হিড়িক: বাগডোগরার টারম্যাকে ছবি তোলা চলছে। —নিজস্ব চিত্র।
আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হওয়ার জন্য বাগডোগরায় এমনিতেই যথেষ্ট কড়াকড়ি। তার উপরে আবার বিমানে ওঠার সময় টার্মিনাল বিল্ডিংকে পিছনে রেখে সামনে তাকালে সেনাবাহিনীর বিমানঘাঁটিও নজরে আসে। এ হেন বিমানবন্দরের টারম্যাকে দাঁড়িয়ে চলছে দেদার নিজস্বী এবং ছবি তোলার পর্ব।
বৌদ্ধ সন্ন্যাসী থেকে ইংরেজির শিক্ষিকা, ছাত্র কিংবা ব্যবসায়ী— অনেককেই দেখা যাচ্ছে ‘সেলফি’ বা ‘গ্রুফি’তে মত্ত।
এমন যে হচ্ছে, তা ভাল ভাবেই জানেন উড়ান সংস্থাগুলির কর্মী-অফিসারদের অনেকে। তাঁদের বেশির ভাগের যুক্তি, এটা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকেই কড়া ভাবে দেখতে হবে। বেসরকারি উড়ান সংস্থার এক অফিসার জানান, তাঁরা যতটা সম্ভব নিষেধ করেন। কিন্তু, যাত্রীদের ওঠানামায় যাতে অসুবিধে না হয়, সেটাই তাঁদের অগ্রাধিকার তালিকায় থাকে।
বাগডোগরা বিমানবন্দর দীর্ঘদিন ধরে সেনাবাহিনীর আওতায়। এখনও এর এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল সামরিক নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এমনকী, টার্মিনাল বিল্ডিংকে পিছনে রেখে দাঁড়ালে কয়েক শো মিটার দূরেই সেনা বিমানঘাঁটি। এমন একটি টারম্যাকে দাঁড়িয়ে ছবি বা নিজস্বী তোলা যে বিধিসম্মত নয়, তা জানিয়েছেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষই। তবু তাঁরা এই সেলফি বা ছবি তোলার হিড়িককে সামলাতে পারছেন না। বিমানবন্দর কর্তাদের কেউ কেউ বলছেন, রক্ষীরাই বা কী করবে! এ দিকে গেলে ও দিকে ছবি তোলেন যাত্রীরা। মঙ্গলবার দুপুরে একটি বেসরকারি কলকাতাগামী উড়ানে ওঠার আগে এক বৌদ্ধ সন্ন্যাসী চটজলদি নিজস্বী তুললেন। এক জন নিষেধ করতে তিনি স্মিত হেসে সিঁড়ি দিয়ে বিমানে ঢুকে গেলেন। তত ক্ষণে নীচে বিমানের সামনে ছবি তোলার হুড়োহুড়ি।
এই অবস্থা সামলাতে নানা পদ্ধতিতে নজরদারি বাড়ানোর কথা ভাবা হচ্ছে। তার মধ্যে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর প্রস্তাবও আছে। কিন্তু খোলা টারম্যাকে ক্যামেরা বসানো সম্ভব নয়। তা বসাতে হবে টার্মিনাল বিল্ডিংয়ে। এত দূর থেকে বসানো ক্যামেরায় তোলা ছবিতে কি আদৌ যাত্রীদের কাউকে বোঝা যাবে, সেই প্রশ্নও উঠেছে। এক পক্ষের মতে, কেউ বিধি ভেঙে ছবি তুলেছেন প্রমাণ হলে তাঁকে চিঠি পাঠিয়ে সতর্ক করে দেওয়া হোক। অন্য আর এক পক্ষের বক্তব্য, বাগডোগরা অতিরিক্ত স্পর্শকাতর। তাই অবিলম্বে কড়াকড়ি দরকার। অন্তত জরিমানা তো করা যেতেই পারে।
বাগডোগরা বিমানবন্দরের অধিকর্তা রাকেশ সহায়ের অবশ্য দাবি, নজরদারি কড়া-ই। তিনি বলেন, ‘‘প্রয়োজনে নজরদারি আরও বাড়ানো হবে। সন্দেহজনক কিছু দেখলেই পদক্ষেপ হয়।’’ যাঁরা ছবি তুলছিলেন, তাঁরা কি এ সব জানেন? এখানে ছবি তোলা যায় না, তবু তুলছেন কেন— এমন প্রশ্ন শুনে প্রায় সকলেরই জবাব, ‘‘সোশ্যাল সাইটে সবাই দিচ্ছে। তাই আমিও তুলছি।’’
একান্তে সকলেই মানছেন, জরিমানা চালু থাকলে মোবাইলই বার করতেন না!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy