলাকার যশোর রোড থেকে ৫০০ কেজি গাঁজা বাজেয়াপ্ত করেন গোয়েন্দারা। গ্রেফতার হন মোট তিন জন। যার মধ্যে ছিলেন মাদকের মূল পাচারকারী চাকদহের রামকৃষ্ণ কর্মকার। তাঁর বিরুদ্ধে এক ডিএসপির নেতৃত্বে ওই আর্থিক তদন্ত করলে প্রায় তিন কোটি টাকার সম্পত্তির সন্ধান পাওয়া যায়। ওই টাকার স্বপক্ষে কোনও নথি ওই অভিযুক্ত দেখাতে পারেননি।
ওই বছরই চার কেজি হেরোইন-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ওই মামলায় উঠে আসে জুবের আলির নাম। নদিয়ার পলাশির বাসিন্দা ওই অভিযুক্ত দীর্ঘদিন ধরেই মাদকের কারবারে জড়িত। তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক তদন্ত চালিয়ে চার কোটি টাকার সম্পত্তির খোঁজ পান তদন্তকারীরা, যা আয়কর দফতরকে জানালে তা ফ্রিজ় করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। ২০২২-এ বর্ধমানে একটি বাড়িতে হানা দিয়ে মাদক তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়েছিলেন তদন্তকারীরা। সেখান থেকে গ্রেফতার হওয়া বাবর আলির প্রায় আড়াই কোটি টাকার বেআইনি সম্পত্তির হদিস পান তদন্তকারীরা। ওই সম্পত্তিও আয়কর দফতর ফ্রিজ় করেছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)