Advertisement
E-Paper

শিশু আলয়ে গল্প বলার আসর

হলদিবাড়ির সুসংহত শিশুবিকাশ প্রকল্পের আধিকারিক হরেকৃষ্ণ রায় জানান, তখনই তাঁরা ঠিক করেন, গল্প বলার আসর বসাবেন। আর এ বারও তপসিরই এগিয়ে এলেন। দীর্ঘ জীবনে আরও যা যা গল্প পড়েছেন, শুনেছেন, সবই বলছেন বাচ্চাদের।

রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৭ ০২:৪৬
মজলিশ: গল্প দাদুর আসরে ভিড় জমিয়েছে খুদেরা। নিজস্ব চিত্র

মজলিশ: গল্প দাদুর আসরে ভিড় জমিয়েছে খুদেরা। নিজস্ব চিত্র

খিলখিল করে হেসে গড়িয়ে পড়ছে একরাশ কচিকাঁচা। এ ওর গায়ের উপরে ঢলে পড়ছে। আবার কখনও তারা স্থির। চোখ গোলগোল। তাদের সামনে বসে মিটিমিটি হাসেন রমিশা খাতুন, তপসির আলি। হেমন্তের রোদ ঝকঝক করে। বেলা গড়ায়। কোচবিহারের হলদিবাড়িতে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ‘শিশু আলয়’-এর ঘরে গল্প জমে ওঠে।

পাশ দিয়ে যেতে যেতে জানলা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে মতিবিবি দেখে যান, তাঁর চার বছরের নাতনি খরগোশের কাণ্ড শুনে হেসে গড়াগড়ি। একটু আগেই তপসির গল্প শেষ করছেন। যে গল্পে নিজেরই ছায়ার সঙ্গে যুদ্ধ করতে কুয়োয় ঝাঁপ দিয়েছিল বোকা সিংহ।

তপসির প্রায় ৮০। নিজের জমিতে চাষ করতেন। এই এলাকায় প্রায় সকলেরই সেই পেশা। গোটা জেলায় হলদিবাড়ির ধান আর আনাজের সুনাম। শিশু আলয়েও বেশির ভাগ কৃষিজীবী পরিবারের বাচ্চারাই আসে। কিন্তু চাষের যত নাম, সাক্ষরতায় ততটা নয়। তপসির বলেন, ‘‘যে গল্প সকলেই জানে, সে গল্পও তাই এই এলাকার অনেকে জানে না।’’

তপসির নিজেও বেশি দূর প়ড়েননি। প্রাথমিক স্কুল গড়ার জন্য নিজেই তিন কাঠা জমি দিয়েছেন। সেখানেই স্কুল, সেখানেই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। সেই কেন্দ্রে শিশু আলয়। অনেকেই বাচ্চাদের এই কেন্দ্রে রেখে যান। কিন্তু বাচ্চাদের মন উঠত না।

হলদিবাড়ির সুসংহত শিশুবিকাশ প্রকল্পের আধিকারিক হরেকৃষ্ণ রায় জানান, তখনই তাঁরা ঠিক করেন, গল্প বলার আসর বসাবেন। আর এ বারও তপসিরই এগিয়ে এলেন। দীর্ঘ জীবনে আরও যা যা গল্প পড়েছেন, শুনেছেন, সবই বলছেন বাচ্চাদের। শনিবার থেকে শুরু হয়েছে। আপাতত সপ্তাহে দু’দিন বসবে গল্পের আসর।

ডাঙাপাড়া শিশু আলয়ে গল্প বলছেন প্রবীণা রমিশা খাতুন। একই ভাবে বিবিগঞ্জ শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে গল্প শোনালেন কলকলি দাস এবং গৌরী সরকার। বক্সিগঞ্জ পয়স্তি এপি স্কুল সংলগ্ন শিশু আলয়ে গল্প বললেন প্রবীণ তমিজার রহমান। কিন্তু গল্পের জোগান কম। তপসির, গৌরী, রমিশারা ভাণ্ডার ফুরিয়ে যাওয়ার ভয়ে। হরেকৃষ্ণবাবু অবশ্য আশ্বস্ত করেছেন, ‘‘বাচ্চাদের গল্পের বই কিনে গল্পগুলো আগে তাঁদের শুনিয়ে দেব। তাঁরা সেগুলো বাচ্চাদের বলবেন।’’ বাচ্চারা আবার সেই গল্প গিয়ে বলছে বাড়িতে বাবা-মা’কে। খইরুম বেগম বললেন, ‘‘ছেলের বয়স ৫। এই প্রথম ও আমাকে এমন কিছু বলল, যা আমি জানতাম না।’’

Shishu Aloy Story Telling শিশু আলয়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy